
সঞ্চিতা বসু
সনজীদা খাতুন, সম্মাননীয়াসু
ফেসবুক স্ক্রল করতে করতে চোখ টেনে নেন, দুই শিক্ষিকা
দুজনেই গান শেখাচ্ছেন আর গানের অর্থ ক্রমিক স্পষ্ট।
চোখ বুজলেই চিত্রকল্প! জাল বুনছেন সুর-তাল দিয়ে।
কীভাবে গানকে পড়তে শিখব, কোথায় কতটা শ্বাস নিতে হবে —
সুরের আড়ালে কথার অর্থ মর্মে গাঁথছে খুব ধীরে ধীরে।
বলিষ্ঠ ভাবে শেখাচ্ছেন আর মাঝে মাঝে থেমে ভুল ধরে দেন
লাল নকশার ক্রিম রঙা শাড়ি। পাশে সহযোগী হাল্কা সবুজ।
কোরাসে এবার রবীন্দ্রনাথ ফুটে উঠছেন যথাযথ খুব
এস্রাজ ঠিক সঙ্গত করে, তবলাও বোল ধরে একতাল
আমার মতন মূর্খকে গান বুঝিয়ে ছাড়েন গুরু ও শিষ্য।
ছাত্রবয়সে তাঁর লেখা পড়ে শিখতাম, ধ্বনি — ধারণক্ষমতা
কীভাবে কতটা রবীন্দ্রনাথ, কবিতার ধ্বনি, ধ্বনির কবিতা।
‘আমার যা আছে’ তার কিছু দিতে পারতাম কিনা ভাবতে ভাবতে —
হারমোনিয়ামে বেলো ছেড়ে দেন, লাল টিপ, সাদা চুল সনজীদা,
তাঁর পাশে বসে দেশ-সিন্ধুতে গাইছেন লাইসা আহমেদ লিসা।
দায়
ধূমল আলো ছিঁড়ে পাখিরা উড়ে গেলে
এপাশে নদী আর মধ্যে সারি সারি
গাছের মালা ঘেরা স্বচ্ছ নৌকারা
তখনও ভাসমান। দীর্ঘ তটরেখা
ধার্য করে দেয় যদিও সীমাহীন
বিকেল, পাততাড়ি গুটিয়ে জড়োসড়ো।
ভেতরে ভাঙাচোরা জীর্ণ ঘরবাড়ি,
ওপরে পরিপাটি মুখের অবয়ব
সাজিয়ে বসে থাকা। কিছু অবিকৃত
আবেগী চিহ্নরা ছড়ানো পালকের
শান্ত ইশারায় ঘুরছে বালিময়।
রে ব্যান সানগ্লাসে দুচোখ ঢাকা বটে
তবুও একথাটা বলাই বাতুলতা —
ব্যর্থ চেষ্টার দায় তোমার নয়।
নদী ও কষ্টরা হোঁচট খেতে খেতে
মিশছে বুদবুদে। চাঙড় ভাঙল বা
একটা দিক যেন পুরোই ধ্বসে গেল।
ভেতরে পোড়োবাড়ি। ফাটল চিরে চিরে
নতুন কচি ঘাস, বটের ছোটো চারা
বাতাসে দোল খেলে তুমিও দুলে ওঠো,
ভিবজিওর আলো। দায় তোমার নয়?