
সব্যসাচী সরকার-এর কবিতাগুচ্ছ
জোকার বিষয়ক তিনটি
১
রেললাইনে গলা দেওয়ার প্রবল ইচ্ছে চেপে রেখে জোকার স্টেশনের ধারে একটা চায়ের দোকানে এসে বসল। চার টাকার লাল চায়ে চুমুক দিয়ে সে দেখল, মাটির ভাঁড়ের মধ্যে একটা পুকুর। কাঠাফাটা রোদ, কিছুটা দোনামোনা করে সে নামল সেই পুকুরে। দূরে কোথাও একটা শোনা গেল হাসির খিলখিল আওয়াজ।
ওই আওয়াজে বিদ্যুৎ চমকের মতো ফিরে এল সেই দুপুর, যখন ডাইনির হাতে ধরা মাটির ভাঁড় থেকে তার দিকে ছিটকে উঠেছিল পুতুল নাচের ইতিকথা…
২
ঠিক কী করতে চাইছে, বুঝতে না পেরে বালিশে মাথা গুঁজে শুয়ে ছিল জোকার। যে ভাবে বেশ কিছু সন্ধে সে একটা সুড়ঙ্গে পাচার করেছে। আরও কিছু অপছন্দের বস্তু তার ওই সুড়ঙ্গের দিকে ঠেলে দেওয়ার ইচ্ছে। যেমন সাদা রঙের নিওন লাইট, ক্লাস নাইনের ক্লাসরুম, মিসেস বাসু আর সু়ড়ুৎ করে মুখে সাপের মতো নুডলস পুরে নেওয়া মোহিনীমোহন চ্ক্রবর্তী। বহুদিন ধরে জোকার মোহিনীমোহনকে খুঁজছে।
মোহিনীমোহনকে কি আপনারা চেনেন? নাহ, জোকারও চেনে না!
৩
সবে সেকেন্ড ওয়েভ শেষে লোকে মাস্ক খুলেছে। অনলাইন ক্লাস ভুলে স্কুল আর কলেজের দিকে যাচ্ছে কচি কচি মুখ, ঠিক এমন একটা সময়ে রাতের দিকে জোকার হেঁটে যাচ্ছে কুয়াশায় ঢাকা সেই রানওয়ের দিকে। বেরনোর আগে একবার ডাইনির খোঁজ করেছিল সে, কিন্তু মোবাইলে ব্যস্ত থাকায় একাই বেরিয়েছে।
জোকার জানে, একটু পরেই তার স্বপ্ন সত্যি হতে পারে। জনমানবহীন ওই রানওয়েতে নামবে এসে একটা প্লেন। দরজা খুলে নেমে আসবে সিঁড়ি। একেবারে উপরে প্লেনের দরজায় হাসিমুখে দাঁড়িয়ে থাকবে বিমানসেবিকা। হাত নেড়ে ডাকবে তাকে।
তারপর? প্লেনে উঠব উঠব করেও একটু পিছিয়ে আসবে জোকার। তার মাথায় ঘুরঘুর করবে বিভ্রান্তিমূলক কিছু শব্দগুচ্ছ…