
রাহুল দাশগুপ্ত-র কবিতা
তোমাকে স্পর্শ করব বলে
তোমাকে স্পর্শ করব বলে
সযত্নে বাঁচিয়ে রেখেছি নিজের হাত
বহুদিন অপেক্ষায় আছি
মাঝে মাঝে তাকাই সেই হাতের দিকে
আর ভাবি
এই হাত একদিন স্পর্শ করবে
তোমাকে, তোমার সর্বস্ব
তোমার ঠোঁট
তোমার কপাল
তোমার গলা
তোমার কাঁধ
তোমার স্তন
তোমার পিঠ
তোমার নাভি
তোমার কোমর
তোমার নিতম্ব
তোমার ঊরু
তোমার যোনি, যোনিকেশ
তোমার হাঁটু
তোমার পায়ের পাতা
তোমাকে, তোমার শরীর
তোমার শরীরের আনাচে কানাচে স্পর্শ করে
খুঁজবে তোমার আত্মাকে
আর অধিকার করবে
দখল করে নেবে সেই আত্মা
আর তখন তুমি নিজের ঠোঁট
আমার কানের কাছে এনে
ফিসফিস করে জানতে চাইবে,
এই হাত
তোমার ওই হাত
শুধু আমাকে চেয়ে
আগুনের আঁচে
বাঁচিয়ে রেখেছিলে কীভাবে
এতদিন? অপেক্ষায়?
আশ্চর্য…
বন্ধু
সবাই কী আর বন্ধু হয়?
বন্ধু হওয়া সহজ নয়
বন্ধু মানে হাত বাড়িয়ে
ছুঁতে চাওয়া অন্য হাত
বন্ধু মানে গল্প করে
কাটিয়ে দেওয়া আস্ত রাত
বন্ধু মানে ফুলের গায়ে
ছুঁইয়ে রাখা রঙিন ফুল
বন্ধু মানে গন্ধে ভরা
ফুলদানি এক, মিষ্টি ভুল
বন্ধু মানে জোছনা ভরা
খোলা ছাদে তুমুল হাসি
বন্ধু মানে বুকের মাঝে
বলতে থাকা, ভালোইবাসি..
বন্ধু মানে চোখে–মুখে
ঝাপটা মারা ঠাণ্ডা হাওয়া
বন্ধু মানে বনের পথে
হারিয়ে গিয়ে খুঁজে পাওয়া
বন্ধু মানে সমুদ্রস্নান
বালির মাঝে লুটোপুটি
বন্ধু মানে বরফ থেকে
বরফ নিয়ে ছোটাছুটি
বন্ধু মানে নদীর ধারে
হাত ধরে খুব চলতে থাকা
বন্ধু মানে এই পৃথিবী
গানে, আলোয় ভরিয়ে রাখা…
শত্রু
তুমি যদি সঠিক শত্রুদের চিনতে পারো
তাহলে আর সবাইকেই শত্রু বলে মনে হবে না তোমার…
শত্রু মিশে আছে ভিড়ের মধ্যে
ভিড়টাকেই যদি শত্রু বলে ভাবতে থাকো
তাহলে তুমি বিভ্রান্ত হবে
বিষন্ন হবে আরও বেশি
তোমার ভিতরে একটা বাগান আছে
সামান্য, নগণ্য কয়েকটি পোকামাকড় এসে
সেই বাগানের ক্ষতি করে দিয়ে যাবে?
এতটা দুর্বল বা ভঙ্গুর তুমি নও
তুমি পারো তোমার বাগানকে রক্ষা করতে
তার প্রমাণ দাও
শত্রুকে চিনে নাও তুমি
তাদেরও দুর্বলতা আছে
তাদের প্রতি কৌশলী হও
তাদের বুঝতে দিও না
তুমি তাদের চিনে গেছো
বুঝে নিয়েছো তাদের ক্ষতি করার প্রক্রিয়া
কেন তারা তোমার ক্ষতি চায়
তার কারণ
শত্রুরা কাউকে প্রভাবিত করতেই পারে
কিন্তু সবাই ভিতর থেকে তোমার শত্রু নয়
তারা পরিস্থিতির শিকার।
শত্রুকেও বিভ্রান্ত করা যায়
আর তাচ্ছিল্য করা যায় তার চেয়েও বেশি
তবে আগে তাদের চিনে নেওয়া দরকার…
ভালো।