রাহুল দাশগুপ্ত-র গল্প

রাহুল দাশগুপ্ত-র গল্প

ফটোগ্রাফ

নতুন শহরে এসে আমি একটা ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলাম। একাই থাকতাম সেই ফ্ল্যাটে। ছোট্ট এক কামরার একটা ফ্ল্যাট, সঙ্গে অ্যাটাচড বাথরুম। আর সেই কামরার গায়ে একচিলতে একটা বারান্দা। সেই বারান্দা দিয়ে অনেকদূর দেখা যায়। আমার ফ্ল্যাটের উলটোদিকে কোনও বাড়ি নেই। শুধু আছে একটা খেলার মাঠ, সাইজে রীতিমতো বড়ো। আমার চারতলার বারান্দা থেকে সেই মাঠের শেষ প্রান্ত পর্যন্ত দেখা যায়। সেখানে সারি সারি গাছ। সেই গাছগুলোর ফাঁকফোকর দিয়ে দেখা যায় বেশ চওড়া একটা খাল। সব সময় ঘোলা জল বয়ে যাচ্ছে সেই খাল দিয়ে।
ঠিক করেছিলাম, মাস ছয়েক এই ফ্ল্যাটে থাকব। তারপর একটা বড়ো ফ্ল্যাটে চলে যাব। নতুন চাকরি, যদিও মাইনে ভালোই। এই ছ-মাসে বেশ কিছু টাকা জমিয়ে নিতে হবে। তারপর সঞ্চয় যা আছে, তা দিয়ে যদি একটা ফ্ল্যাট কেনা যায়! মাসখানেকও পুরো কাটেনি। এরকম সময় আমার দিদিমার একটা চিঠি পেলাম। দিদিমা লিখেছেন, তোমার মায়ের ছবিটা আমার কাছেই পড়ে আছে। আমি কবে আছি কবে নেই তার ঠিক কী! তাই ছবিটা তোমার কাছেই পাঠিয়ে দিলাম। এবার আমি নিশ্চিন্ত।
চিঠির সঙ্গে সত্যিই দিদিমা ছবিটা পাঠিয়ে দিয়েছেন। ফ্রেমে বাঁধানো সাদা-কালো ছবি। কিন্তু সাইজে বেশ বড়ো। দেওয়ালের অনেকটা জায়গা দখল করে বসল। ছবিটা আসার পর থেকেই আমার একটা অদ্ভুত অনুভূতি হত। সবসময় মনে হত, মা যেন আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমাকে পাহারা দিচ্ছে। আমার ভালোমন্দ নিয়ে চিন্তা করছে। কোনও বিপদে পড়লে সে আমাকে রক্ষা করবেই। অদ্ভুত একটা ভরসা ছিল ছবিটার ওপর। যেন নিছক একটা ছবি নয়, স্বয়ং আমার মা-কেই আমি দেখছি।
মাঝেমাঝেই আমি ছবিটার দিকে তাকিয়ে থাকতাম। আর ছবিটাও আমার দিকে তাকিয়ে থাকত। এইভাবে তাকিয়ে থাকতে থাকতে ঘোর লেগে যেত আমার। কেমন যেন আবিষ্ট হয়ে যেতাম। মনে হত, মা আমাকে ছেড়ে কোথাও যায়নি। সে সবসময় আমার পাশেই আছে।
প্রথম যেদিন তনুশ্রী আমার ফ্ল্যাটে এল, ছবিটা দেখে বেশ অবাক হয়ে গেছিল। জানতে চেয়েছিল, কার ছবি?
আমার মায়ের।
কী সুন্দরী ছিলেন তোমার মা। কত বয়সের ছবি?
একুশ বছরের। ওই বয়সেই মারা যায়।
তনুশ্রী থমকে গেল। বলল, তারপরই তোমার বাবা আবার বিয়ে করলেন?
হুম্। আর কিছুদিনের মধ্যেই আমার কথা ভুলে গেল। আমি দাদু-দিদিমার কাছেই বড়ো হয়েছি।
তাঁরা এখন কোথায়? কেমন আছেন?
দাদু মারা গেছে। দিদিমা আর আমি থাকতাম। আমি এখানে চলে আসার পর দিদিমা একাই থাকে। কিন্তু তারও তো বয়স হয়েছে। তাই ছবিটা পাঠিয়ে দিল…
দিদিমা তোমার সঙ্গে এলেন না কেন?
