
অরিত্র দ্বিবেদীর কবিতা
সমবায় ও বিন্যাস
১)সরল করো:
একটা ট্রেন স্টেশনে থামার আগে ১২ বার ব্রেক কষে। কত সময় লাগবে, নিত্যযাত্রীদের এসব জানতে হয়। তাঁরা হিসেব করে নেন, কতক্ষণে বাড়ি থেকে বেরোলে ট্রেনটা হবে। তাও রোজদিন হয়না। দৌড়োতে হয়। টিকিট কাউন্টারের ভেতর দিয়ে, স্টেশনঘরের পাশ দিয়ে, ওভার ব্রিজকে এড়িয়ে, আড়াআড়ি পাতা লাইনগুলোকে টপকাতে টপকাতে তাঁদের হিসেব করতে হয়, মায়ের ওষুধ, বাবার কাজ, অফিসের ঝঞ্ঝা বা কলেজের পরীক্ষা…আর মনে পড়ে ক্লাস সেভেনে ধীরেনবাবু সরল শিখিয়েছিলেন। একটা ট্রেন স্টেশনে থামার আগে ১২ বার ব্রেক কষে। শেষেরটাই মোক্ষম।।
২)গোলক:
যাচ্ছ সিধে, খাচ্ছ ছবি, উঁচু
সাগর পাড়ে বসিয়েছিলে দাঁড়ি।
আড়ে বেড়েছ।
জানো কী?
তোমায় —
আমি কিন্তু
গোলক বলতে পারি।।
৩)অনুরণন:
আলোকবস্তু কঠিনবস্তু
জ্বর-ঘোর তামাদি হয়েছে
মাতৃগর্ভ, আমার প্রাচীন বাস্তু
তামাদি হয়েছে তাও
তাও, বসে থাকা
তাও, মহাপাপ
ও,
আলোকবস্তু আর কঠিনবস্তু
ও,
জ্বর-ঘোর
ফিরিয়ে দিয়ে যেও আমার
আলোচোখ, ধুলোচোখ, স্রোত মুখ
জেনো, ঠিক সাড়ে আট মিনিটই
লেগেছে প্রসবে!
৪)বিদ্যুৎ:
তোমাকে লিখতে হয় বলেই লিখি
নইলে বিদ্যুৎ
ওই উল্টো বওয়া আমারও অজানা নয়।
ছিঁড়ে ফেলতে পারি সমস্ত শেকল।
যেদিকে জীবন বয়ে যায়
বয়ে যাই বিপথে, তার বিপথে।
৫)জন্ম ১
কীভাবে ছুটে এসেছ, জানি।
কীভাবে ছুটে বেরিয়ে গেলে,
যেমন ছুটে এসেছে, শিশু
মাতৃগর্ভে, পিতৃগর্ভে, মাটি
যেমন ছুটে এসেছ তুমি, গ্লানি
সেই অমোঘ ঘূর্ণনে
সেই আদিম ঘূর্ণনে।।
৬)জন্ম ২
অক্ষিগোলক — গোল, খয়েরি
ঘুরছে আর ঘুরছে
ঘুরতে ঘুরতে এগিয়ে চলেছে
নিঃসীম আঁধার, অন্ধকার ঘূর্ণন ।
যেভাবে আমি লিখছি এখন,
তুমি মুখ তুলে দেখছ শেষ সূর্য
পৃথিবীর চবুতরায় কেউ
সাদা হাতে পায়রা ওড়াচ্ছে বিকেলে।
অক্ষিগোলক — তীব্র, মায়াবি।
ব্রহ্মাণ্ড — বঢ়তা বচ্চা হ্যায় জনাব ।।