আত্রেয়ী চক্রবর্তীর কবিতা

আত্রেয়ী চক্রবর্তীর কবিতা

ব্যাধপুরুষ

সুখকল্প ঈশ্বরকে বলা হয়নি তোমার কথা
বলা হয়নি, তোমার মার্জারস্বভাবসিদ্ধ ধার
ভরাট কাঁধের মানচিত্রখানি

যেটুকু ভিতরস্নান সেরে হেঁটে গেছ অশনিবেলায়, দৈত্যকুলাধিপতি
সে কথাও বলতে পারিনি তাকে

আশ্রয় নিয়েছি অক্ষর, হাওয়ার শিস, পুরানা সংকেতের
বন্দরহীন নাবিককে করেছি ক্রুশবিদ্ধ
জন্মদাগের কালে নিজেকে বলেছি একা, পরিবারহীন

স্মৃতিভ্রম ঘটে যদি, প্রাচীন স্মৃতি, বলাকামেদুর মোহগর্ভ
তুমি তো তেমন দূর নও!
দু-একটি স্টেশন কিংবা নদীর ওপারে শহর
নিজেকে আমি যার মা বলে মানি…


যুদ্ধপরবর্তী :

চিলেকোঠায় লুকিয়ে রেখেছি ঘোর, কলঙ্কতিলক
তুমি তার স্বপনমেদুর জালকাঠিতে বুনে দিচ্ছ
আঁশ, মানচিত্র, ঊরুর প্রবাহ

বরাদ্দ কাঁকরচাল গিলেছে দিন
তার নাভি জুড়ে এখন পোড়া সূর্যের ছায়া
আচম্বিতে পাওয়া প্রেতের সারি।
বিষন্ন স্তন, কাটাদাগ আমাকে দেয়নি ঐশ্বরিক উপমা
রাইফেলে ঢেকে যাওয়া ফুল, কাঁটাতার
বৃহত্তর সিগন্যাল

দেওয়ালে রাখি ওষ্ঠপ্রান্ত
যেটুকু আমরা দু’জন বাতাসের কানে শষ্যসুগন্ধীপ্রাণ
নিভৃতের তমোমণি।
লিখি ‘রংচটা দুপুর’ — আঙুল বোলাই, সজোরে
বোধহীন এক শব্দ ডেকে ওঠে তক্ষকসদৃশ


জাফরান সন্ধে

তোমার তিল থেকে উঠে আসা গূঢ় সত্য ব্যঙ্গ করছে আমায়, অনাদি মিথস্ক্রিয়া ও অন্যান্য…
এই মাধবীকুঞ্জে বসে নিজেকে ভাঙছি, গড়ছি, পিটতে পিটতে ফালাকাটা লোহা। ভাবছি, আসন্ন শীতকালে কোদাইকানাল গেলে ভালো হয়। আড়াআড়ি কিংবা লম্বাটে বারান্দা থেকে সেরে নেব মীমাংসাধ্বনি। দু-একটি ঘাসফড়িং নেমে আসে যদি, হংসধ্বনি জিভের শুশ্রূষাও দিতে পারি তাকে।
ব্যাঙের খসখসে চামড়ায় রোদ পড়ছে, বদল ঘটছে আমার মেয়েবেলায়! এত লোভ ভালো নয় হে যুবতী — কবেকার কোন বন্ধ কারখানা জুড়ে বুনি প্রাচীন পর্দাসেতু, আরামের দেহ, উমদা সুতোর বীজ। সাদা পোশাকের যুবক, তোমার আঙুলে পেতে দেব নষ্ট মেয়েমানুষের বুক, হেমন্তের তরুণী আখ্যান, আচম্বিতে পাওয়া প্রেতযোনি। অথচ, না-হওয়া হিসেবগুলো আমায় দিয়ে লিখিয়ে নিচ্ছে তীর্থযাত্রীর মড়ক, শাসকের লালচোখ, ফরমায়েশি গুচ্ছ-কবিতা…

কর্ত্রী

এখন ঝড়ের মুখে অভিশাপ জেগেছে ফের
ছায়ে ছায়ে ফুটে উঠছে পুরনো দেউল, সম্পর্ক ও নারী

বোবাকান্নার পাশে দাঁড়িয়ে আছি গাছ হয়ে
আমি ও গাছ, গাছ ও আমি, শুষ্কপত্র ছায়া
মুখোমুখি পর্দা ফেলি — সরে যায় আবহমানকাল

যেন নুয়ে পড়ছি ফের কবি-দম্পতি আমরা
যেভাবে তরঙ্গ শেষে নুয়ে পড়ে কথামালা, সমুদ্রজয়
তা বলে বাংলা কবিতা, তোমায় অস্বীকার করি কীভাবে!

দিয়েছ যত শোক, প্রেম, সংসার ও কবি
খাগের কলমটি জুড়ে পাঠিকার ঈর্ষা ও অনেকদূর
ভরেছ পাটিপত্র, মনে মনে বিবাহজল

দর্জিপাড়া লেন ও অন্যান্য :

কবিতা লিখতে ইচ্ছে করে না আর, ওগো যামিনী, সু-যামিনী! বরং এই অ্যাসাইলামের দেওয়ালে মাথা পেতে রাখি; তুমি তারে মধ্যগগন হতে নামিও। বাজিয়ে দেখো আমার ভিতরের বারুদ ও রম্যবীণা। থোকা থোকা প্রেম জেগে আছে ফসলি তাঁতের গায়ে। শহর থেকে দূর এই বাজারে ঘর দেখতে এসেছি, পরান্ময়; আমাদের বিচ্ছেদের পরে আসব বলে, গুছিয়ে নিয়েছি দস্তানাও। হাতের মোড়কে রাখা কুটিল রাজনীতি লিখতে লিখতে, তুমিও তো বোঝো, যামিনী হে — বিচ্ছেদ শব্দে উড়ে যায় কতিপয় ডাহুক, বনোরিয়া কিশোরের খেটোধুতি থেকে ভেসে আসে আকিঞ্চন চাহিদাস্নান।
ও-পাড়ার রাঙাবউয়ের সদ্য লাল ব্রেসিয়ার থেকে ফুটে ওঠা সংসার পরিক্রমার পাশে নতজানু হই। হাতে তুলে নিই তিলবোঁটার মতো বিন্দু বিন্দু ধারা। “এ-জন্ম আর নয়”, বোতল গড়িয়ে যায়। অনাড়ম্বর মৈথুন, উৎপীড়ন।

একফালি শীতকাল আসবে আবার। তার আগে, আমার এই উন্মাদ দৌড়, এই প্রলাপ মনে রাখবে আগামীর জনার্দন বাউড়ি, ধুলোবসতির মাস্তান, পুরনো ক্যালেন্ডারের দুর্গা-সহায় হোক, দুর্গা-সহায় হোক…

CATEGORIES
Share This

COMMENTS

Wordpress (1)
  • comment-avatar
    রাজেশ গঙ্গোপাধ্যায় 2 years

    “অথচ, না-হওয়া হিসেবগুলো আমায় দিয়ে লিখিয়ে নিচ্ছে তীর্থযাত্রীর মড়ক, শাসকের লালচোখ, ফরমায়েশি গুচ্ছ-কবিতা…” – এই শব্দদের লাগাম হাতে যে সওয়ার, তার কাছে ভেদ্য হোক জীর্ণতা, নতুন আলোয় সে নির্মাণ করুক ‘ভিতরস্নান’-এর মত আশ্চর্যকে, ‘অনাড়ম্বর মৈথুন’-কে জাস্টিফাই করার মাত্র একটা ‘উৎপীড়ন’…বিস্ময়ের শেষ সীমা!

  • demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes