শিবালোক দাস -এর কবিতাগুচ্ছ

শিবালোক দাস -এর কবিতাগুচ্ছ

মাছ

আমি চোখ থেকে তুলে আনব হীরে,
এমনই কথা দিয়েছিলাম।
তারপর কখন বুজে এল চোখ,
তুমি চাইতে বুঝি একটু সন্ধ্যা হোক !

হাঁটুতে থুতনি দিয়ে একদিন দেখলাম
প্রজাপতির বর্ণদান, আগুনে পুড়ে মরা,
নগ্ন পায়ে তখন তরঙ্গ ছোটে না,
ছাই মাখা শরীরে কি ফোটে কোনো ফুল ?

যখন তোমার রাস্তা শুকনো,
তখন আমার বুকে জল।
ছল ছলাৎ, ছল ছলাৎ, ছল ছলাৎ…
তাহলে কি ছন্দপতন হঠাৎ ?

যখন মাটিতে তলোয়ার নামিয়ে রেখে
মুখের চারিপাশে আঙুল রাখতে রাখতে
তোমার উষ্ণ ঠোঁটে আবার পুনর্জন্মের
ইচ্ছে জাগে, তখন কোথা থেকে একটি
মাছ এসে খুব ছটফট করে, জল স্থির।

এসো একবার বুক ভরে শ্বাস নিই !

চিনতে পারোনি

চুল জড়িয়ে গেল গবাক্ষে,
ঘুমের ধারে সহসা হাত জড়ানো।

ভোর এলে ভাবি, তুমি আমায়
চিনতে পারোনি, জলের মতোই।

তুমি আমায় বেঁধেছ এলোমেলো মন্ত্রে।
তখন হয়তো কিছুই হয়ে ওঠেনি ভুল,
তবুও চাঁদের ওপারে এখন ঘুরে আসে
এক জড়ানো ডাক। আমি তাকে ছায়া ভাবি।

ভোর হলে মনে হয়, তুমি আমায় চিনতে
পারোনি, ঠিক তখনই মনে হয় ডুবে গেছে
শহর, আমি কাঠ খুঁজে আনি আগুনের জন্য।

দূরে কোথাও জ্বলে ওঠে সমাধিস্থল।

নিজস্ব বর্গক্ষেত্র

তখন একটুও বৃষ্টি পড়েনি,
আমার নিজস্ব বর্গক্ষেত্রে পা
রাখবার পরেই দেখলাম চাঁদের
গা থেকে কেউ ছিনিয়ে নিয়েছে
তার শীতল, টুকরো টুকরো অমরত্ব।

হায় মৃত জ্যোৎস্না !
তোমার উচিত ছিল আগুনে হাত না রাখার।

জহরব্রতে উঠেছে মাটির ঢেলা,
মোচড়ানো হাত, তবু চিৎকার নয়।
যখন সন্ধে নেমেছে, ঘাসের উপর
কত তলোয়ার পড়ে রয়েছে এখনো।

কান চেপে থাকি। আর কিছু শুনি না।
মনে নেই, একবার নিঃশ্বাসের পর
এই নিজস্ব বর্গক্ষেত্রে কালো হয়ে
গিয়েছিল একমাত্র বায়ুকোণ !

বীজ

টোকা মারতেই গাছতলায় দাঁড়িয়ে
থাকা নিরীহ তরঙ্গটি ছড়িয়ে গেল।
জিভের তলায় তখনও ছিল সরবিট্রেট।

ঘাড় ধাক্কা দিচ্ছ কেন আমায় ?
আমি বুঝি তোমার সেই সন্তান
যে প্রতি রাতে তোমার নাভি থেকে
একটি করে পদ্ম তুলে নিতাম রাতে ?

না, না, আমি তোমার কোনো বীজ নই।
সংরক্ষিত মাটির তলে এখনও পর্যন্ত
লুকিয়ে নেই কোনো রেখা, তল,

তুমি রক্তের দাগ টেনে গেছ অনর্গল !

ক্ষুধা যখন রোদ্দুর

ঈশ্বরের দিব্যি খেয়ে বলছি কেউ আমার
বুকে টোকা মেরে বলেনি, যে সে তোমার
মুখে এক টুকরো রুটি ছুঁড়ে দিতে চায়,
এক পুরোনো ভ্রুণের কাছে আমি হাত
রেখে সেই কথা আমি শুনেছি যামিনী !
তার আগেই দরজা ফুটো করে কেউ
আমার মাথা ঘুরিয়ে দেয় চাঁদের ভঙ্গিতে।

আমি পায়ের উপর ভর করে খরোষ্ঠকে
যখন চুম্বন করি, দেখি ক্ষুধা রোদ্দুর হয়ে
পড়ে আমার ঘরের দাওয়ায় এবং মেঝেতে।
শিয়রে এত হাত বাড়ালাম, করাতে কেটে গেল,
তবু নাও আমার বুকের কয়েকটি হাড়।

ঢাকো নগ্ন লজ্জা, কিন্তু ভস্মের কাছে যেও না।

নির্নিমেষ

আমি চেয়েছিলাম দু মুঠো ভাত,
তাই বারান্দায় ছড়িয়ে আছে পা দুটি।
অষ্টপ্রহর জয়ের উত্থানে আমার ভয় নেই।

দাও, ফাটিয়ে দাও মাথা…
ব্রহ্মতালু ছুঁয়ে যদি পাও একটি
তরতাজা সবুজ লতানো ছোবল।
আমি তাদের বড় করিনি…

আমি চেয়েছিলাম দু মুঠো ভাত,
অপরাধ নির্নিমেষ, তাই দিন গেল।
মথিত হবার শেষে যখন পুঁতে নিই
শেষ স্তম্ভ, আমি পোশাক ভাসিয়ে দিই।

অপরাধ নির্নিমেষ, তবু পান করিনি শেষ অঞ্জলি।

একবার

একবার আমি চাই কৃষ্ণগহ্বরের গা
থেকে একটু পলেস্তারা তুলে আনতে,
যতক্ষণ না কেউ ঘুমিয়ে পড়ে।
দু পা পিছলেই আমি পেতাম আমার বাড়ি।

এর আমি নাম কি দেব, ভাষা ?
তাহলে তো বলতে হয় মেঝেতে পা
পড়ার পর আমি নিজের প্রতি আঙুল তুলি।

একবার মনে হয়, চুরমার সব কিছু আমার
চোখের মধ্যে নিয়ে নিই এক লহমায়,
রক্ত পড়ুক, সে তো বন্য নয়।

এর আমি নাম কি দেব, অন্ধকার ?
তুমি চেপে রাখো মাটির চিৎকার।

নাম খুঁজতে খুঁজতে আলোয় পাই বিস্মরণ,
এর আমি নাম দিই না। সে স্বতন্ত্র।

মুর্শিদ

ঘুম চেয়ে আজকাল বড় ধীর লাগে আমার।
স্তব্ধতার উপর পা রাখি।
ভাসমান পদ্মমূলে পোড়াই অক্ষরজ্ঞান, ঋণ।

মুর্শিদ মুর্ছিত হন না।
নিঃশেষের সত্যিকারের কোনো পরিচয় আছে ?

যে ছাই গায়ে মেখেছি,
সে ছাই উড়িয়ে আমি সূর্য দেখি রোজ।
যে মন্ত্রে আগুন জ্বেলেছি,
সে মন্ত্রে আমি নিজেকে ভেঙে নিই রোজ।

জল, তুমি শান্ত হও। তোমার সিঞ্চনে চোখ ধুই।

মুর্শিদ মুর্ছিত হন না, বরং তার পায়ে হাত রাখি,
বুঝি তরঙ্গ নামছে, আর আমরা মানুষ হচ্ছি।

জেগে থাকো উপশম

টেবিলের উপর এখনও কিছু রেশ পড়ে
আছে, যা তোমাকে বিদ্ধ করেছিল বহুদিন আগে।

তুমি ধীরে ধীরে হাঁটুতে ভর দিয়ে
উঠে দাঁড়াও, জেগে থাকুক উপশম।

আঁশ সরালে এখন আর রুক্ষতা চোখে পড়ে না,
চাইলে একসাথে বেঁধে জলে ফেলে দিতে পারতাম।

কখনও স্বপ্নে, কখনও নীরবে…
কখনও ঘুমে, কখনও ঢেউয়ে…
কপালে হাত রেখে যে অমৃতের
বাণী শুনিয়ে এসেছ নিঃশব্দে,
অনুসরণে এতকাল, যাও মন্থনে
জোরালো হোক সমুদ্র, পিঁপড়ে
উঠিয়ে নিয়ে যাক তার শেষ কণা…

জেগে থাকো উপশম, বৃথা যেতে দিও না,
বহুদিন পর, একদিন মিলিত হবে সব রেখা…

তখন ভোর কি তোমার চুম্বনে হবে আরো লাজুক ?

গোধূলি রঙের পদ্য

বিষ পান করে তোমার সমস্ত মুখ স্তব্ধ, নীল।
ফিরে যাওয়ার পথে মাড়িয়েছ অজস্র ফুল।
ভুল করেছ, ভুল। একটি গোধূলি রঙের পদ্য চেয়ে।

ঘৃণার স্বাদ রক্তের মতো কড়া হলেও
ছুঁয়ে দেখলে বেশ শীতল লাগে।
আমি তুলে নিয়েছি একটু শিশির,
আর ঢেকেছি দুহাতে মুখ,
আমি এরকম মৃত্যুর দৃশ্য দেখতে চাই না।

একটি গোধূলি রঙের পদ্য চেয়ে
এইবার আমার যাপন খণ্ডন করেছি।

আমি তো কাউকে কথা দিয়েছি,
একদিন তোমার বিষ আমি নামিয়ে দেব।
তখন চুম্বনেও খুলে যাবে অভিশপ্ত দরজা।

CATEGORIES
Share This

COMMENTS

Wordpress (0)
demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes