পার্থজিৎ চন্দ-এর কবিতা

পার্থজিৎ চন্দ-এর কবিতা

মহাবিহার

মহাবিহারের স্তুপ… ধ্বংসপ্রাপ্ত… যে আগুন ঢুকেছিল মাটির ভেতর
এ সন্ধেবেলা লীনতাপের মতো বেরিয়ে আসছে
স্তব্ধ জলাশয়, স্তব্ধ জারুল। যদি ছায়াকেই বিশ্বাস করো
তবে মেনে নাও ও এক উভলিঙ্গ ময়ূর। জল ও তৃষ্ণার মধ্যে
সম্পর্ক তৈরি হতে কোটি কোটি বছরের প্রহর লেগেছে
সে প্রাণের বয়সি। দুটি যমজ সন্তান কেউ ফেলে রেখে গিয়েছিল
মহাবিহারের প্রকাণ্ড উঠোনে… (মিথ অনুসারে) তাদের অস্ফূট কান্নার শব্দ
মাঝে মাঝে পাক দিয়ে ঘোরে। উভলিঙ্গ ময়ূর তাদের জন্য
ঠোঁটে ধরে নিয়ে আসে ছটফটে সাপের বাচ্চা
(পুনর্বার মিথ) ময়ূরের পেটের ভেতর সারারাত ঝকঝক করে একটি শ্যামল
সবুজ পাথর

সে আলোই ভাঙা সিঁড়ি বেয়ে উঠে আসছে। উঠে আসছে
লুপ্ত গ্রন্থাগারের দিকে। অবলুপ্ত সব শিলালেখ
শুধু এক উভলিঙ্গ ময়ূর কাঁদছে কখনও কখনও
স্তুপের ভেতর এতদিন পর নানারি ও মনাস্ট্রির মিমাংসাহীন সংশয়

তারও ভেতর পুড়ে যাওয়া অগ্নিসত্র… ছোট্ট প্রদীপ জ্বলেছে

স্বপ্ন

কেন যে এসব স্বপ্ন আসে, সমুদ্রসমান
প্রতিবার আমলকি-বনে জিভ বার করে অঘোরে ঝিমায়
বুনো-কুকুরের ছায়া। বন্দুক নামানো শিকারি-শরীর

দুপুরের আলো নাচতে নাচতে চলে যাচ্ছে অতলের দিকে

আর এক ডুবোজাহাজের মুখ নিঃশব্দে চলেছে
ভিতরে একটি নয়নতারার গাছ, একটি মাত্র ফুল
তুমি তার পাশে বসে অতি-মনোযোগী
পড়ছো রমেন্দ্রকুমার

CATEGORIES
TAGS
Share This

COMMENTS

Wordpress (2)
  • comment-avatar
    Shyamal Majumdar 11 months

    দূর্দান্ত লেখা

  • comment-avatar
    Rajesh Ganguly 11 months

    আপনার কবিতা এমন এক অবিশ্বাস্য মানসাঙ্কের অভিজ্ঞান, যেখানে প্রথাগতর ছুটি আর আনকোরা বন্দিশে মূর্ছনার ঢেউ ছুঁয়ে যায় সব বন্ধ্যা নদীকে, স্রোতস্বলা হওয়ার সে তিথিই শব্দের আঙ্গিকে আলপথ দিয়ে হেঁটে চলে যায়। পার্থজিৎ বাবু, আপনার কবিতা সেই মেধাছাপে ভাস্বর হয়ে থাকে, যা বাংলা কবিতা থেকে বহুদিন হল অপহৃত হয়ে গেছে। রূপকের এই অতুলনীয় ও সহজলভ্য না হওয়ার অনাস্বাদিত স্বাদে প্রতি পাঠ থেকে পৃথক হয়ে যায় শীতঘুম দশা, অমিতলাবণ্যে ভরে ওঠে অন্তরের অবয়বে ঐশী আশনাই।