সবর্ণা চট্টোপাধ্যায়-এর কবিতাগুচ্ছ

সবর্ণা চট্টোপাধ্যায়-এর কবিতাগুচ্ছ

একটা বিস্তৃত হাসির ভেতর

একএকটা বিস্তৃত হাসির ভেতর চকচক করছে জল
যেন ভোরের আলোয় হীরের কুচি,
ধুলো আর কুয়াশায় মোড়া স্মৃতি
এত ধারালো কী করে হয়?

বরফঠান্ডা জলে হাত ডুবিয়েছে যেন তৃষ্ণা
জেনেবুঝে কেটে যাওয়া ছালে নুন ছিটিয়ে দেখছে
ক্ষত, কতটা গভীর!

একটা ছবির মতো দিন,
অথচ তোমার আর আমার – ফারাক এতটাই।
কখন কোমার ভেতর নিথর হয়ে আসে জীবন,
মৃত্যুকেও দেখা যায় না আর-
শুধু এক অনন্ত অপেক্ষার পথ, স্পর্শ করে-
হলুদ নাম না জানা ফুলগুলো জড়িয়ে থাকে
মেখলা চাদরের মতো।
জানি সবটাই মিথ্যে, ঠিক হাসির মতোই
বাঁধ ভেঙে ভাসে কোলাহল
যানজটে দাঁড়িয়ে মানুষ বোঝাই বাস
শুধু চোখের ভেতর থেকে অসংখ্য পাখি এসে
দুরন্ত গতিতে উড়ে যায় সরোবরে…
বাকিটা ঝাপসা, ঠিক আমাদের বিবাহের মতো!

আমি এক সামান্য মশা

কবিতা চুরির নাটক মঞ্চস্থ করছেন দুজন কবি।
চারদিকে স্তাবকতার ঢেউ। শুধু কবি জানেননা কি কারণে
মিলে গেছে তাদের কাব্য ভাষা।

এসব দেখতে দেখতে ইচ্ছে করে কুটিকুটি করি নিজের
সমস্ত লেখা। যে বাজার আমায় ইগনোর করে রোজ তারা
জানে ভালো করে সাইলেন্ট রিডিং আসলে কী!

আমার কোনো পাঠক নেই। অথচ লেখারা রোজ উবু হয়ে বসে। জেদের বসে আমি সাজিয়ে তুলি বিবাহবাসর।
দাম্পত্য কলহের মতো সমস্ত কালসিটে জমা হয় একে একে। মব লিঞ্চিংয়ের সুবর্ণ সুযোগে সবটাই শেষমেশ
কলতলা। বিরক্তির শেষ মুহূর্তে মঞ্চ ত্যাগ করি।

গড়গড় করে কবিতা পড়ার পর দেখি জনমানবশূন্য সভাঘরে হাততালি দিচ্ছে কটা মাছি।
শিল্পে এসব হয়েই থাকে। ক্ষমতাই সব।
সামান্য মশামাছিদের মতো মরতে হবে তাদের যারা কখনও খেলতে চায়নি হোলি।
আমি এক সামান্য মশা৷
ঝড়ে গুটিয়ে রাখি ফিনফিনে পাখা।
কিন্তু প্রয়োজনে তোমাকে বুঝিয়ে দিয়ে পারি
রক্ত, তোমারও কালো, শুকিয়ে গেলে৷

ষড়যন্ত্র করো

অন্ধকার পাশ ফিরে শোয়
বুকের ওপর উল্টে রাখা বই-
আমি কি তোমাকেই ভাবছি?

আজকাল বন্ধুহীনতায় ভুগি।
তুমি ছাড়া আর কেউ নেই কথা বলার!

আমার ভেতর থেকে তোমার হাত, পা, মুখ
বাইরে আসে৷ গাল ছুঁয়ে দেখি কিভাবে সমুদ্র লুকিয়ে আছে পরিত্যক্ত কবরের ভেতর…

কেন যে ইচ্ছে করে না, একটু সাজি-
পুরুষসঙ্গ করি-
কেন যে নিজের ভেতর এতটা গভীর খাদ খুঁড়ে ফেলি,
তাকাতেই ভয় পাই।

একা হতে ভালো লাগে এত- তরঙ্গের বুকে যে ডিঙি
ভেসে যায় একা, মনে হয় তা আমার।
তুমি এখানেও ষড়যন্ত্র করো-
হাত ছাড়ো না কিছুতেই যে অলক্ষে হারিয়ে যাব
আর কিচ্ছুটি না বলে!

রোডট্রিপ

মনে করো বাঁকা পথের শেষে কেউ নেই
তুমি আর একটা হার্ডকোর বাইক
কতদূর যেতে পারো যাতে আর মনেই না পড়ে?

আমাকে ভুলতে যতবার নতুন শহর খুঁজেছ
ততবার ঠকেছ নিজেই।
সান্ত্বনাস্বরূপ কিছু নেশার দ্রব্য আর ধোঁয়ার ভেতর
হারিয়ে যাওয়া…
একএকটা রোডট্রিপে তুমি নিজেকেই আবিষ্কার করো
আবার। কিছুটা অক্সিজেন টেনে সমুদ্রে ডুব দাও।

অরণ্য ভুলিয়ে রাখে তোমার আগুনশোক
চোখে জল এলে বুঝি দুর্বল হয় পুরুষ?
যতটা নিশ্চুপ হও, ততটাই কাঁদতে দেখি আরও,
বোঝ না, প্রতিটা রোডট্রিপের শেষে আমিই
মুছিয়ে দিই জমে থাকা কপালের ঘাম!

আশ্চর্য প্রেমিক

নিস্তরঙ্গ জলের ওপর ভেসে থাকা নৌকায়
চিত হয়ে শুয়ে আছি।
পারবে এমন আশ্চর্য প্রেমিক হতে?

ভয় কখনও ভালবাসা চেনায় না,
যেমন চিনতে দেয়নি তোমায়।

জলের ওপর কৃষ্ণপক্ষের চাঁদ
নৌকার সরু দেহ, বয়ে নিয়ে চলে দিন থেকে রাত।
আমি দেখি ভিজে শরীরে পুরুষগন্ধ
নিয়ে তেড়ে আসছে প্রবল বাতাস-
কেঁপে উঠি। স্রোত থেমে যায়…

আজকাল জোরে আর ডাকতে পারিনা
খিদে পেলে মায়ের হাতদুটো ছায়ার মতো ভাসে
কতদূর গেলে সন্তানের ডাক আর পৌঁছায়না?

তুমি যেমন বদ্ধ জলাশয়ের মতো নিজেকে স্থাপন করেছ,
আমিও সমস্ত সৌষ্ঠব সাজিয়ে রেখেছি অতলে।
সঙ্গমের পর রবীন্দ্রসঙ্গীতের মতো তারা নিস্তেজ
করে সমস্ত বন্যতা। ক্লান্তির জল এসে পড়ে
অভিমানে। দেখি, সরোবরের নাভিদেশ থেকে
তুমি তুলে আনছ চাঁদ ঘোর অমাবস্যায়!

CATEGORIES
Share This

COMMENTS

Wordpress (1)
  • comment-avatar
    Arnab Mukhopadhyay 2 years

     খুব ভালো লাগল, বিশেষ করে রোডট্রিপ!

  • demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes
    403 Forbidden

    403 Forbidden


    nginx