
সৌম্যদ্বীপ চক্রবর্তীর কবিতাগুচ্ছ
খন্ডচিত্র
১
রাস্তার এক পাশে এক পাঁজা ইট
পায়ের কাছে লালচে গুঁড়ো
বাইরের চটি পরে ঘরের সাদা মেঝেয় হাঁটছি
মা’কে ফোন করায় জিজ্ঞেস করল,
“আজ রং খেলেছিস?”
২
হুইল চেয়ারে বসে দোকানির ছেলেটা
বাবার পিঠে ঘাম গড়াতে দ্যাখে
ওঁর গায়ে রাস্তার ধুলো
আমি দেখি বারান্দায়
হাওয়াই চটি থেকে জল ঝরে
বিকেলের আযান শুরু হলে
ছেলেটা চোখ দুটো বন্ধ করে নেয়
৩
হোস্টেলের রান্নাঘরে চারটে ইঁদুর
সন্ধ্যেবেলা আটটা থেকে সাড়ে দশটার মধ্যে
ওদিকে আসে না
৪
বালতিতে ভেজানো জামাকাপড় মগ্ন
কলের খোলা মুখ স্নানঘরে অপ্সরা
৫
হোস্টেলের উল্টো দিকে ডেন্টাল কেয়ার
মাথায় প্রকাণ্ড দাঁতে নিয়ন আলো
রাতে খাবার অর্ডার করলে ডেলিভারি বয়কে বলি,
“আপনি দাঁতটা দেখতে পাচ্ছেন?”
৬
দু’টো ছোট্ট বাচ্চা হাত ধরাধরি করে স্কুল যায়
একদিন জিজ্ঞেস করেছিলাম,
“মা টিফিনে কী দেয়?”
এ শহরের আঞ্চলিক ভাষা আমি জানিনা
ওঁরা আমায় কোনো উত্তর দেয়নি
দুপুরে হোস্টেলের একই অখাদ্য খাবার খেয়েছিলাম
৭
বউটা এখনও কয়লার ইস্ত্রি ব্যবহার করে
জামাকাপড় দিয়ে ফেরার পথে
চেনা দোকানি মিটিমিটি হাসে
একদিন সুযোগ করে বলেই দিল,
“জানেন তো ওঁর ঘরে কিন্তু অনেক রাত অব্দি আলো জ্বলে”
দোকানের সামনে কয়লার ধোঁয়া
বউটাকে ঠিক করে দেখতে পাই না
৮
বৃষ্টিতে রাস্তায় এক পশলা জল
দু’টো বাচ্চা পা দিয়ে ছিটিয়ে দিচ্ছে কুকুরটার গায়ে
কুকুরটা নির্বিকার
ওদের সাদা ফ্রক দুটো কালো হয়ে গেছে
৯
ট্রাফিক কেন্নোর মতো
এক গাড়ি থেকে অন্য গাড়ি
দুই মানুষের উত্তেজিত বিনিময়
কাচের জানলা মিউট বাটন
পিছনের সিটে বাচ্চাটা দেখে
পাশের গাড়ির কুকুরকে
কী শান্তিতে ঘুমোচ্ছে!