
শঙ্খশুভ্র পাত্র-র পাঁচটি কবিতা
শ্রী
‘শ্রী’ সর্বার্থে সুন্দর৷ কুন্দফুলের মতো নমনীয় যা
ধারণ করে আছে ধারণাতীত শাদা৷ হেমন্তের বিষণ্ণতা
বিধেয় নয় তবু জানালার শিয়রে একফালি চাঁদের
জ্যোৎস্নায় গৃহটি সম্পূর্ণ হল অবশেষে৷ এই দৃশ্য
আমি আর পোষা বিড়ালটি ব্যতীত দ্বিতীয় ব্যক্তিত্ব কেহ
নাই৷ নিঃস্বতার মন্ত্র তুমি জানো৷ এই ‘শ্রী’, শ্রীশ তো
হতেই পারে! সম্ভাবনা কুয়াশা, শিশিরে সিক্ত—
না-লেখা কবিতা, শাদাপাতা…
লালন
মধুপর্ক, আমাকে দিয়ো না৷ সম্পর্কের অজুহাতে কত
বিনিদ্র রাত বিনিসুতোয় গাঁথা হল৷ কত গাথা
বর্ণনা-অতীত হয়ে প্রীতিবাক্যে জুড়ে দিল স্মৃতি৷
দশদিক একলপ্তে মনে হল হাঁসেদের লিপ্তপাদ,
সন্তরণ সাধু৷ মোহান্তের কাছে এই সব গুণবিদ্যা,
তুকতাক শিখি৷ তবু কি কবুতর সহজে আয়ত্ত
হয়? সহজিয়া, কতদূরে আমার লালন!
সাধনা
কে কাকে সাধনা করে? এই যে তোমাকে ‘তুই’ বলে
অনায়াসে ডাকি৷ অন্তরাত্মা কেঁপে ওঠে৷ দুই চোখে
জুঁই ফুল৷ ভুল বুঝি? বানানে সমর্থ চোখ৷
কোথাও কি দ্যুতি ঝরে? পাগলের কাণ্ড সব!
স্তবকে-স্তবকে এত ভ্রমণের সাধ—কৃষ্ণভ্রমর…
ভ্রমে কি আসিবে তুমি? আসব প্রস্তুত৷
জমে নেশা৷
ও দু’টি চরণ আমি বক্ষে রাখি৷ বৃক্ষকুল—
অতঃপর ক্ষমা…
ধুধু
বিজ্ঞাপন আপন করে নেয়৷ যেমতি বকখালি৷
‘আপণা মাসেঁ হরিণা বৈরী’— কেবল শখ পূরণের জন্য
নয়৷ সভার শোভা আছে না! গীতবাদ্য, অভিনয়
যথাবিধি বিবিধ ভারতী৷
আমন্ত্রণে মন্ত্র আছে৷ ‘আমন, আমন’… শোনো শস্যের
সোনালি অক্ষর! তুলাদণ্ডে দোলায়িত মন৷
‘মণ’-ই তো! কেলল বানানভেদে বাহুল্য ভেবেছি
তাকে শুধু৷ সমুদ্রের হাতছানি… তুমি তো জানো
মান! কী ভাবে খাতায় আঁকি ধুধু…
কবিতা
পাঠক, তোমাকে প্রণাম৷
বিবেচনা৷ অদৃশ্য ইনাম৷
মনোনীত৷ মুছে যাক নাম…
ভালো লাগলো