
চয়ন ভৌমিক-এর কবিতা
খাজুরাহো অসীম
১)
কলসগহনা অঙ্গে গ্রীষ্ম হেঁটে যায় মৃদু।
মৃদঙ্গ বাজে,
চলকে ওঠে হৃদয়জল..
গহীনে পুষ্করিণী চক্ষু,
মরালী বিরহে একাকী এখন…
শুধুমুধু দেখো, কেমন
ছড়িয়ে দিচ্ছে তরঙ্গ!
নিঃশব্দে, নির্জনে, ব্যথায়…
২)
অত কলা সম্ভব?
কঠিন যোগের মতো আসন-ভঙ্গিমা সব!
শিল্পী তুমি অভাবী।
মনের মাধুরী জুড়ে, এমন শিল কোটো
অসম্ভব মনে হয় তা!
বিলোল চাহনী তবু জাগে অন্তরে
প্রতিস্থাপনের ইচ্ছাও কী কম জোয়ার?
পাথরের রূপে রূপ বসে
রাসপূর্ণিমা আসে আত্মসিদ্ধিতে।
স্বপ্ন বলেও তো আছে কিছু, না কি?
সেখানেই মিলন হোক ঋতুতে ঋতুতে
সেখানেই রাত বাড়লে
এক এক করে খুলে দিও রহস্যজাল।
৩)
ছায়াদের সঙ্গমেও এত প্রাণ!
এত তীব্র প্ররোচনা?
মুক্ত প্রণয়চিহ্নে, মল্লিকাবন
অনন্ত কাঁপে প্রাচীন শাস্ত্রীয় বিধানে।
শরবিদ্ধ হয়ে, ক্ষতবিক্ষত
ফিরে এসেছি কবেই
সৌষ্ঠব ক্ষীণ হয়েছে প্রস্তর ক্ষয়ে…
তথাপি, যখনই গজগামিনী
গুরুপয়োভারসহ সাড়ম্বরে, আঁচল সামলে সমুদ্র উথলায় –
পিচ গলে যায়, ইটকাঠপাথুরে শহরে,
সেই উদাসী যক্ষী, আবারো,
বেঁচে ওঠে… আর আমি জন্মান্ধ –
“মিথুনবন্দরে” ফিরে ফিরে আসি
সম্মোহিত, রিক্ত, আলুথালু রাতে।