
রঙ্গীত মিত্র-র কবিতা
গরান গাছ
গরান গাছ ঘুমিয়ে আছে।
তার নখ লাগানো কাদা মাটি।
কাদা লাগা চাঁদ থেকে
মধু নেমে আসে, সংসারে।
কালো ফিতে বেঁধে রাখে
যতক্ষণ না সকাল আসে।
ঈশ্বর
অশোক স্তম্ভের ছায়া নিয়ে
কারা যেন খেলে যায়।
নির্জনতা ভেঙে ভেঙে চিৎকার করে
সাইরেন।
জানলা খুলতে গিয়ে দেখি, দেওয়াল।
দেওয়ালে কাস্তে হাতুড়ির রং
অচেনা।
গিটারটাকে বন্দুক বলে মনে হয়।
গুলি-হীন বন্দুক নিয়ে
যুদ্ধ করতে গিয়ে দেখি,
পরাজয় আমার পাশে বসে।
ঈশ্বরের সঙ্গে এইভাবেই আলাপ ।
জোন বায়েজ
খোঁড়াতে খোঁড়াতে একটা অটো
কুকুর পেরিয়ে
চলে যায় স্ট্যান্ডে।
যাদবপুরের রাত দশটা পেরোয়
ফ্লেকের আগুন ।
বটগাছটাকে মহুয়া বলে ভাবতে থাকি
আর রাতের তারাদের থেকেও উজ্জ্বল
সাউথ সিটি।
কিন্তু এই বৃষ্টিতে একা হাঁটতে কি ভালো লাগবে ?
রক্ত এবং জল
আগুন জ্বলছে।
আমি চিৎকার করতে পারছি না।
কেরোসিন মাখানো একটা ন্যাকড়া জড়ানো
আছে, মুখে।
আমার ভয় করে। আমার ভয় করে।
সিনেমায় দেখা সেই আওয়াজ, রক্তপাত , বীভৎসতা
আমার আন্তর্জাতিকতা এতোটাই নকল এবং বানানো
আমি কিছু বলতে পারছি না।
আমার ভাষা
রক্তের সঙ্গে জল যেমন মিশে গেছে।
ইছামতী
টেবিলের তলা দিয়ে গলে যাচ্ছে
অর্থনীতি।
ধর্ম আর দর্শন
ইথানল আর পেট্রোলের মতো মিশে গেছে।
ভিয়েতনাম আর আফগানিস্তানের জন্যে
কেউ আর রাস্তায় নামতে চায় না।
ইছামতী চলে গেছে, আমাদের দুজনের
ভিতর দিয়ে।