
পার্থজিৎ চন্দ-র কবিতা
ধারণা
বারুদ-কদমগাছ
তিরিশ বছর আগে হেমন্তবিকেলে
এক ফাঁকা মাঠে পুঁতে রাখা হয়েছিল
কে আগুন দিয়েছে
আজ আর মনে নেই
শুধু তাকিয়ে দেখেছি
বারুদ-কদমফুলের দিকে আগুন এগিয়ে চলেছে,
ডালপালা মেলে সর্বাঙ্গে আগুন নিয়ে
জ্বলে আছে গাছ
দূরে হিম ঢেকে ফেলছে চরাচর
তিরিশ বছর ধরে ওই বারুদ-কদমগাছ
আর হিম-সন্ধ্যার ভেতর দিয়ে
এক অস্পষ্ট ব্রহ্মাণ্ড ধারণা
তৈরি হচ্ছে আমার ভেতর
পাখি
সে দুটি যমজ হ্রদ
যেন দুই অন্ধ বোন ঘুমিয়ে রয়েছে দূরে
হ্রদ থেকে অবিরাম ধোঁয়া ওঠে
ধোঁয়া ধীরে ধীরে পাখির শরীর ধরে
একটি সফেদ পাখি, পরিযায়ী, সেই কবে থেকে
এক হ্রদ থেকে আরেক হ্রদের দিকে
উড়েই চলেছে
সন্ধ্যামণি ফুল, সন্ধ্যামণি তারা আর
একটি বালক
যাবার সময় পাখি দেখেছিল
ফুটে থাকা ফুল, ফুটে থাকা সন্ধ্যামণি তারা
বালকের অপেক্ষায় রয়েছে
ফেরার সময় সে হয়তো দেখবে
বালক দাঁড়িয়ে রয়েছে একা
ভাবছে কখন ফুটবে প্রথমবার তার
সন্ধ্যামণি ফুল আর সন্ধ্যামণি তারা
তুমি
বুকে কান পেতে ধুকপুক শব্দ শুনেছ
ওই করিডোরে নিয়তি-সিস্টার
হেঁটমুণ্ড ঊর্ধ্বপদ করে প্রহার করবে
নরম চামড়া মুহূর্তে লালাভ হবে
এ পৃথিবী প্রসূতিসদন
কেঁপে উঠবে কান্নায়
তারপর অবশ্য ফেরাবে তোমার হাতে
কান পেতে তুমি আবার শুনবে
কীভাবে কান্না গুমরে ঘুরেছে বুকের ভেতর