অজিত সিং বনাম অজিত সিং <br />  পর্ব ৫৪ <br /> তৃষ্ণা বসাক

অজিত সিং বনাম অজিত সিং
পর্ব ৫৪
তৃষ্ণা বসাক

৫৪

শাস্ত্রীজী সকালেই ওকে বলেছিল স্পেশাল যজ্ঞ করবে। খুব
গোপন ব্যাপার। সেইসময় কাউকে যেন না ঢুকতে দেয়
গগন। গগন প্রথমে বুঝতে পারেনি শাস্ত্রীজী কী বলছে।
এরকম অনেক সময় হয় তার। কিছু বুঝতে অনেক সময়

লেগে যায়। এমনকি চোখের সামনে অনেক কিছু ঘটলেও
বুঝতে পারে না ঠিক। ছবি অনেক পরে মানে তৈরি করে
তার মাথায়। এসব তো জানেই শাস্ত্রীজী। তবু ঠাস করে
চড় বসিয়ে দিল ওর গালে। আচমকা মার, খুব জোরে
লাগল। দেওয়াল ধরে না ফেললে পড়েই যেত গগন। আর
দেওয়াল ধরতে ধরতে ও বুঝতে পারল গায়ে কী অসম্ভব
জোর এই লোকটার। যেন একটা রাক্ষস।
ওর যে লেগেছে তা খেয়ালও করল না লোকটা। কেনই
বা করবে? কথায় কথায় ও তো শোনায়, তার জন্যেই
খেয়ে পরে রাজার হালে আছে সে, কল ঘোরালেই জল,
পাখার তলায় ঘুমোচ্ছে, ভবানী না থাকলে গগনকে পেছনে
লাথি মেরে তাড়িয়ে দিত এই মন্দির অথরিটি।

চড়টা ঠিক গালে লাগেনি, মুখ সরাতে গিয়ে লেগেছে কান
আর মাথার মধ্যিখানে। গগন উঠতে উঠতে বুঝল ওর
মাথা এখনো ঝিমঝিম করছে। ঘরের একপাশে একটা
ছোট তক্তপোশ আছে, তার ওপর একটা জলচৌকি।
ভবানী বেশিরভাগ সময়েই ওখানে কাগজপত্র রেখে কাজ
করেন। চেয়ার টেবিল থাকলেও সেখানে খুব কম বসতে
দেখেছে। গগন দেখল ভবানী ওখানে বসে দিব্যি কাজ
করতে শুরু করেছেন। তার যে এত লেগেছে কিছুই এসে
যায় না এতে। গগনের আজ অনেকদিন পর মার জন্যে
খুব মন কেমন করল। মা থাকতে কি তাকে মারতে
পেরেছে এই বদমাইশ লোকটা? মা তাকে আঁচলের আড়াল

করে রাখত। মা, মা , মার কী যেন একটা কথা, কথা
না একটা ছবি, তার মনে পড়ছে না একটুও, মাথায়
ব্যথা শুরু হল মনে করার চেষ্টায়। চুপচাপ উঠে নিজের
ঘরে চলে এল গগন। মন্দিরের পেছন দিকে একটা ছোট্ট
খুপরি ঘর, এখানে মা আর সে থাকত। মা মারা যাবার
পরেও এ ঘর কেন যে কেউ দখল করেনি, তা নিয়ে
কোন প্রশ্ন জাগেনি গগনের মনে।তার মাথা অত ভাবতে
পারে না, ভাবতে গেলে আরও গুলিয়ে যায় সব। মাঝে
মাঝে শুধু এক একটা ছবি ঝলসে ওঠে তার মনের
মধ্যে। আজ ঘরে ঢুকতে ঢুকতে সে হঠাৎ দেখতে পেল
ঘরটার জায়গায় একটা মস্ত বাড়ি দাঁড়িয়ে। ওই যে
বাড়িগুলো কুড়ি তলা, তিরিশ তলা, যাদের দিকে তাকাতে
গেলে ঘাড়ে ব্যথা হয়ে যায় গগনের। তাহলে কি এই
মন্দির ভেঙে ওইরকম বাড়ি হবে? নইলে সে হঠাৎ এটা
দেখবে কেন? সেই জন্যেই কি আপাতত ওকে তাড়াচ্ছে
না? তাড়িয়ে দিলে কি শাস্ত্রীজী কি তাকে বাঁচাতে
পারবে? আরে দূর, ওসব বাড়ি হলে গগন থাকবে
থোড়াই? সে চলে যাবে। মা বলত, ‘একা মানুষের
আবার পেটের চিন্তা! এই তোর জন্যি এখানে পড়ে আছি
গগন। নইলে কবে নাতি মেরে চলে যেতাম। আমি চলে
গেলে তুইও এখানে থাকিস না মোটে। আমি বলেছি তোকে
দেখতে। কিন্তু দেখবে না মোটে। ওপর থেকে সেই দেখে
কষ্ট পাব আমি।কিন্তু তোকে দেখবে না কেন বল? কেন

? রক্ত কি কিছু না? রক্ত? এই সরিলটা বুঝলি গগন,
এই সরিলটা’
নিজের বুকে গগনের হাত টেনে কিছু বলতে চেয়েছিল মা।
কিন্তু গগন তো পাগল ছাগল, বোঝে নি কিছু। আজ
মনে হচ্ছে এই কথাগুলোর একটা মানে ছিল। এই যে
সরিল, রক্ত। রক্ত মনে হতেই গগনের অদ্ভুত ভাবে
শাস্ত্রীজীর কথা মনে পড়ল। শাস্ত্রীজী মন্দিরে এসেই রক্ত
রঙের ধুতি আর পাঞ্জাবি পরে নেয়। আর যখন যজ্ঞ
করে তখন মাথাতেও একটা রক্তলাল কাপড় পাগড়ির
মতো করে বেঁধে নেয়। ছবিটা মনে আসতে কেন যে গা
শিউরে উঠল তার? আর আজ কেন এত ছবি মনের
মধ্যে খেলছে? আজ কি একটা বিশেষ দিন? আজ কি মা
খুশি হচ্ছে ওপর থেকে দেখে? যে তার ছেলের মাথায়
একটু একটু বুদ্ধি গজাচ্ছে? বুদ্ধি যে গজাচ্ছে সেটা তো
বোঝা যাচ্ছে তার শরীরের মধ্যে এত রাগ হচ্ছে দেখে।
আগেও তো মেরেছে শাস্ত্রীজী , এত রাগ কোনদিন হয়নি
তো।

ঘরে এসে মেঝেতে বসে পড়ে গগন। খোলা জানলা দিয়ে
ফাল্গুন সকালের হাওয়া দেয়। দোল আসছে না সামনে?
হাওয়ায় কেমন আবিরের গন্ধ পেল গগন। কাল মন্দিরে
সেভাবে কোন ঘটাপটা হয় না দোলে। ওসব কৃষ্ণ রাধার
ব্যাপার নাকি। অত বোঝে না গগন। তার ইচ্ছে করে
এর বাইরে বেরিয়ে সবার সঙ্গে রং খেলে।

কিন্তু কোনদিনই সে রং খেলতে যেতে পারে না। তাকে
কোন না কোন অজুহাতে আটকে দেয় কেউ। সবার কাছ
থেকে পালালেও গেটের দারোয়ান তাকে যেতে দেয় না
কিছুতেই। বলে ‘পাগল ছাগল ছেলে, তাল হুঁশ নেই,
কোথায় গাড়ি চাপা পড়বি, আর আমি পাতক হব।তোর
মায়ের কাছে আমি অপরাধী হব। কী যে অভাগী
মেয়েটা। ছেলের বাপের এত পয়সা, কিন্তু ছেলেটা
ভিখিরির মতো ঘুরে বেড়ায়। চিকিৎসা করলে এ পাগল
কবে ভালো হয়ে যেত, করাবে না।’
ছেলের বাপের পয়সা! তার মানে তার বাপের? কিন্তু সে
তো জানে তার বাপ ভারি গরিব ছিল, কবে কোন কালে
মারা গেছে। তাহলে সে চিকিৎসা করায়নি, এমন কথা
উঠছেই বা কোথা থেকে। কী যে সব বলে সবাই। গুলিয়ে
যায়। মেঝেতে গড়াগড়ি দেয় গগন, হাততালি দিয়ে একটা
গান গায়। মা গাইত
‘মা গো আনন্দময়ী নিরানন্দ করো না’
মা খুব ভালো গাইত। গগন কিচ্ছু পারে না, গোল্লা। সে
ওই একটা লাইনই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে গায়। গাইতে গাইতে
এই খুপরি ঘরটাও তার ভালো লাগে। এই ঘরটাও থাকবে
না তার?
খুবই খারাপ ঘর, মেঝের চলটা ওঠা, দেওয়ালের বালি
খসে খসে পড়ছে, ভালর মধ্যে ঘরটা একদম একটেরে,
একটা জানলা আছে, সে জানলা খুললে উঠোনের
ফুলগাছ চোখে পড়ে। এই ঘরটাতে সে আর মা থাকত।

রাতে সে এখানে আসে শুতে, সারাদিন ফাইফরমাশ খেটে
আর সময় পায় না। এমনিতে তার কাজ করতে একটু
বেশিই সময় লাগে। তা কেউ বোঝে না। তার কোন
ত্রুটি দেখলে যেন মারমুখী হয়ে ওঠে ভবানী। দু এক ঘা
কষিয়ে দিয়ে বলে ‘কানা খোঁড়ার দশ গুণ বাড়া’
এই কথাটা মনে পড়ে ভয়ঙ্কর রাগ হল তার। এত রাগ
সে শরীরে ধরতে পারছে না যেন।আজ তার এত রাগ
হচ্ছে কেন? এত ছবিই বা মনে ভেসে ভেসে উঠছে
কেন? মার মুখে শুনেছে বছর বছর নাকি ষাঁড়াষাঁড়ির
বান আসে। তখন গলিঘুঁজির নালা নর্দমাও গঙ্গা হয়ে
যায়, চারদিকে থই থই জল। সেইরকম, সে যে পাগল
ছাগল গগন, তার মনেও কি ষাঁড়াষাঁড়ির বান ডেকেছে?
বন্যার জলের মতো পুরনো ছবি এসে তার মনের ছোট্ট
পুকুর উপচে পড়ছে। এত কথা তার এই অশক্ত,
অপরিণত মন ধরতে পারছে না। তাই বেশি বেশি করে
মার কথা মনে পড়ছে আজ। মা থাকলে এসবের মানে
জিগ্যেস করতে পারত। মা ঠিক বলে দিত। হঠাৎ তার
চোখে পড়ল আয়নায় পাট পাট করা শাড়ি মার। একটা
সবুজ আর গোলাপী ডুরে শাড়ি দেখে তার মাথায় যেন
কী ঝনঝন করে উঠল। চোখের সামনে দুলে দুলে উঠল
এই শাড়ি মেঝেতে ছুঁড়ে ফেলছে ভবানী। বলছে
‘তাড়াতাড়ি কর, সব কিছুর একটা সময় ক্ষণ থাকে,
পেটে কালির জল থাকলে তো বুঝবি’

মেঝতে বসে থাকতে থাকতে শুনতে পেল শাস্ত্রীজী ডাকছে
‘গগন, গগন, এই হারামজাদা, বেদীটা ঠিক করে দিয়ে
যা’
বেদীটা ঠিক করে দেওয়ার মধ্যে ঝামেলার কিছু নেই।
এখন তো রেডিমেড বেদী কিনতে পাওয়া যায়,
আয়তাকার চৌকির মতো, তামার। তার ওপর বালি আর
যজ্ঞের কাঠ সাজানোর কায়দাটা গগন জানে। তারও
আগের কাজ অবশ্য মেঝে মুছে রাখা। পান কলা, ফুল
দুর্বা সব- পুষ্পপাত্রে রেডি রাখা।এসব বসে বসে সাজানো
গোছানোর কাজ বেশ পারে গগন। মার কাছে বসে বসে
দেখত তো। মালা গাঁথা, শাঁখ বাজানো, এমনকি আলপনা
দিতেও বেশ পারে সে। বসে বসে একটা চকখড়ি দিয়ে
মেঝেতে নানান ফুল পাতা আঁকছিল সে। তার আর মার
আল্পনার তফাত আছে। মার ছবিগুলো কেমন কলকা
করা, যেমন হয় সবার আল্পনায়, কিন্তু গগনেরগুলো
কেমন উদ্ভট, এইসব ফুল শুধু তার মনের বাগানেই
জন্মায় যেন। গগন ফুল আঁকল, পান আঁকল, কলা
আঁকল, যজ্ঞবেদী আঁকল। আঁকতে আঁকতে তার মনের
দুঃখ কেটে যাচ্ছিল। বেদীতে আঁকল গনগনে আগুনের
শিখা। আগুনের শিখাগুলো যেন তার বুকের সব ঘর
আলো আলো করে দিচ্ছিল। হঠাৎ মায়ের একটা কথা মনে
পড়ল। মা প্রায় বলত, ‘সারাজীবন আগুন তাপে
ঝলসানো, বুঝলি গগন। তোকে আর কী বলব বল?
হাবাগোবা ছেলে তুই। মা কালী যাও একটা ছেলে দিলেন,

