
অনির্বাণ কুণ্ডু
শোষণ
ওর চেয়েও বড় শোষণ কি আর কিছু আছে?
যেমন রাতের আকাশের তারা খসলে তার প্রান্ত ধরে ছুটে যায় আলোর দাগ,
তেমনিই কেউ কি অনুসারী আছে, মোহময়
যে কোনো পরাজয় নির্ভার হয়ে যায়,
ঠিকানা ছিলো যার সঞ্চরণশীল মেঘেদের মতোই অনিশ্চিত,
নিশির ডাকের মতই অপ্রতিরোধ্য মাঝরাতে,
দুর্বোধ্য গতিবিধি নিয়ে স্বর্গ আর নরকের মাঝে নিত্য চলাচল,
শোষণ করে প্রাণ মন শোষণ করে নেয় যাবতীয় উত্তাপ,
আচ্ছা, মনটুকু শুষে নিলে শরীর কি উন্মাদ হয়?
আর যদি শরীর শোষণ করে মাটিতে পুঁতে দেওয়া জল?
সব কিছু জেনে বুঝে এইখানে ফিরে আসা,
ইচ্ছাকৃত এই ভুল বারবার সকলেই ভালবেসে করে
সন্দেহে দোলাচলে বিক্ষত হতে হতে যদিও বা হয়ে যায় জয়,
অনুভূতি বলে গেছে, সুখের এ সংগ্রামে আছে শুধু হারাবার ভয় !
একাকীত্বের শব্দ
জানলার শীতল কাঁচের গায়ে রাত্রির নিঃশ্বাস বাষ্পের আদর বুলিয়ে গেছে,
ধুমল বাষ্পের গায়ে যে আঙুল খেলা করে লিখেছিল, “ভালোবাসা নিও”, সেই আঙুলগুলো
তোমার ঠোঁট, তোমার শরীরের কোণায় কোণায় আবিষ্কারের অভিযান চালিয়ে, সারারাত খেলা করে এখন নিথর বিশ্রামে,…
খারাপ হয়ে যাওয়া কলের থেকে বিন্দু বিন্দু জল
পরিপূর্ণ বালতির জলে পড়েছে, একক শব্দের মূর্চ্ছনা রচনা করে চলেছে সারা রাত,
কত প্রশ্ন করার ছিলো, অনুচ্চারিত থেকে গেল
আজও,
উত্তাল ঝড় এসে বারে বারে কেড়ে নিয়ে গেছে
মুখের ভাষা, শুধু নিজেই গর্জে উঠবে বলে,
ওষ্ঠকে আলপনা শিখিয়েছে যে রাত্রিগুলো,
তারা শুধু শ্বাসবায়ু গুনে গেছে,…স্নানঘরে সারারাত অশরীরী অস্তিত্বে যারা ছিল জেগে, বাইরে আসেনি তারা, খুঁজে পায়নি ইহলোকের প্রবেশপথ,
তাই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, শুধু ইশারায় জানান দিয়েছে ওরা প্রহরী হয়ে ছিলো,
আর বলে গেছে,
এই ঘরে তোমার অপেক্ষায় থাকবো প্রতিরাতে,
আর চেনাবো তোমায়, শব্দহীনতাও কত শ্রুতিমধুর
হতে পারে!