স্রোত<br />পর্ব ৪ <br /> যশোধরা রায়চৌধুরী

স্রোত
পর্ব ৪
যশোধরা রায়চৌধুরী

কয়েক বছর আগে আরম্ভ পত্রিকায় কিস্তিতে কিস্তিতে প্রকাশিত হয়েছিল যশোধরা রায়চৌধুরীর অন্য নামে একটি উপন্যাস, যার উপজীব্য হল, সমসাময়িক কালখন্ড আর কিছু তরুণ তরুণীর লড়াই । গ্রন্থাকারে 'স্রোত' নাম দিয়ে একটি অতি সীমিত প্রকাশনা প্রচেষ্টাও হয়েছিল। তবে প্রকাশক সব কপিশুদ্ধু গায়েব হয়ে যাওয়াতে, স্রোতকে পরিবর্ধিত ও পরিমার্জিত আকারে এবার আবহমানের পাঠকদের কাছে ধারাবাহিকভাবে হাজির করার প্রচেষ্টা । "সম্পূর্ণ ভাবে নারীর দৃষ্টিকোণ থেকে লেখা এমন উপন্যাস আমি আগে পড়িনি। নারীবাদী লেখকের লেখা উপন্যাস পড়েছি। কিন্তু তাতে পুরুষের লোলুপতা কে কাঠগড়ায় দাঁড়করানো আর নারীকে শিকার প্রতিপন্ন করার চেষ্টায় প্রায়শই অবজেকট্ভিটি থাকেনি। এই উপন্যাসের শিকড় গেছে নারী জীবন যাপনের নানা স্তরে । এর মধ্যে আছে যে ভাষায় পুরুষতন্ত্র জীবনের ন্যারেটিভ এমনকি সাহিত্য ও রচনা করে , তার ইন্টারপ্রিটেশন। এতে স্পষ্ট কথা আছে, অভিমান আছে, হাস্যরস এবং অসহায়তাও আছে । এবং সর্বোপরি পুরুষকে নিজের জীবনে জড়িয়ে নেওয়ার আকাঙ্খা।..এখনকার ছেলে মেয়ে দের হাতে ই তুলে দেওয়া কাহিনীর ব্যাটন, এদের স্পষ্ট করে দেখা, বলতে পারা ও অতীতের বোঝা নামিয়ে রেখে পথ চলার সাহস কে কুর্ণিশ জানিয়েছেন যশোধরা। মুক্তি এরাই আনবে। যৌনতার রহস্যময়তার আবরণ উন্মোচন করে তথ্যের নিরপেক্ষতার মধ্যে উত্তরণ।যশোধরার Clarity of perspective অতি তীক্ষ্ণ। সবমিলিয়ে উপন্যাস টি মনোভংগি ভাষা ও কাহিনী সর্ব অর্থে আধুনিক। একে বারে রিয়েল টাইমে দাঁড়িয়ে লেখা। দেশ কাল সময় ও ব্যক্তি সত্ত্বার বিশাল ব্যাপ্তিকে বিন্দুতে এনে কিভাবে প্রতিবাদের ভাষা নির্মান করেছেন যশোধরা। নির্য্যাস হয়ে মনে রয়ে যায়, পুরুষকে বিযুক্ত করার অভিপ্রায় নয়, তার সংগে আবার প্রথম থেকে পড়া জীবনের পাঠ।" ( অনিতা অগ্নিহোত্রী) "লেখক যশোধরা রায়চৌধুরী, তাঁর চাকুরি প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরের, তাঁর গল্পের ভুবন প্রচলিত ভাবনাচিন্তার একেবারেই বাইরে। তিনি তাঁর লেখায় অণুবীক্ষণ দিয়ে মানুষের জীবনযাপনকে দেখতে চান, তাঁর গল্পে সেন্টিমেন্ট কম, বাস্তবতা বেশি। যেমন তাঁর গল্পে এক চাকুরে তরুণী মেল ট্রেনের নাইটজার্নি করে উপরের সিটের কাউকে অনুরোধ করে বার্থ বদলাবদলি করে পট করে উঠে যায় ও ঘুমিয়ে পড়ে। ...তাঁর শেষ উপন্যাস স্রোত -এ নারীস্বাধীনতার চূড়ান্ত ছবি। প্রতিটি নারীচরিত্র স্রোতের বাইরে গিয়ে কথা বলে। পুরনো ধ্যানধারণা ভেঙেচুরে ফেলতে চায়। সাম্প্রতিক কালে কলকাতার কোনও এক বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েরা প্রতিবাদ করেছিল তাদের অন্তর্বাসের ওপর প্রতিবাদের কথাগুলো লিখে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে একের পর এক টাঙিয়ে দিয়ে। স্রোত এমন আধুনিক সব বিষয়ে আলোকপাত করেছে যা কিছুকাল আগেও কল্পনা করা যেত না। এ যুগের নারীসত্তার এক অনন্য প্রতিফলন। " ( তপন বন্দ্যোপাধ্যায়-এর "ইদানীঙ কার বাংলা গল্প উপন্যাসে লেখিকাদের নারীসত্তার উপস্থিতি" প্রবন্ধ থেকে, প্রকাশিত আরাত্রিক পত্রিকা ২০২১)। চতুর্থ পর্ব।