আসতে চাইল না। প্রায় সারাজীবনই নিজের বাড়িতেই কেটেছে। এখন ভাড়া ফ্ল্যাটে কী মন টেকে?
তুমি ছবিটা রেখে এসেছিলে?
আর কি করতাম বলো? এখানে জায়গা কোথায়? ওখানে প্রচুর জায়গা। কিন্তু দিদিমা নিশ্চিন্ত হতে চায়। তার কিছু হয়ে গেলে ছবিটার যত্ন হবে না। তাই পাঠিয়ে দিল। বিরল ছবি তো…
কেন? তনুশ্রী জানতে চাইল, তোমার মায়ের আর কোনও ছবি নেই?
সেগুলো সবই ছোটো ছোটো। আর ঝাপসা হয়ে গেছে। পুরোনো দিনের অ্যালবামের ভিতর ছিল। দাদু-দিদিমা খুলেও দেখত না। ওদের খুব কষ্ট হত। সবমিলিয়ে, এই ছবিটার মূল্যই আলাদা। মাঝে মাঝে আমার কি মনে হয় জানো? এই ছবিটার কিছু হয়ে গেলে আমি আমার মাকে আবার হারাব। তার কোনও স্মৃতিই আমার নেই। তাকে আমি যেটুকু পেয়েছি, এই ছবিটা আছে বলেই পেয়েছি। এই ছবিটার মধ্য দিয়েই…
কথাটা শেষ করেই তনুশ্রীকে হঠাৎ আমি জড়িয়ে ধরেছিলাম। তনুশ্রী বলে উঠেছিল, কী করছ?
কেন? আমি বলেছিলাম। তুমি আদর চেনো না?
তনুশ্রী আমার বুকে ওর কপালটা ঘষতে ঘষতে বলল, কে চেনাবে? কেউ তো ছিল না এতদিন। কিন্তু তোমার হঠাৎ…
তোমার ইচ্ছে করছে না? যৌনতা মানেই তো ডিজ্যায়ার। আর ডিজ্যায়ারই তো সমস্ত প্রাণশক্তির উৎস।
তনুশ্রী ওর কপালটা আরও জোরে আমার বুকে চেপে ধরল। ওর তুলি দিয়ে আঁকা দুটো ভুরুর মাঝখানে ছোট্ট কালো টিপটা লেপটে গেছে। আমি ওকে আলতো করে সরিয়ে দিলাম। তারপর ওর পোশাক খুলতে শুরু করলাম। অসামান্য সুন্দরী ও। এখন শুধু ব্রা আর প্যান্টি পরে আছে। আর আমি যেন একটা অপরূপ স্থাপত্যকেই দেখছিলাম। মার্বেল পাথরের মতোই গায়ের রং। ওর ত্বক সবসময়ই ঝলমল করে। ওর শরীরটা যেন এক আশ্চর্য, রহস্যময়, দুর্লভ রত্ন, যাকে আমিই প্রথম এক শিল্পীর চোখ দিয়ে আবিষ্কার করি। তনুশ্রীর শরীর আমার কাছে হয়ে ওঠে এক বিরল শিল্পকীর্তি। তনুশ্রীর মন হয়ে ওঠে এক মহাকাব্যিক রহস্য-কাহিনি, দুর্লভ-পুঁথির মতোই যা এতদিন অনাবিষ্কৃত ছিল আর এক চতুর গোয়েন্দার মতোই যেন তার রহস্য আমি একটু একটু করে ভেদ করে চলেছি।
এই অফিসে জয়েন করার পর রতনের সঙ্গে আমার বেশ ঘনিষ্ঠতা হয়ে যায়। ওদের বাড়িতে আমি নিয়মিত যাতায়াত শুরু করি। তনুশ্রী রতনেরই বোন। খুব তাড়াতাড়িই আমরা একে অপরের ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলাম।
দু-জনেই যেন দু-জনের অপেক্ষায় ছিলাম। তনুশ্রীর সঙ্গে আগে কখনও আমার শারীরিক সম্পর্ক হয়নি। সেটা ছিল আমাদের প্রথমবার। ওর সাদা মার্বেলের মতো বুক দুটো ঢেকে আছে আগুনের মতো একটা লাল ব্রা। আমি সেটা খুলে ফেললাম।
নারীর নগ্নতা নিয়ে অনেক কিছু শুনেছি। অনেক কিছু পড়েছি। কিন্তু প্রত্যক্ষভাবে সেই ছিল আমার প্রথম দর্শন। আমি মুগ্ধ, অভিভূত হয়ে গেছিলাম। মনে হল, এমন এক শিল্পকীর্তির সামনে আমি দাঁড়িয়ে আছি, যা আমার জন্যই সৃষ্টি হয়েছে। সেই মুহূর্তে সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞ বোধ করলাম আমি। এখন ওর এই শরীরটা নিয়ে আমি যা খুশি তাই করতে পারি। তনুশ্রী একটু একটু করে বিবশ, মোহগ্রস্ত হয়ে যাচ্ছে। স্বাধীনতার এরকম দুর্দান্ত অনুভূতি এর আগে কখনও আমার হয়নি।
আমি তনুশ্রীর দিকে তাকিয়ে বললাম, মানুষ যৌনতার কাছে যায় কেন বলতে পারো? যৌনতাই কী তাহলে স্বাধীনতা?
তনুশ্রী এখন একটু লজ্জা পাচ্ছে। একটু বোধহয় অনুতাপও হচ্ছে ওর। প্রায় ফিশফিশ করে ও বলল, এত কঠিন করে কথা বলো কেন তুমি? আমি তো কিছু বুঝতেই পারি না…
ঠিক তখনই সেই আশ্চর্য ব্যাপারটা হল। আমার মনে হল, আমার মায়ের ছবিটা তীক্ষ্ণ চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। যেন বিদ্ধ করতে চাইছে আমায়। আমার প্রতিটা কথা শুনছে। প্রতিটা ক্রিয়াকলাপ খুব মন দিয়ে লক্ষ্য করছে। আমায় বাধা দিতে চাইছে। কী অসম্ভব ঈর্ষা আর রাগ সেই দৃষ্টিতে। যেন বলতে চাইছে, আমার চোখের সামনে এসব করতে তোর লজ্জা করছে না? যা, দূর হয়ে যা আমার সামনে থেকে।
তনুশ্রী আমার দিকে আরও কিছুটা এগিয়ে এসেছে। আমার ফর্সা ধবধবে বুকে ছড়িয়ে থাকা কালো লোমের ভেতর মাথা গুঁজে মুখ ঘষছে। আমি ওকে আলতো করে সরিয়ে দিলাম। তারপর বললাম, আজ থাক বরং।
ও প্রথমটায় ঠিক বুঝতে পারল না। যেন নিজের কানকেই বিশ্বাস করতে পারছে না। তারপর বলল, কী হল হঠাৎ?
আমি ওকে আঙুল দিয়ে ছবিটা দেখালাম। বললাম, ভালো করে তাকিয়ে দ্যাখো। আজ সকালেই দেখেছি। কি স্নিগ্ধ চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আর এখন দ্যাখো, দৃষ্টিটাই পালটে গেছে। মা ঠিক পছন্দ করছে না তনুশ্রী। বলো তো, মায়ের সামনে কী এসব করা যায়?
তনুশ্রী খুব বিরক্ত হল। বলল, তোমার মা মারা গেছে সুপ্রিয়। এটা শুধু একটা ফটোগ্রাফ।
ফটোগ্রাফ এত জীবন্ত হয়? আমি যেন ঘোরের মধ্যে কথা বলছিলাম। আমার মায়ের চোখ দুটো একবার দেখো। কী জীবন্ত দুটো চোখ! প্রাণশক্তিতে যেন ভরে আছে। মৃত্যুর ছায়ামাত্র নেই। আমার মা সব দেখছে তনুশ্রী। আমি পারব না…
তনুশ্রী ওর পোশাক গুছিয়ে নিয়ে বিদ্যুতের বেগে বেরিয়ে গেল। আর একটা কথাও বলল না। একবারও আমার দিকে তাকাল না। কিন্তু আমার খুব আপশোস হতে লাগল। একা ফ্ল্যাটে আরও বেশি একা মনে হতে লাগল নিজেকে। একা পুরুষের জীবনে নানারকম যৌন ফ্যান্টাসি থাকে। এখন আর সেগুলো কল্পনাও করতে হয় না। আমি ল্যাপটপ টেনে নিলাম। এমনভাবে সেটা রাখলাম, যাতে ছবিটা কিছুই দেখতে না পারে। কিছুক্ষণের মধ্যেই কল্পনাগুলো সব জীবন্ত ও বাস্তব হয়ে উঠল। কিন্তু এতে আমার শুধু হতাশাই বেড়ে গেল। ল্যাপটপ বন্ধ করে আমি তনুশ্রীর কথাই ভাবতে লাগলাম।
সেদিনই আমাদের সম্পর্কটা ভেঙে যেতে পারত। কিন্তু গেল না। তনুশ্রী মনের দিক থেকে আমার সঙ্গে জড়িয়ে গেছিল। তাই অত সহজে আমাকে ফেলতে পারল না। কিছুদিন পরে আবার একটা ছুটির দুপুরে ওদের ফাঁকা ফ্ল্যাটে আমাকে ডেকে নিল। সেদিন সবকিছুই দিব্যি হয়ে গেল। কোনও সমস্যাই হল না। আমাকে নিয়ে তনুশ্রীর মনের সমস্ত দ্বিধা কেটে গেছিল। ওকে খুব সুখী আর খুশি দেখাচ্ছিল। ওর নগ্নতাকে মনে হচ্ছিল স্বর্গীয়, যেন আলেকসান্দ্রে কাবানেলের ক্যানভাস থেকে উঠে আসা নগ্ন ভেনাস। ও আমাকে কিছুতেই ছাড়তে চাইছিল না। আমাকে সাপটে, জড়িয়ে শুয়ে ছিল।
তারপর হঠাৎ ওর সেই আদুরে, মেদুর গলায় জানতে চাইল, আজ পারলে কী করে?
এখানে তো ওই ছবিটা নেই।
তনুশ্রীর ভুরু কুঁচকে গেল। বলল, এই ফ্ল্যাটে, এভাবে তো তোমাকে বারবার ডাকতে পারব না। আজ হঠাৎ সুযোগ এসে গেল, তাই। তোমার ফ্ল্যাটেই আমাদের সুবিধা হবে…
আমি অসহায়ের মতো বললাম, কিন্তু ওখানে তো ছবিটা আছে।
ছবিটা তাহলে সরিয়ে দাও।
কোথায় সরাবো? আর তো ঘর নেই…
তুমি না…. তনুশ্রী উঠে বসল। বিছানা থেকে নেমে বিদ্যুতের মতো উঠে দাঁড়াল। তারপর হঠাৎ আবার ধপ করে বসে পড়ল বিছানায়। বলল, কি হয় তোমার, বলো তো? হ্যাঁ, আমাকে বুঝিয়ে বলো সবকিছু…
তোমাকে তো অনেকবার বলেছি। আমি বললাম। ছবিটা সবকিছুই দেখে। জীবন্ত হয়ে ওঠে একদম। মায়ের ছবির সামনে এইভাবে….
এইসবই তোমার কল্পনা। তনুশ্রী বলল। তার গলার স্বর এখন শান্ত। অথবা তুমি হয়তো মানসিকভাবে অসুস্থ। ডাক্তার দেখাবে একবার?
আমাকে একটু সময় দাও, তনুশ্রী। আমি তো ওই ঘরে বসেই ল্যাপটপে…
তখন পারো কী করে?
এমনভাবে বসি, যেন ছবিটা ল্যাপটপের স্ক্রিনটা দেখতে না পায়। কিন্তু বাস্তবে সেটা কী সম্ভব?
তনুশ্রী শান্ত গলায় বলে, তোমাকে বদলাতেই হবে, সুপ্রিয়। এসব উদ্ভট কল্পনা। নইলে আমরা সুখী হব কী করে?
তোমাকে সুখী করার জন্য আমি কী না পারি! কিছুটা তোষামোদের ভঙ্গিতেই আমি বললাম।
কিন্তু সত্যিই একটু একটু করে আমার সাহস বাড়ছিল। তনুশ্রীও বলত, চেষ্টা করে দ্যাখো না। ঠিক পারবে। আর বেশ কয়েকবার সত্যিই আমি পেরে গেলাম। তনুশ্রীই বুদ্ধিটা দিয়েছিল। ছবিটাকে একটা কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দিয়েছিল।
আমি বলতাম, কিন্তু তনুশ্রী, ছবিটা তো এই ঘরেই আছে।
আরে, সেটাই তুমি ভুলে যাও না। তনুশ্রী আমাকে ভরসা দিত।
শুধু তাই নয়, আমরা এমনভাবে শুতাম, যাতে আমার পিছনে ছবিটা থাকে। ছবিটাকে আমি দেখতে পেতাম না। আমি শুধু তনুশ্রীর নগ্নতাকেই দেখতে পেতাম। একটা শিল্পকীর্তির সামনে অভিভূত অবস্থায় নিজেকে যেন হারিয়ে ফেলতাম।
সবকিছু মিটে যাওয়ার পর তনুশ্রী মুচকি হেসে বলত, আজ তুমি যেন একটা বাঘ হয়ে উঠেছিলে।
এই সময়টায় নিজেকে একজন সত্যিকারের পুরুষ মানুষ মনে হয়, জানো? আমি বলতাম। একদম খাঁটি একটা পুরুষ মানুষ। অন্যসময় নিজেকেই কেমন ভেজাল মনে হয়…
আমার কথা শুনে তনুশ্রী খিলখিল করে হেসে উঠত।
কিন্তু আবার একদিন ব্যাপারটা ঘটল। তনুশ্রী সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে বিছানায় শুয়ে আছে। আমিও পুরোপুরি প্রস্তুত। হঠাৎ একটা দমকা বাতাস ঢুকে ছবিটার গায়ের কালো কাপড়টাকে খসিয়ে দিল। আর সেই মুহূর্তে আমার মনে হল, একজোড়া দৃষ্টি তীক্ষ্ণ ছুরির মতোই আমার পিঠে এসে বিঁধল। আমি চকিতে পিছন ফিরে তাকালাম। আর মনে হল, একজোড়া আগুনের গোলা যেন আমার দিকে তাকিয়ে আছে। যেন ভস্ম করে দেবে আমায়। কী প্রচণ্ড রাগ আর ঈর্ষা সেই দৃষ্টিতে।
আমি তনুশ্রীর ওপর থেকে নেমে গেলাম। তারপর অসহায়ের মতো বললাম, অসম্ভব। আমি পারব না তনুশ্রী।
তনুশ্রী সাংঘাতিক রেগে গেছিল। আগে কখনও ওকে এতটা রেগে যেতে দেখিনি। কঠোর গলায় আমার দিকে তাকিয়ে ও বলল, তুমি অসুস্থ। আমি আর তোমার কাছে আসব না…
আমি ফুঁপিয়ে উঠলাম। বললাম, তনুশ্রী, সে আমার মা…
এটা একটা ফটোগ্রাফ, সুপ্রিয়। তনুশ্রী বলল। আর আমি বুঝে গেছি, তোমার এই পাগলামি সারার নয়….
এটা পাগলামি নয়, তনুশ্রী। অসহায়ের মতো আমি বললাম। ছবি কখনও এরকম জীবন্ত হয়ে ওঠে? কখনও এভাবে তার মুখের ভাব, চোখের তাকানো পালটে যায়? কখনও যেন সে নরম করে তাকায়, যেন তারিফ করছে আমার। আবার কখনও সেই চোখে আগুন জ্বলতে থাকে, যেন তীব্রভাবে তিরস্কার করছে! এটা কী করে সম্ভব? এটা কোনও মামুলি ফটোগ্রাফ নয়…
তনুশ্রী কিন্তু আর কিছু শুনতেই চাইল না। সে আমাকে চূড়ান্তভাবে জানিয়ে দিল, আর নয়, এবার তোমাকে বেছে নিতেই হবে। হয় এই ছবিটাকে বিদায় করো, নয়তো আমায়। আমি আর এই পাগলামো সহ্য করতে পারছি না!
তুমি আমাকে কী করতে বলো তনুশ্রী? আমি কাতরস্বরে বললাম, তুমিই ঠিক করে দাও, তুমি যা বলবে, সেটাই আমি মেনে নেব।
কিন্তু ছবিটা তো তোমার মায়ের… তনুশ্রী বলল।
তোমাকে আমি হারাতে পারব না, কিছুতেই না… আমি মরিয়া হয়ে বললাম। তারপর প্রায় ফিসফিসিয়েই বললাম, তোমার ওপর আমার আস্থা আছে…
সেদিনই তনুশ্রী ছবিটাকে বিদায় করে দিল। ওদের গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দিল।
আমি বলেছিলাম, জায়গাটা ভারী চমৎকার। পাহাড়ি এলাকা, উঁচু-নিচু রাস্তা, রঙবেরঙের ফুলগাছ, খরস্রোতা নদী, ছোটো ছোটো ঝরনা, রেজিস্ট্রির পর না হয় তোমাদের গ্রামের বাড়িতেই…
তনুশ্রী কঠোর চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বলেছিল, না।

CATEGORIES
Share This

COMMENTS

Wordpress (0)
demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes