
কৃষ্ণালক্ষ্মী সেন-এর কবিতা
সম্পর্ক
সহজ কার্নিশ থেকে ঝরে পড়ে যায় সহজতর বিকেল।
ছাপোষা গেরস্থালি থেকে উঠে আসে কত সন্ধে ও আওয়াজ।
এই শব্দের পৃথিবীতে আমি বারবার নিস্তব্ধতা চেয়েছি, তবু কী তীক্ষ্ণতায় ভেঙেছে কাচের গ্লাস, সুদৃশ্য কফি মগ, রাতের আখ্যান আর যুক্তিহীন বোঝাপড়া!
দেখেছি, তীব্র ইস্পাত ছুঁয়ে তীব্রতর ছুটে যায় রাতের রেলগাড়িটি,
কোথায় যায়?
অরণ্যের কাছে?
মানুষের কাছে?
অনেক বেদনা পেরিয়ে শান্ত জলের কাছে?
আমি যার কাছে যেতে চাই
তার মুখ আমি কখনও দেখিনি— অথচ দেখতে চেয়েছি — যে কেবল
জীবন ভেঙে ভেঙে জীবনের বড় বেশি নিকটবর্তী হয়েছে
সহনশীলতা নিয়ে মগ্ন শিকড় হয়েছে যে গভীরে, পেয়েছে নিহিত মাটি
তার আঙুলে আঙুল রেখে আমি নীল পৃথিবীর স্পর্শ পেতে চাই
তারপর
ঘনীভূত অন্ধকারে নিবিড় বারান্দার মতো
গাঢ় হাওয়ার মতো
বৃষ্টিভেজা পাখিটির মতো
ভোরের শস্যের মতো
সময়, সময় আমাদের নিয়ে খেলা করে
আমরা কথা কই, কাছে আসি,
গান বয়ে যায় ভিতরে ভিতরে
আলো জ্বলে ওঠে, অনেক আলো
তবু এক অনতিক্রম্য অন্ধকার রয়ে যায় শুশ্রূষাহীন দাগের মতো
সাঁকো
আমাদের নদীটিকে নিয়ে যে বিকেল চলে যায় বিকেলের আলোর কাছে,
স্থির দিগন্তের কাছে
সেইসব সমূহ বিকেলে তুমি সূর্যাস্তের দু’কোটি রং ছুঁয়ে অনির্বচনীয় হও,
এই একুশের কবি হও
দেখেছো, এখন আকাশ আকাশের মতো নীল নয় আর,
ভীষণ রহস্য পশ্চিমে
আমরা জানি আকাশের চেয়ে আরও বেশি রহস্য আছে আমাদের গভীরে গভীরে,
শহরের গলিতে গলিতে
রাস্তায় রাস্তায় গীতিকবিতার মতো সন্ধ্যে বেশ
শহর চেনায়
রাস্তায় নামার আগে
খাতায় লিখে রেখো ঢেউ, ফেলে আসা টুকরোটাকরা জীবন ও মরণ
সবই আসলে কবিকে গিলে খায
রাস্তা বিকেল নদী জল অন্ধকার
নড়বড়ে কাঠের সাঁকো…
ভালো ভাবনা