
অর্ণব বসু-র কবিতা
পূর্বস্মৃতি, মেঘ ও ছায়ার দস্তাবেজ
১.
স্মৃতি স্পর্শবিহীন,
চুপচাপ শুয়ে থাকা ঘুমের ভেতর ঘুম–
জলবিহীন, ঘুরপথে অদৃশ্য ব্যথা
কুসুমে বিভাজিত হাসি,
প্রাচীন কোনও প্রার্থনা খোদাই করে রাখা
ভাঙা এক পাথরের স্তব
২.
নক্ষত্রশিশুর কাছে হাত বাড়াই,
অবয়ব রক্তঘন, ছায়াহীন দাগ
দরজার গায়ে মৃত পাখির পালক, বিষাদচিহ্ন
অদৃশ্য ফুল ও তার গন্ধ–
এমন একটি দৃশ্যের ভেতরে আদৌ কোনও দৃশ্য নেই
একটি স্বপ্নের মৃত্যুচেতনা ছাড়া।
৩.
কালো ডানার ছায়ায় ঢেকে আছে আকাশ
পাতাহীন গাছেরা পুরোন বাগানে–
কিছুই আর স্থায়ী নয়,
বাতাসের ছেঁড়া হুইসেল সার্কাসশালার নির্জনতার মতো ভেসে আসে
দূরে এক অচেনা গাছের শিকড়ে
শব্দহীন গলে পড়ে শোক
৪.
স্মৃতি খুঁড়লে মাটির ভেতর থেকে উঠে আসে
জংধরা ঘড়ি,
যার কাঁটাগুলো স্থির হয়ে গেছে তোমার শীতল দেহে,
তারিখ কেটে কেটে বুকের জামা ক্রমশ ঢিলে হয়ে যায়,
আঙুলে লালচে দাগ, নিরুপায় মেঘ, সময়ের গোপন ক্ষত
৫.
সব আলো নিভে গেলে, আকাশ একদিন ফুরিয়ে যাবে
পৃথিবীর চাদরে লেগে থাকে নক্ষত্রের ছায়া
রক্ত-শূন্য দেহের ভেতরে জন্ম নিতে থাকা আরেক দেহ
ডুবতে ডুবতে পলি থেকে ভেসে ওঠে অন্ধকারে,
আলো কেবল চেতনার ভগ্ন আয়নায়
নীরব, ছায়াপথগামী–
বুকে জড়িয়ে গেছে