
অরিনিন্দম মুখোপাধ্যায়-এর কবিতা
ভাঙাচোরা কবিতা
গান গুলি থেমে আছে দরজার পাশে
মেরে ফেলা সহজ বলেই ফিরে আসছি
অবিন্যস্ত পথ পেরিয়ে
বাজাবেনা সাজাবেনা আবার
গৃহস্থালি কুসুমে কুসুমে…
গান গুলি বেজে উঠবে বুকের মধ্যে…
” আঁধার রাতে একলা পাগল”…
*
বিপ্লব
আর কত ঘুমাবে মাস্টার
জীবনের খড়ের পা বেরিয়ে আসছে বুক পকেট ফুঁড়ে
এই তো সময়
ঝোপ বুঝে কোপ মারো
থরথর করে ঝরে পড়ুক ধুলো বালি কালি মাখা হাত
সামনে কেবল অনিশ্চিত পড়ে আছে বিক্ষোভসমূহ…
ওঠো
এসপার না হয় ওসপার দেখে আসি…
*
কী লিখি তোমায়…
আকাশের গায়ে আছড়ে পড়েছে লেখা
বৃষ্টির পায়ে অবৈধ কারুকাজ
প্রস্রবনের বুকের মধ্যে একা
ভালোবাসাবাসি লুকানো ঠোঁটের ভাঁজ
মন্দ যতই বলুক পথের বাঁক
আগুন নেভেনি মনিপুরকের মাঝে
মেঘ যদি চাই চাতকেরা নির্বাক
অরণ্যে শুধু হরিণেরা বাঘ সাজে
আস্ত পৃথিবী গিলে খেয়ে নিয়ে যারা
সভ্যতা লেখে ধান্দার দিনরাত
শরীর বোঝে না অনাহত একতারা
বদলে গিয়েছে কালপুরুষের হাত
এখনও প্রবল উৎপাদনের নেশা
স্বধিষ্ঠানেও রয়েছে জলের দাগ
দেওয়ালের গায়ে ভুলে যাওয়া মেলামেশা
বাঁশিতে মজেছে আপন অস্তরাগ
*
প্রেমের কবিতা
বিস্তীর্ণ দুপারে অসংখ্য মানুষের হাহাকার শুনেও
নির্বিকার বয়ে যাচ্ছে গঙ্গা সিন্ধু নর্মদা…
পাকদন্ডী বেয়ে নেমে আসা সব গেরুয়াই পবিত্র নয়
ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে জমে যাচ্ছে মেদ… বদরক্ত
যদি মেঘের দিকে তাকাই
সেও যেন এলোমেলো… গতিপথহীন
রোদের গায়ে হাত দাও
আগুন না যদি জ্বলে নিজেকেই পুড়াও অবিরাম
থেমে থাকা বিপজ্জনক বলে মেখে নিও পোড়া ছাই
পোড়া গন্ধ পোড়া পোড়া আজীবন যতি চিহ্ন গুলো…
যদি প্রেম দিলে না প্রাণে…
*
নস্টালজিয়া
বিচ্ছেদ অনিবার্য জেনে যে প্রেম মধুর হয়ে ওঠে
আজ তার পাশে বসি
হাত জুড়ে ভরে আছে ধান
আকাশ নীলাভ তবু মাটির গন্ধ বড় একা
শ্মশানে পুড়েছে রক্ত ভেদ বমি স্বপ্ন মৌচাক
সমস্ত বাঁশি জুড়ে শুয়ে আছে পাগলের আলো
তার মাঝে এটুকুই ফিরে ফিরে দেখা
এটুকুই ভেসে আছে দূরবর্তী অন্ধকার রেখায়
*
একটি জাতীয়তাবাদী লেখা
আমাদের মা বাবা থাকে। একদিন তারা মরে যায়। ভাই মরে বোন মরে…
এমনকি ছেলে মেয়েও মরে যায় টুপটাপ করে। পাখি মরে ,গাছ মরে।
সব মরে, সব্বাই।
জল ঝরে। রক্ত ঝরে যায়…
শুধু যুদ্ধ বেঁচে থাকে।
পাড়ায় পড়ায়। ধর্মে ধর্মে। দেশে দেশে । সীমান্তে…
মগজে …
মরে না…
কিছুতেই মরে না।
মনুষত্ব মরে যায়।
ভারত মাতা কি জয়…
৬টি কবিতাই ভালো লাগল।