
তিতাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের কবিতাগুচ্ছ
আমারই বয়সী এক মেয়েকে
—-
বুকের পাহাড়ি পথে
নামাওঠা টের পেতে পেতে দেখি
আমারই বয়সী এক মেয়ে।
চুলে তার শরতরঙা হাইড্রেনজিয়া।
চোখে নিষিক্ত হচ্ছে ধ্যান।
ধ্যানে সুধা, আশ্চর্য জ্যোতি।
তাকে চিনেছি ভেবে এগোই।
বুকের পাহাড়ি পথ – দুর্ঘটনাবহুল ;
খাদের মুহূর্তে শুধু
মেয়ে এক আমারই বয়সী
ছেড়ে আসি-
ইচ্ছাকৃত।
অভিধান
—
তোমার মুখ
দস্তানা ঝরে যাওয়া দু’হাতে নিয়ে দেখব
আর কিছুদিন বাঁচা যায় কিনা!
নখের ধার আমার গলা অবধি চলে যায়
তবু
ওই হাত আমি বুকের উপর রেখে বলি –
শিশির দাও, কুড়াই শিশির।
তোমার দৌড়
প্রশস্ত মাঠ হয়ে শুষে নেব।
দেখি, আর কিছুদিন বাঁচা যায় কিনা!
ঘাত
—
মৃতদেহ পড়ে থাকে
পরিত্যক্ত কারখানায়।
পচে, ধীরে ধীরে।
গন্ধের কুণ্ডলী খেয়ে নেয় হাওয়া।
নাকে জরির রুমাল দেয় লোকে,
পেটে ঘোরে বমির নাগরদোলা।
মৃতদেহ,
ঠিক
বৃষ্টি, রোদে ও জোৎস্নায়
খালিপেট –
কারাখানা পাহারায়।
সর্বনাশ
—
স্তন ফেলে এসেছে বালিকা।
ফেলে এসেছে নাবাল যোনি।
কার কাছে?
কে খেয়েছে খুঁড়ে?
এখন সে বালিকা
বজ্রাহত মহুয়া গাছের মত ।
এখন সে বালিকা-
শীর্ণ স্রোতস্বিনী।
বালিকা,হে বালিকার ছায়া
তোমার স্তনের কাছে,
তোমার যোনিটির কাছে
মনুর সন্তানদল ঋণী।
পরম্পরা
—
তোমরা জানো এই ধ্বংস,এই স্তূপ।
স্তূপীকৃত জিঘাংসা, তোমরা জানো।
আমাকে জানো কতটুকু?
মাংসপিণ্ড শুঁকে লালায়িত জিভ
নিয়ন্ত্রণে আসে না বাঘের।
তবে
এই ধ্বংস,
এই স্তূপে –
বাঘও একদিন
মার্জিত শিকারীর হাতে
শখের ফসল হয়ে যাবে।
গলাধঃকরণ
—-
আর কীইবা পারি,
দুঃখের বদলে পরিত্রাণ লিখে দেওয়া বাদে!
তাই নিয়ে কানাকানি,
হাসাহাসি হয়।
মাছরাঙার ঠোঁটের মত ধারালো ঠোঁট নিয়ে
ঠোকা দেয় ওরা।
মাছের দীর্ঘশ্বাস প্রসারিত মেরুদণ্ডময়।
স্নায়ুর রাখাল ভাবে,
আমি শুধু কেঁদেই খালাস।
খুব সুন্দর হয়েছে লেখাগুলি