সুনন্দনার রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস

প্রেম হল সব চেয়ে স্বাভাবিক অস্বাভাবিক অবস্থা।
কেননা প্রাণ নিজের থেকে বেরিয়ে অন্যের মধ্যে গিয়ে বসে।
প্রেম পারে আমাদের নিজেদের থেকে বেরিয়ে যেতে দিতে।
সাময়িকভাবে।
তারপর আবার আমরা নিজের মধ্যে ফিরে আসি।
স্পেল কেটে যায়।
মন প্রেম থেকে উঠে গেলে প্রেম আর মনেই পড়ে না।
মনেই পড়ে না, কীভাবে মন বেরিয়ে গিয়েছিল এবং ঢুকে গেছিল অন্য লোকের মধ্যে বা ঘুরঘুর করছিল তার চারপাশটিতে।
হায়।
প্রেম , স্বাভাবিকভাবেই, অস্বাভাবিক।
ইংরিজিতে লেখাটা লিখেছিল সুনন্দনা। অর্চিকে পড়িয়ে একটু লজ্জা পেল সে।
কিন্তু অর্চি পেল না। অর্চি পড়ে বলল, বাব্বাঃ খুব ভাল কিন্তু ভীষণ বেশি ডিপ হয়ে যাচ্ছে না?
ডিপ, হ্যাঁ, তো কী?
মানে আমার মাথার ওপোর দিয়ে না বেরোলেও অন্যদের যাবে।
ধ্যাত তেরি কা। তুই না!
খুব রেগে গেল ও।
না, মানে আমি তোকে ডিসকারেজ করতে চাইছি না। আমি জাস্ট বুঝতে পারছি যে তোর আগের ব্রেকাপের ব্যথাটা এখনো যায়নি। পুরনো ক্রাশকে দেখেছিস এর মধ্যে কোথাও? তাই এইসব রিয়ালাইজেশন?
আমি খেলব না তোর সঙ্গে যা!
রেগে ও উঠে যেতে চায়। ওর হটপ্যান্টস পরা পাতলা সুন্দর পা, হাঁটু, থাইয়ের ওপর অর্চির আঙুল খেলা করছিল এতক্ষণ অন্যমনে। ও খপ করে হাত ধরে।
তারপর ওকে টেনে এনে ডিপ কিস করে।
ওরা খানিকক্ষণের জন্য ডিপ কিসে ডুবে থাকে।
তারপর অর্চি বলে, একটা মজার কথা শোন। আমাদের বাড়িতে একটা বুড়ো আসে, দাদু ঠাম্মাকে মালিশ ফিজিও থেরাপি করাতে। সেটা একটা যা বুড়ো না। সেদিন যা দিয়েছি না। বসে বসে হোক চুম্বন আন্দোলন নিয়ে ব্যাঁকা ব্যাঁকা কমেন্ট মারছে। নিজেদের কম বয়সে তো কোনো মেয়ের সঙ্গে মিশতে পারেনি। এক্কেবারে রিপ্রেসড সব। এদিক ওদিক মেয়ে দেখে বেড়ায়। ওর কথাটা শুনেই আই পুট মাই ফুট ডাউন। বলেছি এসব বুঝবেন না দাদু, চেপে যান।
হি হি। যাঃ তুই না ভীষণ মীন হয়ে যাস মাঝে মাঝে।
শোন। চাপ তো। এইসব লোকেদের একদম স্পেস দিতে নেই। স্পেস দিয়েছ, কি এসে দুটো জ্ঞান মেরে চলে যাবে।
তুই আমাকে স্পেস দিস? হঠাত সুনন্দনার গলাটা কেমন হয়ে গেল, কথাটা । যেন উড়ে গেল আদ্ধেক, হাওয়ায়। অর্চিও যেন শুনতে পায়নি।
কী? ফিরে তাকালো ও। আজকাল জিমে যায় অর্চি। রোজ ওয়ার্ক আউট করার ফলে ওর বাইসেপস চেয়ে চেয়ে থাকে। ও সালমানের মত রঙিন স্যান্ডো গেঞ্জি পরে থাকে বাড়িতে। সেই বাইসেপসের ওপার থেকে একটু আন্দাজ করার চেষ্টা করল সুনন্দনার মুডটা। মাপল। কেস কী রে তোর? মুড অফ?
নাঃ , কিচ্ছু না।
সুনন্দনা মুখ ফেরাল।
কী হয়েছে? ঘন হয়ে এসে আবার ওকে ছুঁতে চাইল, দু হাতে জড়িয়ে নিচ্ছিল।
সুনন্দনা বলল, অর্চি তোর রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস, এখনো সিঙ্গল।
ফেসবুকে। ওদের আলাপের দিন থেকে , আজ অব্দি। অর্চিকে বার বার বলা সত্ত্বেও করেনি চেঞ্জ। সিঙ্গল রেখেছে। কত না ইজিলি ইন এ রিলেশনশিপ উইথ বলে সুনন্দনার ফেসবুক আইডেন্টিটিটাকে জুড়ে দিতে পারত।
সুনন্দনা দিয়েছে সেটা। আজকাল সবাই দেয়। সবাই তো জানাতে চায় অন্যদের। আমি সম্পর্কে আছি। কেউ যাতে ভুল না ভাবে। জাস্ট ফ্রেন্ডস থেকে বয়ফ্রেন্ড গার্লফ্রেন্ড ওঠা তো একটা পদোন্নতি বইকি। তাহলে অর্চি দেবে না কেন?
যেদিন প্রথম ওদের আলাপ তার পর তো দু চারমাসেই সুনন্দনা অর্চির কেস একদম মাখো মাখো হয়ে গেছিল। কত যে ইট আউটে এ রেস্তোরাঁ ও রেস্তোরাঁ, সুনন্দনার বাবা মাকে জকিয়ে কলকাতা আসা, অর্চির সঙ্গেই শুধু টাইম স্পেন্ড করার জন্য, কত যে সেলফি তুলে ফেলা স্যামসুং ফোনে, আর সঙ্গে সঙ্গে আপলোড করে দেওয়া, কিউট কিউট, অসাম বন্ধুদের মেসেজ।
এমনকি , গত মাসে সুনন্দনা ওদের রিলেশনশিপের এক বছরও পালন করেছে। অ্যানিভার্সারি প্রেজেন্ট দিয়ছে অর্চিকে, একটা দুর্দান্ত ফ্যাশনেবল হাতঘড়ি…। অর্চি অ্যানিভার্সারির ব্যাপারটা ভুলেই যেত, কিন্তু সুনন্দনার প্ল্যানিং এবং শেষ মেশ বেঙ্গালুরু যাওয়ার টিকিট নিজে নেট থেকে কেটে দেবার প্রস্তাব, এগুলো আসায় , অর্চিও তেড়েফুঁড়ে গিয়ে মা বাবাকে প্রায় আলটিমেটাম দিয়ে টিকিট কেটে ফেলেছে, চলে গেছে বেঙ্গালুরু।
বেঙ্গালুরুর নাইট আউটিংগুলো দুর্দান্ত ছিল। যদিও সুনন্দনার বাবা মা দিনে একবার ডাল ভাত খেতে বলেছে ওদের। সেটা গিয়ে দাঁড়িয়েছে আন্টির বাড়িতে বানানো দারুণ পাস্তা আর নুডলসের ওপর। ওগুলো বাড়িতেই আন্টি দারুণ বানাতো।
সন্ধেবেলাগুলো ওরা বাইরে খেত।
এবার অ্যানিভার্সারি গিফট দিয়েছে অর্চিও। প্রেস্টো থেকে নিজের মুখের ছবি প্রিন্ট করা মাগ ।
কিন্তু রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস আপডেট করে “ইন এ রিলেশনশিপ উইথ” করতে এত কেন দেরি?

ঘরের দরজা বন্ধ রেখেছিল অর্চি।
কেননা ঘরে এসি চলছে।
সুতরাং অর্চির বাবা বা মা এসে বাইরে থেকে চাপা গলায় ডাকত, যদি বাড়িতে থাকত বা কাজ থেকে ফিরত। আপাতত ওরা নেই। কাকু কাকিমা আছে অবিশ্যি।
এভাবেই চলে অর্চির।
সুইগি নামে একটা অ্যাপ আছে, সেটা দিয়ে যে কোন নিকটবর্তী রেস্তোরাঁ থেকে খাবার আনানো যায়।
ও আনায়। ক্রিস্পি নুডলস অথবা শাওয়ারমা র‍্যাপ।
অর্চির কাকা বলে, অর্চি শহরের এলাকার যে কোন জায়গায় থাকলে ওর বেঁচে থাকার কোন অসুবিধে নেই। রান্নার লোক লাগবে না। কিচ্ছু লাগবে না।
কিন্তু ঠাকুমা তো ভাত রেঁধেছে । ঠাকুমা অর্চির কথা ভেবেই মাংস রেঁধেছে।
অর্চির জন্মের পর থেকে বাড়ির সিস্টেম যেমন পালটে গেছিল, সপ্তাহে দু কেজি চিকেন লাগত ওর। ও মাছ খেত না, তাই রোজ চিকেন।
ওর জন্য চিকেন না থাকলে, ফ্রিজ ফাঁকা হয়ে গেলে, ঠাকুমার মাথায় বজ্রাঘাত হত।
এভাবেই অর্চির নিজস্ব এলাকা তৈরি হয়েছে। নেগোসিয়েশন লাগেনি। প্রথম পুরুষ সন্তান হবার ফলে সবটাই ওর ইচ্ছেমত, বা ওর মায়ের , ওর বকলমে ইচ্ছেমত চলেছে।
বাড়ির কেন্দ্রীয় অঞ্চলের টিভিটা অন্যের দখলমুক্ত হয়েছে মায়ের অঙ্গুলি হেলনে। মা বলেছে, অর্চি এখন খাবে। ও টিভি না দিলে খেতে পারেনা। কার্টুন নেটওয়ার্কটা দিয়ে দাও তো। সেভাবেই চলেছে। খবর বা নাটক বা সিরিয়াল মুহূর্তে পালটে গেছে। কার্টুন দেখা শুরু হয়ে গেছে।
অর্চি বাড়ির কেন্দ্রীয় চরিত্র , অর্চির মেজাজ মর্জি অনুযায়ী পৃথিবী আবর্তিত হয়।

আজ অবিশ্যি নিজের ঘরের প্রাইভেসিতে এসি চালিয়ে অর্চি বসতে পেরেছে।
আঠারো বা কুড়ি বা বাইশ বছরে সবাই এভাবে পারে না।
অর্চি সুনন্দনা ঘরে ঢুকতেই দরজা বন্ধ করে দিতে পেরেছে। টোটাল প্রাইভেসি।

সকাল থেকে রাত এখন দরজা বন্ধ করে ও সুনন্দনার সঙ্গে কাটায়। খাবার আনিয়ে নেয় বলে, কারুর কিছু বলবার নেই। আমার বান্ধবী এসেছে, তোমাদের তো কোন ক্ষতি করছি না আমি, আমার জন্য তোমাদের ত এক্সট্রা কাজ কিছু করতে হচ্ছে না।
বাবা কিছু বলবে না , বাবার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে খাবার দাবার আনানো হয় সব হয়, তবু। বাবা আসলে মাকে ভয় পায় আর সেটাই অর্চির ট্রাম্প কার্ড।
মা কিছু বলবে না কারণ মা মুগ্ধ অর্চিতে। মাকে হাতে রাখার অনেক কল জানে অর্চি। কখনো তম্বি তম্বা, কখনো ইমোশনাল ব্ল্যাকমেলিং। কখনো মিষ্টি কথায় তুষ্ট রাখা। আর সমানে চাপে রাখা।
মা চিরদিন অর্চির ফর-এ। থাকবে। থাকতেই হবে।
এই দুটো এলিমেন্ট ম্যানেজে থাকলে ঠাম্মু , কাকু , কাকিমা সব্বাই বশে। কারণ ফ্যামিলি টাই টা আবার এই বাড়ির লোকের কাছে সুপ্রিম। সবাই সবার দায়িত্ব নেবে। এটা এদের মটো। কী ভাল পরিস্থিতি। ভাবাই যায়না।
সুনন্দনা সাড়ে নটা অব্দি থাকে। অর্চির বিছানা লাটাঘাঁটা, মানসীকে পরিষ্কার করে দিতে বলেন ঠাম্মি।
মানসীর গা গুলিয়ে ওঠে।
কী নিঘিন্নে ব্যাপার বাপু! এসেছি বুড়োকে দেখতে, হাগামোতা সাফ করেছি। তাতে এত ঘেন্না নেই। এ তো একেবারে রাসলীলের আসর বসিয়ে রেখেছে এরা। একটা কচি মাথার ছেলেকে, মাথা চিবিয়ে খেয়ে গেল এতক্ষণ মেয়েটা।
ছিঃ!
ওই বিছানার চাদর দেখলেও পাপ। কী না কী করেছে ওর ওপরে সারাদিন ঘর বন্ধ করে। টান মেরে ধুতে দিয়ে দিল মানসী।
মাসিমা, একটা কাচা চাদর দিননা। কেমন বিচ্ছিরি নোংরা হয়েছে , গন্ধে আমার গা গুলিয়ে উঠছে।