তাও এমন হাবা। আর দেখ তোকে নিয়েই যেন দিনরাত
ঝলসাপড়া হয়ে যাচ্ছি। চোখের সামনে বাপ ঘুরছে, ছেলে
তবু বাপ বলে ডাকতে পারবে না। তাহলেই মা বেটার
গলা টিপে দেবে। আবার বলবে, সবই কর্মফল রে
গোলাপি, মা কালীর বিধান, মানতে পারলে একদিন তোর
সুখ হবে। সব কিছু আগে থেকে ঠিক হয়ে আছে রে।
নইলে দেখ, ছেলে একটা হল, কিন্তু এইরকম না দেবায় ,
না ধর্মায়। আমি কী বললাম জানিস, গগন, তোমার দেব
ধর্ম ওসব শুনে আমার লাভ নেই কো, মায়ের ছেলে
মায়ের কোল জুড়ে থাক, বাবার আদর না পেল, কিন্তু
যদি ওপর থেকে দেখি আমার ছেলের অযত্ন অবহেলা,
তবে অভিশাপ দিচ্ছি, তুমি নরকের আগুনে পুড়ে মরবে,
পাপ করলে কারো রেহাই নেই।’
নরকের আগুন কেমন হয়? ভাবছিল গগন। সে ভেবে
ভেবে একটা নরকের ছবি আঁকল। মাঝখানে যজ্ঞবেদী
যেমন আছে থাক, ও চারদিক ঘিরে ঘিরে আগুনের বেড়া
আঁকল। আগুন নাচতে নাচতে এগিয়ে যাবে মাঝখানে,
যেন রাসমঞ্চ ঘিরে ষোলহাজার গোপিনীর নাচ।বাবার
আদর, বাবার আদর। খলখল করে হাসে গগন। ছেলেও
তো বাবাকে আদর করতে পারে, নাকি?
আবার একটা ছবি, জল থেকে কালীয় নাগের মতো হুশ
করে ভেসে উঠছে। শাস্ত্রীজীর পায়ে তেল মাখিয়ে দিচ্ছে
মা, গোলাপি। খিদে পেয়েছে বলে ‘মা, ও মা’ ডাকতে
ডাকতে দরজা ঠেলে খুলে দেয় গগন, ওকে দেখে বিরক্ত

গলায় শাস্ত্রী বলে ‘ তোর পাগলাচোদা ছেলে কে এবার
জুতোব, বেমক্কা এসে হাজির হয় খালি’ মা আস্তব্যস্ত হয়ে
শাড়ি পরে নিচ্ছে, আর বলছে ‘অমন করে বলুনি, পাপ
হবে, তোমারও কি ছেলে নয়?’
তোমারও কি ছেলে নয়? তোমারও কি ছেলে নয়? পেটা
ঘড়ির মতো ঢং ঢং করে বাজতে থাকে মাথায়। যন্ত্রণায়
মাথা চেপে ধরে গগন। আবার সুখ হয় তার, চরম সুখ।
‘গগন গগন’ ভারিক্কি, রাগ রাগ গলায় ডাকছে শাস্ত্রীজী।
একবার ভাবে যাবেই না, সাড়াই দেবে না ওর ডাকে।
অমনি তার চোখে পড়ে মেঝে জুড়ে আঁকাগুলো। আগুন
যেন ষোলহাজার সখির মতো নাচি নাচি ঘিরি ঘিরি
করছে।
সে উঠে পড়ে, উঠতে গিয়ে তার চোখে পড়ে তক্তপোশের
নিচে একটা কেরোসিনের বোতল, মা থাকতে এটা দিয়ে
মেঝে মুছত, অনেকদিন এর ব্যবহার নেই কোন। কী
কড়া গন্ধ কেরোসিনের। এদিক ওদিক তাকিয়ে কী যেন
খোঁজে গগন। তাকাতে তাকাতে খাটের তলাতেই একটা
অগুরুর শিশি পায়। কালী মার কাজ করত গোলাপি,
সেখান থেকে হয়তো আনত এগুলো। মেলা জমা হত তো
ওখানে। এর গন্ধটা আরও কড়া, নাকে টেনে দেখল
গগন। সে একটা ছোট পেপসির বোতলে মাপ করে
মেশাল দুটো, তারপর কোঁচড়ে নিয়ে বেরিয়ে গেল।
ভবানী অন্য চেম্বারে ছিলেন এতক্ষণ। এসে গগনের কাজ
দেখে খুশি হলেন। পাগল ছাগল হলেও কাজ বেশ গুছিয়ে

করে ছেলেটা। আজ তিনি অল্প ফল খেয়ে আছেন, একটা
কলা ধরিয়ে দিলেন গগনের হাতে।
‘কাছাকাছি থাকিস। দরকারে যেন পাই’
গগন একগাল হেসে বলল ‘দোরের সামনেই বসে থাকব
গো। এত বড় কাজ একটা। ঘুরতি গেলি চলবে?
ভবানী একটু চেয়ে দেখলেন ওর দিকে। একটু কি চিনচিন
করে উঠল ভেতরটা? ছেলেই হল যখন, সুস্থ স্বাভাবিক
হতে কী হয়েছিল? তবে তাঁর তো ক্ষেত্রাক্ষেত্র জ্ঞান আছে,
সবই যে আগে থেকে ঠিক হয়ে আছে, তা কি তিনি
জানেন না? নইলে ওর মা গোলাপির কি এত ভাগ্য হয়
যে তাঁর শয্যায় জায়গা পায় আর তার পেটে ছেলে
আসে? জানতে পেরে ভেবেছিলেন, ওকে বাস রাস্তায় ফেলে
দেন গাড়ির তলায়, কিন্তু যৌবন তো নেই ততদিনে, সেই
বহু আগে মনিকা বউদির সঙ্গে যা করেছিলেন, তা করতে
আর পারেন না। পৃথিবীটায় মায়া বসে গেছে কিছু।
তাছাড়া ইচ্ছে তো হয় নিজের শরীর থেকে একটা ছেলে
পাওয়া যায় কিনা দেখতে। মোহর তো ছেলে দিতে পারল
না। তবে যাকে দিয়েছে, তাকে দিয়ে তাঁর অনেক বড়
কাজ সিদ্ধ হবে। এর জন্যে বহু বছর ধরে অপেক্ষা
করছেন তিনি। বাঘ যেমন ধৈর্য ধরে শিকারের জন্য ওত
পেতে থাকে। একটি প্রকৃত কুমারী সংসর্গ করে তিনি
হবেন অমর অজেয়। এর জন্যে তো সর্বত্র পোস্টার
ছড়িয়ে মোহরের মনোবল ভেঙে দিয়েছেন। শেষ পেরেক
পুঁতে দিয়েছেন বিঘ্নেশের ফ্ল্যাটে। আজ এই যজ্ঞ সেরে বাড়ি

ফিরবেন সোজা। মা মেয়েকে আজ তাঁর পায়ে পড়তেই
হবে।
দরজা ভেজিয়ে তিনি বেদীর সামনে বসেন আসনে। ঘরটা
আজ খুব যত্ন করে মুছেছে গগন, তবে এখনো একটু
ভেজা ভেজা ভাব। কিন্তু শুকোনোর জন্য আর একটুও
অপেক্ষা করা যাবে না। মহা লগ্ন বয়ে যাবে।
বেদীতে আহুতি দেবার সঙ্গে সঙ্গে দারুণ তেজে আগুন
জ্বলে ওঠে। আহা। সব শত্রুর শেষ হোক। মাথায় বাধা
লাল পাগড়ি দুলিয়ে তৃপ্তির হাসি হাসেন শাস্ত্রীজী। ধীরে
ধীরে মারণ উচাটন মন্ত্রের মধ্যে ডুবে যায় তাঁর চেতনা।
গগন কখন দরজা আলতো খুলে কী ছুঁড়ে দেয় খেয়াল
করেন না তিনি। চারপাশ কেমন উষ্ণ হয়ে ওঠে ।
আগুনের শিখা ঘিরে আসছে কেন? ভাঙ্গা গলায় চিৎকার
করেন ‘গগন গগন, আমাকে বাঁচা, সোনা মানিক গগন’
গগন তখন মহানন্দে হাঁটছে রাস্তা দিয়ে, এখানে একটা
দোকানে খুব ভালো দই পাওয়া যায়, সে আজ খাবে।

CATEGORIES
TAGS
Share This

COMMENTS

Wordpress (1)
  • comment-avatar
    Anindita Mandal 3 years

    গগনের সঙ্গে আমারও যেন শান্তি হচ্ছে। খুব সাধারণ মানুষের যেমন ইচ্ছে পূরণ হলে শান্তি হয়। অপেক্ষা করব পরবর্তী পর্বের।

  • demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes