
প্রসূন মজুমদারের কবিতাগুচ্ছ
ইঁদুর ও ইঁদারার দিন
তারা যে গতিতে খসে দুর্ঘটনা সেভাবে ঘটে না।
অঘটনে ঘটনা কোথায়?
অগতি ও না-গতির যতটা ফারাক তারও বেশি ঘটনারা ঘুরে যায় দ্রুত।
পুণ্যমন্ত্রপূত চাল পোড়ে কারো নাকের অদূরে,
তাকে জুড়ে ইঁদুরের মুখে ধরি ইঁদারার না-এ।
গাঁয়ে , এলো পায়ে ধূলে পা রাখা নরম নারী পায়ে তার নূপুর পরেনি।
শব্দ নেই, লব্জ এই, তারই নিঃশব্দ নূপুরে ভারী ইঁদুরের হত্যাদৃশ্য লিখে যেতে পারি।
দৃষ্টি ও বিভ্রম
দূরত্ব ধুসর… কাছে ফুল।
নিকট বিম্বিত দীর্ণ… প্রবঞ্চক, অনির্ণয়… স্থূল।
এমনই
ধরতাই , যেন তুমি
সমুদ্রে দাঁড়িয়ে ভাবছ ঢেউ-এর কুঁজের উটে তরঙ্গ পেরোয় মরুভূমি।
দেখা ও চোখের সত্যে বাস্তবের কীর্ণ কুয়াজল
একেকটা বিন্দুর বিশ্ব ফুলে নয়, ভুলে ভুলে ঢাকা বনতল।
মিথস্ক্রিয়া
শরীর মনের ভৃত্য। মনও শরীরের।
প্রভু- ভৃত্য – ভৃত্য – প্রভু চিন্তাপরীদের
ঢেউ জাগে, ঢেউ যায়, পাড়ে কী কম্পন!
কেঁপে ওঠে শরীরের প্রতি অঙ্গে মন।
শরীর রাধার অঙ্গ, মন কৃষ্ণ — বাঁশি?
মনোত্তর চিত্ত-রেতঃ-এ ভালোবাসাবাসি।
এ লেখা ভাষার জন্য
ধর্মীয় সম্প্রীতির রাজ্যে হত্যালীলা অসাম্প্রদায়িক।
কিছু কিছু লীলা দেখে মৌন থাকা এখানে রেওয়াজ।
যদি বলি ধিক লীলা! বলি যদি ধিক! শত ধিক!
আমার চিৎকার কোনও প্রলোভনে লুকাবো না আজ।
এ চিৎকার ছুঁতে চাইলে জানি রাত্রি ঢেউ চিহ্নে কেঁপে
বগলেসের মধ্যে আরও কুঁকড়ে যাবে যেমত নিয়ম।
‘লেঠেল কি আদর করবে? ‘, ফলে রাষ্ট্র খুন করবে মেপে
সব ন্যায়, যা তোমার, তোমাকে শেখান ধর্ম, যম।
আমিও বিদ্যুৎ শিখি পেরেকে পেরেক গেঁথে গেঁথে
চমকের মধ্যে কোনও চিরন্তন থাকে না কখনও
যে ভাষা হারাতে চায় তাকে রক্ষা করে কোন প্রেতে!
নিজের ভূতের বুকে কান পেতে মৃত্যুডাক শোনো
ঝাঁপাও,বাঁচাও! কিছু সময় এখনও আছে বাকি
যম যাকে ছুঁয়ে গেছে এসো তারও জন্ম লিখে রাখি।
পালাবো
আমার ধারণারা বেভুল পথে চলে, তোমাকে তার কিছু বলাই যায়…
বাংলা কবিতার বংশলতিকার এতটা ভার নিয়ে চলাই দায়।
কোথাও কেউ নেই সাকিনহীন সেই প্রথায় এমনিই যাওয়া তো যেত!
এক হাঁটু জঙ্গল হাটুরে দঙ্গল এমন অমঙ্গল অনভিপ্রেত।
মাতাল একদল, বলছি কম বল, তবুও বিহ্বল হ্যাজায়, ধুর!
মদনগন্ধের সকাল সন্ধ্যেয় মজার আনন্দেই
বেজায় চুর!
এবারে সরে আসি পেরিয়ে অতিবাসি চামড়া হতে চলা বাংলা কবিতাকে।
যে পাকে জড়িয়েছি উলটো পাক মেরে ছাড়িয়ে নিতে হবে নিজেকে পাকে পাকে।