সারাঘর অর্চির ফ্রেশনারের স্প্রের গন্ধ ভেসে থাকে। তার সঙ্গে চিকেন শাওয়ার্মা, একটা রুটির মত জিনিশে সাদা সস আর মুর্গির মাংস দেওয়া, সেই খাবার খাবার গন্ধ।
বদ্ধ চাপা রেস্তোরাঁর মত । সেই কবে, একবারই , একটা এসি করা রেস্টুরেন্টে গেসল মানসী। কত বড় বড় আলো, আয়না। সিনেমায় যেমন দেখায়। তখন রান্নার কাজ করত এক বৌদির কাছে। বৌদি কী অদ্ভুত , ওকে, নিজের ডেরাইভারকে, সবাইকে জড়ো করে চিনে রেস্টুরেন্টে গেল। কেঁচোসেদ্ধর মত চাউ খাওয়াল। ঘরে ঘরে, বাড়িতে বাড়িতে তখনো খোঁপাচাউ ঢোকেনি। সব দেখেশুনে গা গুলিয়েছিল সেবারও। টেবিলে টক টক পচা মদের মত মত গন্ধ একটা কী যেন রাখা। বাটিতে। কাঁচালঙ্কা কুচি। বৌদি হাসে, বলে মদ না রে, ভিনেগার। আসলে সিনেমায় ত সব বদমাশ লোকেরা রেস্টুরেন্টে খাচ্ছে দেখায়। মানসীর ওইটেই বিশ্বাস।

তবে বৌদির কাজ ছেড়েওছিল ফ্রিজের ভেতর বরফের জায়গায় এক গাদা গোটা মাছ আর কিসের যেন মাংস রাখা দেখে। অগোছাল ছিল বৌদিটা। মাছের রক্ত না ধুয়েই ফ্রিজে চালান করে দিত। কী ঘেন্না। মানসী এক ছুটে বাথরুমে গিয়ে ওক তুলেছিল।

এখনো মাসিমা ফ্রিজ থেকে বাসি, কড়কড়ে হওয়া মিষ্টি, পুরনো আটার রুটি দিলে মানসী খায়না। খুব ঘেন্না পায়। কীকরে ঐ বাসি জিনিসগুলো দিনের পর দিন রেখে রেখে খায় রে বাবা ওরা!

মানসীর সংসার ত দিন আনি দিন খাই-এর সংসার। এক পলা তেল নেবে দোকান থেকে রোজ। চাল কিনবে, আলু কিনবে রোজ। রাখারাখির নেই। মুদির দোকানে ধারবাকিও নেই। যেদিন জুটবে না, জুটবে না। না খেয়ে থাকবে। যেদিন ছেলের জন্য চাউ বানাবে, সরু সরু করে পেঁয়াজ কেটে, ঝিরিঝিরি আলু কেটে, কাঁচালংকা দিয়ে ভাল করে সাঁতলে চাউ ফেলে দেবে। ওরকম চাউ করুক দিকি গুঁফোগুলো! গা দিয়ে চান না করা বাসি গন্ধ, তার ওপরে কত ম্যালা সেন্ট লাগিয়ে সুবাস করা! বন্ধ ঘর, সেন্টের গন্ধ, আর বাসি খাবারের গন্ধ, একদম সহ্য করতে পারেনা ও।

গা তো গুলোবেই মানসীর।

CATEGORIES
TAGS
Share This

COMMENTS

Wordpress (0)
demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes