বেবী সাউয়ের কবিতাগুচ্ছ

বেবী সাউয়ের কবিতাগুচ্ছ

বাংলাদেশে প্রকাশিত ' এই পুজো, পরমহংস' কাব্যগ্রন্থ থেকে কয়েকটি কবিতা।

গ্রাম

যে তোমার কেউ নয়…একদিন ছুঁয়েছিল মন

সে ফেরার পথে আজ ঝড় জল; জারুলের বন

শকুন্তলা

চারপাশে এই শকুন শকুন চোখ;
অন্ধকারের মধ্যে ফুটে ওঠা বিরহকাতর কৌমার্যের শীত
অথচ, শীতলতা মাপনের কোনও যন্ত্র আবিষ্কৃত হয়নি বলে
কাছে টেনে নিলে তুমি
কোরকের ওপর ঢেলে দিলে উত্তপ্ত জন্মবীজ
রক্তপাখির আঁচড়, নখ

সমস্ত স্মৃতিচিহ্নের মধ্যে বেজে উঠল শিশুর আর্তনা

কালিকা

চোখেতে হারাই আজকাল

অনেক অনেক শ্মশান ভেঙে
রাজপথ ভেঙে
জোগাড় করেছি শেয়ালের উজাগর চোখ
মাথা গুণছে মুণ্ডু
মুণ্ডু খুঁজছে লাশের ছবি

ইস্কাবনের বিবির সঙ্গে বিবাহসূত্র পাতছে চেসের সম্রাট

তুমি পোষ মানাচ্ছ ধ্বংস

লক্ষ্মী

সাধারণ এই মাটির ভাণ্ড
ভেবো না, অতল ভেবে গ্রহণ করে আছি

সন্তানের লোভে এইযে বিবাহমন্ত্র
নীলাভ চোখ
অনন্ত ঘুম পেরিয়ে আকাঙ্খা

শুধু প্রেমের কাছে নতজানু এই শৈত্য প্রবাহ
নিশ্চিত আবেগ

নাহলে কে কার!
কে কার না- হলে বল!

যুধিষ্ঠির

বারবেলা ভেঙে, পঙ্গুত্ব ভেবে
সমাজ কতটা যৌক্তিক কাহিনী গঠন করে মা গো

আনাচে-কানাচে ফিসফিসানি শুনি
চুপ থাকি

সন্তানের জন্মে ভেসে ওঠে অবৈধ পিতার পরিচয়

ধর্ম বলে
নিয়ম বলে
যুক্তি সাজালেও
যে মন সহজ তাকে কী আর ধুয়ে ফেলা যায়!

নিপুণ ভাবে কাটা ঘায়ে মেশানো
নুনের আস্তরণ
কীটনাশক নেই বলে ব্যবহৃত সুযোগ
সময় পেলে বাঘের নখ
চক্রবূহ্য

কুকুরই একমাত্র সন্তান হতে পারে

নাহলে তো সব মিথ্যে বিশ্বাসঘাতক

কুন্তী

কতবার মুখ এগিয়ে নিয়ে গেছি , বলবো বলবো করেও গলা আটকে রেখেছি সেফটি পিনে ।শব্দ এত অপ্রতুল , এত শব্দহীন দুনিয়া । চুলের ক্লিপ বেয়ে নামতে থাকে সস্তা তেলের গন্ধ তখন । আলো আর রাত্রি তখন খেলা করে ব্যারিকেডে , ভাঙা কার্ণিশে বেয়ে চাঁদের বয়ে চলা ।চুম্বনকালীন এই দৃশ্য নিয়ে নিজেকে মা ভেবে বসি । হাজারটা স্পর্শ ছাড়িয়ে আমি তখন বৌ বৌ তোর । তোর সন্তানের হাজারো নিশ্বাস ঘিরে আমার বাঁচা বাড়া , কিশোরী বেলা ।আমি ছুটতে থাকি , ছুটতে থাকি।এক একটি তীরে থাকে আমার জরায়ুর লক্ষ্যভেদ । হৃদযন্ত্রে ঢোকানো ভয় নিয়ে খাদে এগিয়ে রাখি পা ।হঠাৎ মোড় ঘুরে দেখি লক্ষাধিক আঙুল রোজ ছুটে আসে ,ছুটে আসা থুতুতে চোখে মন্দাকিনী । এই অবগাহন তোর বোঝার কথা নয় । এই সমগ্র তরল কেমনভাবে আশ্রয় নেয় সাপের কপালে , বুঝবি না কোনদিনও । এই সস্তার টিন-চুড়ি পেরিয়ে আমার সিলেবাস , বুঁদ হয়ে থাকা সেকেন্ডে বিজাতীয় প্রশ্ন । মফসসলে আগুন লাগে বেশী , এত পুকুর , এত খানাখন্দ পেরিয়ে দুদন্ড বসি বকুলতলায়।তোর বাঁশির স্বরে তলপেটে মোচড় দিয়ে ওঠে রক্তাভ লাল । ঠোঁটে ঝুঁলে থাকে তারাখসার ভস্ম । আর …

এই ভস্ম মেখে এক জরাজীর্ণ শিব উঠে আসেন , ছেঁড়া ব্লাউজ নিয়ে মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র শিখি আর সন্তানের স্কুলের খাতায় লিখে রাখি অবৈধ পিতার গোপনতম নাম ।

মিথ্যা#

বৃষ্টি হলেই নৌকা গড়ো তুমি, কাগুজে। হেলতে দুলতে রং-ভরা নৌকো সেসব আমার চিলতে রোদ ভিজিয়ে দেয়। সরসর করে মেঘমল্লার বাজে গ্যালাক্সি ফোনে। মাইথোলজি রাক্ষসীর করুণ চোখ সাঁতার শেখে তখন। তখন হ্যান্ডসেটের চৌকাঠে স্বপ্ন আর মায়া; মায়া আর খড়কুটোর সংসার। ধীরে ধীরে বৃষ্টি কমে। ধীরে ভাঙে নৌকোর মাঝি । সোনাভ্রমে উঠে আসে নিকেলের টিন। সেই দাঁড় ভাঙা পাঠাতনে, গড়ে তোলা পা, পড়ে আচানক। এরপর আমাদের ক্ষীণজীবি সন্তান সমস্ত আত্মহত্যা ভেঙে, কুকুর সঙ্গে নিয়ে সেই যে বেরিয়ে গেল!

সেই দিন থেকে, মা-বাবারা, তাদের সন্তানের নাম রেখে গেছে যুধিষ্ঠির।

রূপকথা

অনেকদিন, আজকের মতো রবিবার ছিল। আর হলুদ রঙ যে কারো ভালো লাগতে পারে তা ছিল আমার অজানা। বান্ধবী এসে বলল—চল্, নেইলপালিশ কিনে আনি। হাঁটতে হাঁটতে ওই নদী পেরিয়ে গেছি, ওই লিচুগাছ পেরিয়ে গেছে, যদিও একপাটী জুতো নিয়ে আমরা তখনও ভাবিনি। পিঙ্ক নেইলপালিশে মঠাকাশ ভরে গেছে আর রাজার ছাত্রাবাস থেকে ফিরছে তোমার হলুদ বাইক। তোমার এলাচ বুকে সেকি গন্ধ! আঙুলে জ্বলজ্বলে কবিতার আঙটি। রঙচটা সবুজ পাঞ্জাবি থেকে চোখ ফেরানো যাচ্ছে না, মন দেওয়া নেওয়া ও যাচ্ছে না। সে এক যাচ্ছেতাই অবস্থা। ভাবছি এমন কেন কিছু হয় না, শপিং মলের জায়গায় গোল পাতার কুঠির, হলুদ গাড়ি ধবল আলোর ঘোড়া। এখানে রাক্ষসদের এন্ট্রি না হয় বাদই গেল। রাতকে আমার ভয় করে খুব। তারপর? তারপর, সে অনেক কথা। নটে গাছ নেই তাই গল্প ফুরানো নেই।রাখাল নেই তাই বাঁশির হারানো নেই।

শুধু আড়ে আড়ে বুঝেছি, বান্ধবী ওই মায়াবিনী রাক্ষসী ; যে হলুদ বাইককে জোছনা আলোয় ঘোড়া বানাতে পারে।

বোধন

আশ্চর্য নিবিড় অতীত পেরিয়ে সকাল নামছে
পাহাড়ের অস্পষ্ট শীতেরা
নেমে আসছে সমতলে

দূরের চন্ডীপাঠে দেবীর বোধন
কাঁসরের শব্দে জুবুথুবু হয়ে আছে
অলীক সত্য

কফির ওমে ঘুম ভাঙছে
মৃত আত্মার

ওকে জেগে উঠতে দাও

তর্পণ

হাতের ওপর বসে আছে ক্ষুধিত স্বপ্নেরা
ভোরের পুবকোন ছুঁয়ে জেগে উঠছে মন্ত্র
কুয়াশার আড়ালে প্রস্তুত রণসজ্জা

পোয়াতি মা আলোর আশায়
চাইছেন বাৎসল্যে
হাত পেতে বলছেন , মাতৃত্ব দাও
সন্তান দাও

প্রেমিকের রূপ ধরে
এগিয়ে দিচ্ছ
মাদক
তিনমুখো অস্ত্র

#পরকীয়া #

রাস্তা ঘুমিয়ে পড়ছে
আর বাসি পেপার নিয়ে খবর হচ্ছে বাড়ি

না নেভানো আলো নিয়ে
ছেড়ে আসা মাঠ নিয়ে
গল্পকথা বুনছে লাল চুলের মেয়ে

কোন দিকে সূর্য উঠতে পারে কাল
কলেজের হাঁটাপথে
অপেক্ষা পুষতে পারে কোন খামখেয়ালী যুবক

ভাবতে ভাবতে নিজেকে ভুলে যাচ্ছে

মাউথ অর্গাণ লুকোচুরি খেলছে
রাধাচূড়ার সঙ্গে

<

CATEGORIES
TAGS
Share This

COMMENTS

Wordpress (1)
  • comment-avatar
    স্বর্ণেন্দু ঘোষ 4 years

    খুব ভালো লাগলো কবিতা গুলি। বইটি পশ্চিমবঙ্গেও পাওয়া যাবে কখনো আশা রাখি।

  • demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes