
জয়ন্ত পার্মারের কবিতা
অনুবাদ: শ্যামশ্রী রায় কর্মকার
দ্বিভাষিক কবি জয়ন্ত পার্মার(জন্ম ১৯৫৪) উর্দুর পাশাপাশি গুজরাটি ভাষাতেও সমপরিমাণ কবিতা লিখেছেন। তাঁর গুজরাটি কবিতা দলিতসমস্যার কথা বলে। তিনি নিজে বলেন, উর্দু তাঁর প্রথম প্রেম। উর্দু ভাষায় তিনি নজম এবং গজল লিখেছেন। উর্দু ভাষায় তাঁর প্রথম সংকলন ‘আউর’ প্রকাশিত হয় ১৯৯৯ সালে। তিনি ২০০১ সালের গুজরাট উর্দু অকাদেমি পুরস্কার এবং ‘কুমার পাশি’ পুরস্কার লাভ করেন। তাঁর দ্বিতীয় কাব্য সংকলন ‘পেন্সিল আউর দুসরি নজমেঁ (২০০৬)। এই গ্রন্থের জন্য তিনি ২০০৯ সালে ‘সাহিত্য অকাদেমি’ পুরস্কারে ভূষিত হন। তাঁর তৃতীয় কাব্য সংকলন ‘মানিন্দ’ ২০০৭ সালে এবং চতুর্থ সংকলন ‘অন্তরাল’ ২০১০ সালে প্রকাশিত হয়।
জয়ন্ত পার্মারের কবিতা
অনুবাদ: শ্যামশ্রী রায় কর্মকার
পেন্সিল ১
নীল জিন্স মেয়ে
বেঞ্চির ওপর বসে
পেন্সিলটি শাণিয়ে তুলছে
জন্ম নিচ্ছে
শ্যামবর্ণ ফুল
পেন্সিল লিখে চলেছে
শ্যামল আখর
যেন শ্যামল প্রজাপতিরা
ফুটে উঠছে শূন্য আধারে
পেন্সিল লিখে চলেছে
সুশ্বেত আখর
যেন আকাশের ক্যানভাসে
সূর্য, চাঁদ, তারা
পেন্সিল লিখে চলেছে
সোনার আখর
মহাবিশ্বের দু-বাহু জুড়ে
মেয়েটির স্বপ্নের মতোই
পেন্সিল ২
টেবিলের পদতলে
পক্ষাঘাতগ্রস্ত এক হাত
ভেঙে পড়া একটি নীল পেন্সিলকে বলল
তুমি লিখতে পারো কি?
পেন্সিল পিছিয়ে এল
সে বলল
হ্যাঁ, লিখতে পারি
এমনকি তোমার একটি ছবি আঁকতেও
যদি আমার ভঙ্গুর দেহ থেকে
ব্লেড দিয়ে তুমি নিজে পোশাক ছাড়াও
পেন্সিল ৩
আমার ছোট্ট মেয়ে
ননীর পুত্তলি মেয়ে
পেন্সিল ধরায়
তার পেন্সিল কাটার কল দিয়ে
আলোটি ছড়াতে থাকে
সাদা কাগজের চক্রবাল জুড়ে
একটি অসিত পাখি
উড়ে যাচ্ছে গাছ সঙ্গী করে
রোদচশমাটি আঁটা
ময়ূরের চোখে
একটি আগুন রথ
আকাশে উড়ছে
একটি গরুর সঙ্গে
চিতার আড্ডা হল
এক চক্ষু সূর্য
এক মসীবর্ণ গাছের শিয়রে
তার মাথার ওপর জমেছে এক পশলা মেঘ
কপালের ওপর দিয়ে উড়ছে
এক নীল মাছ
হলদে প্রজাপতিটি
ভেসে যাচ্ছে প্রপাতের ঢেউয়ে
আমার ছোট্টসোনা মেয়ে
এঁকে চলে যা যা আসে তার
আনন্দমুখর কল্পনায়