
সৌভিক গুহসরকার-এর কবিতাগুচ্ছ
আচ্ছন্ন দেহকাণ্ড
আচ্ছন্ন দেহকাণ্ড, আছন্ন রামধনু-আঁধার—
হৃদয়কে শুধু কথার ভর্তুকি দিয়ে কতকাল ভুলিয়ে রাখবে?
ছায়া-মাংস মায়া-মাংস ডাকে, দাঁড়িপাল্লা টাল খেয়ে ঝনমন করে;
যথেষ্ট খোরাক না পেয়ে শরীর নিজেকে জখম করতে চায়—
এ ভাড়াবাড়ির জল সরু হয়ে পড়ছে জেনেও এতখানি ছেলেমানুষি?
ঠাস করে সন্ধ্যা এসে পাঁচ আঙুলের দাগ রেখে গেছে চামড়ায় . . .
সাঁঝবেলা
দোষারোপ করবে না, এমন কোনও নারীর সাঁঝবেলায়
চুপ করে বসতে চাই; কামিনী ফুলের গন্ধে ভারী বাতাস,
মৃদু চুড়ির শব্দ— দূরে কোথাও অখিলবন্ধু— চওড়া নদীর রূপ—
এই সব জল ভালো লাগে আজ, বইয়ের মতো শান্ত সাহচর্য;
এমন কোনো নারীর বর্ষাকালে যেতে সাধ হয়
যার খুব নীল মেঘের ছায়া, যার কোমলগান্ধার চোখ . . .
বাংলা কবিতা লিখতে এসে
গেল, সব গেল এবার— আকাশ গড়াচ্ছে জলে, জল বাতাসে
বাতাস গেল এবার— উড়িয়ে নিয়ে গেল শাড়ির আঁচল;
রাঙা শরীরের ডাঙা— পাখির চোখ গেল, হাঁড়ির ননী গেল
‘ননীচোর ননীচোর’— কোথায় গেল? ধাক্কা দিয়ে বুকে সুর গেল . . .
ছুটতে ছুটতে জন্মের পর জন্ম গেল— ‘ওরে কাপড় তোল, বৃষ্টি’—
শুধু বাংলা কবিতা লিখতে এসে একটা লোক ভিজে গেল
কালো গোলাপ
কল্কেতে নক্ষত্রের আগুন, তন্ত্ররাত; আকাশে ইলিয়াসশাহী চাঁদ
গফুরের মহিষের কঙ্কাল নতমুখে হেঁটে যায় বাতাসের মাঠে—
এ বাংলার রাজপ্রাসাদে শান্ত ছায়াদের নীরব নির্বিবাদ বসতি;
এই মাটির ঢিবির নীচে ঘুমিয়ে হাজার বছরের ইতিহাস আর কবিতা—
খনন, তুমি এর তল পাবে না; এতসব বিতর্ক খুঁড়ে কী লাভ?
আমার তরমুজ-রাঙা মারফতি ঠোঁট, বৈষ্ণবীর ডাগর কালো গোলাপ . . .