
শুদ্ধেন্দু চক্রবর্তীর গল্প
জয় মা তারা লটারি
রোজ সকালে সাতটা বাজতে না বাজতেই শিমুরালির এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে পৌঁছে যায় নন্দন। টেবিলে কাপড় এঁটে এক এক করে টিকিটগুলো সাজায়। বসবার টুল বলতে কাঠের বাক্স একটা। মোটামুটি মজবুত ধরা যায়। গেল দেড় বছরে ভাঙেনি মানে মজবুতই। ট্রেনে ডাকযোগে কীসব আসছিল। কিছু মাল বোধহয় শিমুরালিতে নামাবার ছিল। পোস্টালের লোকেরা জিনিস বের করে বাক্সগুলো স্টেশনেই ফেলে গিয়েছিল। তাদের থেকেই একটি বাক্স তুলে নিয়েছিল সে। সঙ্গের টেবিলটা রেলকলোনির ক্লাবের। ওই টেবিল আর স্টেশনে বসা বাবদ মাস গেলে বারোশো টাকা দিতে হয় তাকে। কাপড় মুড়ে টিকিট লাগাবার পর একটা বড় ইঁটের ওপর পঞ্জিকা রেখে তাতে হেলান দিয়ে মা তারার ফোটো রাখতে হয়। আগে ফোটোয় রোজ জবা ফুলের মালা দিত সে। আজকাল আর পারে না। জবার একশো আটের মালার দাম এখন পঞ্চাশ। প্রতিদিন পঞ্চাশ টাকা যাওয়া মানে মাসকাবারি পনেরো শো। লটারির টিকিট বেচে লাভ হয় সাকুল্যে হাজার তিনেক। তার ভিতর সাতাশ শো বেরিয়ে গেলে থাকবে কী! তাই আজকাল একটা দুটো খুচরো ফুল দিয়েই সারতে হয় কাজ। তারপর ধুপ। প্রতিটি টিকিটের ওপর একবার ধূপ বোলাবেই বোলাবে সে। কেন বোলাবে? এ প্রশ্ন নন্দন নিজেকে জিজ্ঞেস করেছে কতোবার! সে যে ভীষণ ঠাকুরভক্ত, এমন তো নয়! তাহলে? ওই যে, অভ্যাস! বাবা ধরিয়ে গেছে, এখন ছেলে ধরেছে। ধূপ বোলাতে বোলাতে নন্দন বিড়বিড় করে বলে, এ মাসে একটা বাম্পার দাও মা। প্রতিদিন বলে। আর তারপর সপ্তাহের শেষে লিস্ট বের হলে হিসেব মেলে না। যে কে সেই। সেদিন কষ্ট ভুলতে রাম খায় সে। সারা মাসের জমানো পয়সায়।
ধরাবাঁধা কয়েকটা খরিদ্দার নন্দনের। তাদের দোকানে আসার সময়টাও ধরাবাঁধা। নটা দশের ট্রেনে আসবে সমীরণ। সমীরণ কাছেই একটা ধিকধিক করে চলতে থাকা চটকলে কাজ করে। টিমটিম করে জ্বলছে তার সেই চাকরির ফিতে। সমীরণ প্রতিদিন ট্রেন থেকে নেমে চটকলে যাবার আগে সে একবার নন্দনের টেবিলে ঘুরে যায়। মা তারার ফোটোতে প্রণাম করে, তারপর বিড়বিড় করতে করতে লটারির টিকিটগুলো দেখতে থাকে। কখনও কখনও একটা টিকিট তুলে নেয়। বাণ্ডিল নিতে পারে না। টিকিট তোলার আগে গেল সপ্তাহের বিজেতাদের তালিকা দেখে সমীকরণ করতে থাকে। তারপর নন্দনকে টিকিটটা দেখিয়ে বলে,”এটা ভালো হবে?” নন্দন কী বলবে। ঘাড় নাড়ে শুধু। নিঝের লটারি যার কোনও দিন লাগল না, সে অন্যকে সাহায্য করবে কোন জোরে! বেল্আ এগারোটা আঠাশের ট্রেনে আসে যদু সামন্ত। এই অঞ্চলের রেশন ডিলার। ব্যারাকপুর থেকে আসে। যদু সামন্তর সঙ্গে কাছে থেকে কথা বলা যায় না। উগ্র জর্দার ঝাঁঝ। কিন্তু লোকটাকে নন্দন চটায় না। যে কয়েকজন নিয়মিত তার দোকান থেকে টিকিট নেয়, যদু সামন্ত তাদের মধ্যে একজন। এছাড়াও আরও জনা পাঁচ ছ জন আছে।রোজ আসে না।মাঝেসাঝে আসে, টিকিট কেনে। নন্দন তাদের নাম অতোটা মনে রাখতে পারে না।কিন্তু মুখ চেনে। আর আছে জয়ন্ত। ওর আসতে আসতে সেই বিকেল গড়িয়ে সন্ধাযা নেমে যাবে। পাঁচটা পঁয়ত্রিশের ট্রেন। স্টেশনে নেমে উদ্দেশ্যহীনভাবে বসে থাকবে বেঞ্চে। তারপর নন্দনের কাছে আসবে। প্রথম প্রথম নন্দন ভাবত ছেলেটা নেশা করে। কেমন ঘোলাটে চোখ, ধরাধরা গলা। পরে একদিন চরণদার চা দোকানে চা খাবার সময় বসন্তপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের হেডমাস্টারমশাইয়ের কাছে সে জানতে পারল জয়ন্ত চিরকাল এরকম ছিল না। মেধাবী ছাত্র, বসন্তপুর গ্রামের গর্ব, ইঞ্জিনিয়ারিংএ রাঙ্ক করে কলকাতা পাড়ি দিয়েছিল পড়বে বলে। কিন্তু তার পড়া শেষ করে চাকরির ইন্টারভিউতে গিয়ে জয়ন্ত আটকে গেল। তালিকায় নাম থাকতেও কারা যেন রাতারাতি সেই লিস্টটাই পালটে ফেলল। জয়ন্ত সে তালিকায় নেই। দুবার গলায় দড়ি দিতে গিয়েছিল। বেঁচে গেছে। শেষবার একটু বেশিক্ষণ ঝুলে থাকায় মস্তিষ্কে অক্সিজেন বেশিক্ষণ আটকে থাকায় কথা জরিয়ে গেছে। জয়ন্ত এখন স্টেশনে স্টেশনে ঘুরে বেড়ায়। আপন খেয়ালে কিশোরকুমারের গান করে। কেউ কেউ তার সেই গান শুনে দশ বিশ টাকা পকেটে গুঁজে দেয়। তারপর তাকে নিয়ে ভ্লগ করে। জয়ন্ত নন্দনের টেবিলে এসে মা তারার ছবির দিকে তাকিয়ে হাসে রোজ। নন্দন জানে ওর টিকিট কেনার পয়সা নেই। তুক্কা মেরে নিজে থেকেই একটা টিকিট কেটে দেয় ওকে। পয়সা নেয় না। এই বাধাধরা এই কটা খরিদ্দারের ভিতর একমাত্র জয়ন্তর জন্যই নন্দন প্রতিসপ্তাহে মন থেকে নম্বর খোঁজে। মন থেকে সে চায়, নিজে যেটা পায়নি, সেই নম্বরটা যেন জয়ন্ত পায়। জয়ন্তর লটারি লাগলে স্টেশনের সবকটা ভিখিরিকে বিরিয়ানি খাওয়াবে সে। এইসব ভাবে। কেন ভাবে,কে জানে? আসলে ভাবনার জন্য তো আর জ্যাকপট লাগে না!
আরও কতো কী এক সময় ভাবত নন্দন। জীবনটা লটারির মতো। কখন হুশ করে নম্বর মিলে যাবে। বাম্পার প্রাইজ। সিজন গ্রেটেস্ট। হঠাৎ শিমুরালি স্টেশনে নামবে সুলগ্না। এসে বলবে, “চলো, ঘরে চলো। কেস তুলে নিচ্ছি। আর খোরপোষ দিতে হবে না। চলো ঘর করব।” ভাবে আর ভাবে। ভাবতে ভাবতে রুমার মুখটা ভেসে ওঠে। সেই ছোট্ট রুমা। দুই বছর। ক’বছর হলো? সাত ?আট? নম্বরের মতোই বারবার রুমার বয়সটা গুলিয়ে যায় তার। তারপরই ধড়মড় করে উঠে পড়ে। সকাল হয়ে গেল আবার। আবার আর একটা দিন!
জয়ন্ত আজকাল স্টেশনের পিলারগুলোতে কী যেন লেখে চক দিয়ে। নন্দন বিএ পাশ করেছে। পড়াশোনা মন দিয়েই করত। বাবাটা অকালে না মরে গেলে শিয়োর আরেকটু ফাইট দিত। কিন্তু ওই যে, নম্বর না মেলার রোগ। তবু পেটের বিদ্যেটা মাঝেমাঝে টনটন করে ওঠে। কাছে গিয়ে দেখে, কীসব আঁকিবুকি কেটেছে জয়ন্ত।
-এই জয়ন্ত? কী লিখছিস?
জয়ন্ত ঘোলাটে চোখে তাকিয়ে বলে,’কলনবিদ্যা। কলন মানেই ফলন। ফলন মানেই ঝুলন। তোমার ঝুলন। আমার ঝুলন। কী বুঝলে?”
ধমক দেয় নন্দন।”কীসব আবোলতাবোল বকছিস? পুরো পেগলে গেলি?”
-একটা গর্ত।
-কীসের গর্ত?
-সময়ের। ওর লোকেশনটা বের করছি অঙ্ক করে।
-মানে?
-মানে এই যে তুই আর আমি। সব গর্তে সেঁধিয়ে গেছি। বেরোতে পারব না। কিন্তু গর্ত আরেকটু খুঁড়লেই…
-কী?
-আরেকটা শিমুরালি স্টেশন। সেখানে মিলে গেছে।
-কী?
-দুজনের নম্বর। তোর আর আমার। আমরা লটারি পেয়ে গেছি ব্রো। চিয়ারস।
নন্দন দেখে জয়ন্ত নিয়ন্ত্রণহীনভাবে হেসে চলেছে। হাসতে হাসতে মুখে ফেনা উঠছে তার। তবু হাসছে। হাসছেই। এই হাসিটা মৃগীরোগের মতো। ওষুধ খেতে হয়। জীবনের দাগা খাবার ওষুধ!
হাসি কখন কার জীবনে কখন অসুখ হয়ে আসে জানেন শুধু মা তারা। তারা মায়ের পৃথিবীর মতো চোখে হারিয়ে যেতে যেতে নন্দন হঠাৎ একদিন দেখল, তার সামনে যে দাঁড়িয়ে আছে, তাকে অবিকল সুলগ্নার মতো দেখতে। কটা বাজে? দুপুর বারোটা একুশ। এখন তো ট্রেন নেই। গাড়িতে এল? ওই শহরের অফিসের ভাতাড় বসের গাড়ি? নাকি নিজের? নিজেকেই নিজে খিস্তি মারে নন্দন। আর সুলগ্না বলে ওঠে,”চলো।”
-কোথায়?
-কথা আছে?
-কোর্টে হাজিরা তো সামনের মাসে। রুমা কেমন আছে? ওর কিছু হলো…
-রুমা ভালো আছে।
-তাহলে?
-বলব। এখন দোকান বন্ধ করে চলো আমার সঙ্গে। সব বলব।
স্টেশনের বাইরে একটা বড় সাদা গাড়ি দাঁড়িয়ে। প্লেটটা হলুদ। মানে ভাড়াগাড়ি। গাড়ির ড্যাশবোর্ডে মা তারার ছবি। নন্দন সুলগ্নার সঙ্গে পিছনের সিটে বসল। কতো বছর পর গাড়ি চড়ল নন্দন। সারা রাস্তা কোনও কথা বলল না সুলগ্না। কোর্ট তাকে রুমা আর সুলগ্নার সঙ্গে দেখা করতে বারণ করেছে। তার দোষ? খাতায় কলমে বধুনির্যাতন। খাতার বাইরে লটারির মাসকাবারি সাড়ে তিনহাজার।সুলগ্না আর পারছিল না। দম বন্ধ হয়ে আসছিল তার। তাই উড়ে গেছে। ভালোই করেছে।
-নামো।
-এখানে?
-হ্যাঁ।
এখানে এতো বড় একটা বাড়ি ছিল? এতো উঁচু? এই জায়গাটা কি অনেকটা দূরে? কতোক্ষণ গাড়িতে ছিল নন্দন? ভাবতে ভাবতেই হঠাৎ তার মনে পড়ে যায়। স্টেশনে টিকিটগুলো লক করে বিপিনদার কাছে রেখে এসেছে তো সে? আর তারা মায়ের ছবিটা?লিফ্ট উঠছে। পনেরো ষোলো সতেরো। তারপর টুঙ করে থেমে গেল।
-এসো।
লিফ্ট থেকে বেরিয়েই বড় দরজা। সুলগ্না চাবি বের করে খুলল। এটা সুলগ্নার বাড়ি! এতো বড় বাড়ি! ভিতরে কী রুমা আছে?
-না নেই।
-কে?
-রুমা। আমার মায়ের কাছে রেখে এসেছি।
সুলগ্না কি মনের কথা পড়তে পারছে তার? সেইজন্যই কি আজ এভাবে নিয়ে এল তাকে! লটারি লেগে গেছে তার। অবশেষে।
এই ফ্ল্যাটে সব বড়বড় ঘর। বড় বসার ঘর, শোবার ঘর, গোসলের ঘর। বসার ঘরের দেয়ালে একটা ফোটো। সুলগ্নার।কী সুন্দ দেখতে লাগছে।
-এসো।
সুলগ্না ডাকছে। নন্দন যেতেই সুলগ্না তাকে জরিয়ে ধরে বলল,”আজ থেকে তোমার ছুটি। আর টিকিট বেচতে হবে না।”
-সত্যিই? আমি কী স্বপ্ন দেখছি সুলগ্না?
-দেখো না। তাতে ক্ষতি কী?
সুলগ্না ক্রমশ ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। আলগা করে দিচ্ছে নন্দনকে। টেনে নিচ্ছে ভিতরে।তার ঠোঁটদুটো এতোগুলো বছর পর। নন্দন ট্রেনে উঠে পড়েছে। জানলার ধারের সীট।হু হু করে হাওয়া দিচ্ছে।নন্দন দুলছে। দুলছে।
-এসো।
নন্দন দেখল স্টেশনের পর স্টেশন পেরিয়ে যাচ্ছে। হু হু হাওয়া। কোথায় ছিলে এতোদিন তুমি? কেন ছেড়ে গেলে?
-নন্দন। তোমাকে রোজ রাতে চাই।পাই না। কতো চেয়েছি। মিস্টার দত্ত সব পারে। তুমি হতে পারে না নন্দন।
মিস্টার দত্ত? ভাতাড়ের নাম? সুলগ্নার ভাতাড়।কী পারে না? ওই বিছানাটা গোছাতে?
-দাগ লেগে গেল।
বলেই হঠাৎ বিছানার চাদরটা তুলে বাথরুমের দিকে দৌড়ে গেল নিরাভরণ সুলগ্না। সাবান নিয়ে ঘসতে লাগল ব্রাশ দিয়ে।
-দাগটা যদি না ওঠে?
-কী হবে?
-মেরে ফেলবে আমাকে? সন্দেহ করে খুব। এই দেখো।
নন্দন এতক্ষণে দেখল, সুলগ্নার পিঠে বেল্টের দাগ।রাস্কেল। বাস্টার্ড।
-কেন পড়ে আছো এখানে সুলগ্না?আমার সঙ্গে চলো।
-উঠে গেছে।
-কী?
-দাগটা।
তারপর খিলখিল করে হাসতে হাসতে নাইটি গলিয়ে নেয় সুলগ্না।
-তোমার সঙ্গে কোথায় যাব নন্দন? প্ল্যাটফর্মে? মিস্টির দত্ত রুমাকে দত্তক নেবে বলেছে। ইন্টারন্যাশানাল স্কুলে পড়ে ও। মাসে এক লাখটাকা মাইনে।পারবে তুমি?
খুট করে একটা আওয়াজ হল।
-ওই এল। পালাও। এক্ষুণি।
-কিন্তু।
-যাও।
এইসব বাড়িতে দুটো দরজা থাকে। এতক্ষণ নন্দন খেয়াল করেনি। একটা গর্তের দুটো প্রান্তের মতো। একটা বড়লোকদের, আর একটা ছোটলোকদের। মানে ওই চাকরবাকর, রান্নার লোক, ড্রাইভারদের জন্য ।নন্দন সেই দরজা দিয়ে পালাচ্ছিল। পালাতে গিয়ে দেখল, বড়লোকদের দরজা দিয়ে একজন টুকটুকে ফর্সা বয়স্ক লোক ঢুকছে। মিস্টার দত্ত! তাই হবে? নন্দন কোনও রকমে হাতড়ে গেল লিফটের কাছে। টুঙ করে থেমে গেল লিফ্টটা। তারপর চলতে শুরু করল। তিন দুই এক। নিচে নেমে সিকিউরিটি পেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ নন্দন ধুপ্ করে একটা শব্দ শুনতে পেল। যে টাওয়ারটা থেকে সে বেরিয়েছে, সেই টাওয়ারের নিচে লোক জড়ো হচ্ছে। কেন? তবে কি সুলগ্না? নন্দন দাঁড়ালো না। এখানে তো সিসিটিভি আছে! ওই সিকিউরিটিগুলো? যদি বলে দেয় সে এসেছিল। যদি বলে দেয় সেই আসলে…। একটা ট্রেন ধরতে হবে নন্দনকে। কোন ট্রেন, নন্দন সেটা জানে। রামপুরহাট এক্সপ্রেস। ধরতে হবে তাকে।
-এই দিকে গেলে তারাপীঠ?
-হ্যাঁ। সোজা হাঁটবেন। তিনশো কিলেমিটার।
এই তো নম্বরটা! জয় মা তারা। তিনশো। শেষ তিনটে নম্বর তিন শূন্য শূন্য। জ্যাকপট পেয়ে গেছে সে।
-ওটা নয়।
নন্দন দেখল তার সঙ্গে হাঁটছে জয়ন্ত। জয়ন্ত এখানে কোথা থেকে এল?
-আমি লোকেশানটা পেয়েই চলে এলাম। গর্তের এই পারে। এখানে নয়কে শূন্য দেখতে লাগে।
-তাহলে ওপারে গেলে নম্বরটা মিলে যাবে?
-হয়তো যাবে। আবার নাও যেতে পারে। কারণ এপারে শিমুরালি আর ওই পারের শিমুরালির মাঝখানে এক জোড়া রেললাইন আছে। সেখানে ঝম করে ট্রেন চলে এলেই বিপদ।
-তাহলে উপায়?
-উপায় টিকিটের ওপর ছেড়ে দিয়ে গর্ত খোঁজেন নন্দনবাবু।
জয়ন্ত হাসতে হাসতে হাঁটতে থাকে। আর হাওয়ায় আঁকিবুকি কেটে অঙ্ক কষে। নন্দন চোখ বুজে একবার মা তারার ছবি কল্পনা করতেই তার কানে বেজে উঠল একটা ঝঙ্কার।রুমা ডাকছে তাকে। “ও বাবা।প্লিজ এসো।আমাকে নিয়ে যাও। আমি এখানে আর পারছি না।”