দেবাশিসের কবিতাগুচ্ছ

দেবাশিসের কবিতাগুচ্ছ

প্রচ্ছদ

মুখে এসে লাগে যেন বিকেলের আভা রোদ
পান পাতার ছোঁয়ায় মুছে নেয়া সে ভালোলাগা
কাঁপা কাঁপা হাতে সরায় চুমু খাওয়া অবরোধ
শীতল পাটির কোলে শুকিয়েছে দগদগে ঘা।

মাথা নত হয় সহসা দু’জনার
অক্ষর বিদীর্ণ ক’রে উঠে আসে স্তরীভূত ছবি
শুরু হয় মলাটে কবিতার পারাপার
বালুকা বেলায় হাঁটে অনুক্ত বেদনার স্থবির।

ঈশ্বর জানেন

ঈশ্বর জানেন সবই
শুরু থেকে সব আভরণ
ছায়াপথ, ধুলোঝর, নাভিমূল প্রসারিত বাঁক।

ঐ খানে বেড়ে ওঠে
সংহত শ্বাস অকারণ
আগাছার মাঝে এক অযাচিত স্বপ্নের ফাঁক।

ঈশ্বর জানেন সবই
মায়াকোল আবহমান
এ জগতে পুঁতে রাখা অনাবিল ইচ্ছের হাঁক।

প্রবাহিত অভিমুখ
লুটোপুটি খায় আনচান
কিচ্ছুটি রবে না, জেনো বিকোবে তিমির বাঁক।

ডালিম কথা

মাঝির বুকটা শুকায়ে যায়
জল তবু সে পায় না
তোমার চোখে আগুন জ্বলে
ডালিম তুমি বেদানা হলে

বুকের ভেতর মাদল তালে
ডালিম তুমি বেদানা হলে

তুফান উজান ঝড় বাদলে
ডালিম তুমি বেদানা হলে

খুব আমোদি বালিশ তলে
ডালিম তুমি বেদানা হলে

আকণ্ঠ পান মদ-মাতালে
ডালিম তুমি বেদানা হলে

প্রণয় প্রাচীন খেলার ছলে
ডালিম তুমি বেদানা হলে

দুইটি শরীর ফাগুন কোলে
ডালিম তুমি বেদানা হলে

সুখের ভেলা দোদুল দোলে
ডালিম তুমি বেদানা হলে
.
– খোসা ছাড়িয়ে বোসো এবার
পুজার আয়োজনে যে দেরি হয়ে যায়!

আগুন জ্বলে মাদল তালে ঝড় বাদলে
বালিশ তলে মদ-মাতালে খেলার ছলে
ফাগুন কোলে দোদুল দোলে
ডালিম তুমি বেদানা হলে
ডালিম তুমি বেদানা হলে
ডালিম তুমি বেদানা হলে।।

দৃশ্যকল্প

ভয়ানক দ্রুততায় ধাবমান ট্রেন দুটি একে অপরের সামনে এসে পড়ে। দুই ট্রেনের যাত্রীরাই নিরাপদ ভ্রমনের আত্মবিশ্বাসী মেজাজে সময় কাটায় এলোমেলো খোস গল্পে। কত শিশু, কত নারী, কতো বা প্রবীন মানুষ- জুড়ে জুড়ে থাকে সবার সাথে। চালকদ্বয় দায়িত্বে নিশ্চল ছিলেন নিশ্চয়। ওঁরা তো প্রকৃতি দেখেন অহরহ যাতায়াতে। একই ভাবেই দেখছিলেন বোধহয় সেদিনেরও সবকিছু।

সবকিছু ওলটপালট করে অতিকায় গতিবেগে ছুটে আসে ওঁরা। জানে আর পথ নেই মরে যাওয়া ছাড়া। ঈশ্বরকে ভাকে? কিছু কি বলার সময় থাকে তখন? কার মুখ ভেসে ওঠে আকাশে? মা জীবনসঙ্গী নাকি সন্তান? নাকি শুধুই এক অন্ধকার মৃত্যু জগৎবাড়ি! নাকি অন্য প্রিয় কেউ! লালিত, মনের মাধুরী মেশানো একতাল কাঁচামাটির একটা মুখ। মৃত্যুকে চোখে দেখে, চেখে দেখে সময়ের গুনতিতে; কমে আসা আয়ুকাল ফেলে।

তারপর জীবন্ত লাশ চারিদিকে শুয়ে থাকে শুধু। হাহাকার চিৎকার কান্না ভাসে ঘিরে থাকা অকুস্থলে। যারা আসেন ফিরে, বেদনার বরাভয় জমে থাকে চিরকাল ধরে।

ছোটোখাটো ভুলচুক রেখে যায় জীবনের অসীম ক্ষতি।

বসন্ত বিকাল

তারপর আর দেখা হয়নি তোমায়।

বসন্তে খসে পড়া চামড়া উড়ে যায়
তোমার চোখের পাতায়।
গাঢ় নীল রঙের ইচ্ছেরা
ছুঁয়ে ছুঁয়ে থাকে নখে নখে
কবেকার অনায়াস চুপকথা
লতিয়ে লতিয়ে ওঠে বিকেলের ছাদে।
তারপর এলোমেলো হাওয়া হয়
অগোছালো আভরণ ওড়ে অবিরত
গৈরিক অবগাহন করেছিল পাঞ্চালী বিকেল।

নকশী কাঁথার দেয়াল

ওপাশ ঘরে হেলান দিয়েছ তুমি মাঘের লাজুক রোদ্দুরের পিঠে
দখিন দিকের জানলা খুলে দেখি শীতল বাতাস বন জুড়ে।
তোমার কোল জুড়ে খোলা বৈষ্ণব সাহিত্য, অবারিত চন্ডীদাস
অন্তরঙ্গ দুপুর বেলাটা খালি পদ্য লেখে বোহেমিয়ান আমার ঘরে।

দেয়ালে ঝোলে সাম্যের গান বিভাজিত ফাটলের মাঝখানে
দেখা হয় শুধু তোমার আমার সংক্রান্তির মাটির আলপনায়
ইচ্ছে হয় এবার শেষ করি আবর্তনের দক্ষিণায়ন।

পদাবলী ওড়ে তোমার আলনায়। দেখতে পাই না। শব্দ শুনি শুধু।
আমার বিছানায় ফলে নতুন চাষের ধান। অশ্রুতে ভেজে শিশির।

শিশিরে ভেজাই নক্সিকাঁথা। দেয়াল জুড়ে মেলে দিই- তোমায় দেখাতে পারিনা।

জার্নি

কারো হয়তো যাবার তাড়া কারও বা ফেরার
স্টেশনের প্রান্ত সীমায় দ্রুত হাঁটা খাটুনিহীন চলাচল
সময় বাঁচায় কিছু বটে,
নিরাপদ একেবারে নয়।
সবাই জিতে যায়।
তৃপ্তির হাসি ফোটে হাঁপাতে হাঁপাতে।
কেউ কেউ ফেরে না ঘরে
হয়না যাওয়াও আর কোথাতে।

বাউল

নাই বা হলাম জনম জনম তোমার কৃষ্ণ প্রিয়
অন্ধ লীলায় একটিবার বাউল করে দিও।


সরে দাঁড়াও

সরে দাঁড়াও।
অবকাশহীন সময়গুলো অশ্বখুরের মতো হারিয়ে যাচ্ছে।
কোঁকড়ানো পাতার মতো যত্রতত্র
ছড়ানো ছেটানো অকিঞ্চিৎ ফুরসত-

সরে দাঁড়াও দেখি।
মন খারাপ আমার।

যত উড়ে গেছে ভাবলেশহীন অপার্থিব
কোচলে আগলে রাখা সুললিত মায়াবী গিঁট
জমে থাকা আঙুলের ফাঁকে সব বাঁধা হয়-

উড়ন্ত যবনিকার এক খন্ড প্রস্থান।

সরে দাঁড়াও নারী।
কিছুই নেই এখানে। শুধু আমি বিলুপ্ত ভিখারী।

পাখি আর ফস্কা গেরো

বটের শিকড়ের মতো জড়িয়ে সে ভালোবাসা
দুর্লঙ্ঘ ইচ্ছামৃত্যুর লাশ জেগে ওঠে পালকের শরীরে
ধূলায় লুটায় ডানা পরিত্যক্ত বাঁধনের ফাঁস কাটা গেরোর আদরে/
উড়তে চায় যে, ধরে কি রাখা যায় তারে?

ঝরে পড়ে সন্ধিহান একরাশ বালুময় ঘৃণা
মানুষের জন্য জোটে অপার্থিব অবহেলার শব্দহীন কুলো/
ডানামেলে উড়ে যায় সতত সুখের ভাষা শঙ্খমালা প্রত্যয়ী আকাশ/

ওড়ার সুখের চেয়ে নগন্য সে দুটি পালক।

অমৃতপায়ী

নিভৃতবাসে আছে কয়েক- অসংবৃত প্রলাপ।

খেলে
গান গায়
গাঁজা খায়
ক্রোধ হীন, শত্রু হীন, নির্লিপ্ত প্রপঞ্চনা।
অপবাদের খোসা ছাড়িয়ে
অনুত্তীর্ণ প্রতিবন্ধকতা;
পশ্চাদ মাড়িয়ে
লিখে রাখে কিছু অপাঙ্ক্তেয় পাণ্ডুলিপির নোনতা ঘাম।/

নিভৃতবাসে এখনও আসেনি পলাতক রোদ্দুর
এখনও বাজেনি পাপক্ষয়ের সেতার
বর্ণহীন, গন্ধহীন উজবুকের ঢিবি জমে, শুধু
বালখিল্য অপহরণের নির্বিকার চিৎকার।

নিভৃতবাসে বেড়ে ওঠে সুকুমারবৃত্তি আর কিছু পরিযায়ী ইচ্ছা।

CATEGORIES
TAGS
Share This

COMMENTS

Wordpress (0)
demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes