
রাণা রায়চৌধুরীর কবিতা
চাই না-কে চাই
দীপ্তিপ্রকাশের ছোট ছেলের মতো আমিও চমৎকার
চিৎকার করে বলতে চাই
‘বেড়াতে যাবো’।
আমার বেশ পেলব একটা খেলনা চাই।
আর ‘চাই না’–কে চাই।
চিৎকার করে আনন্দ ও স্তব্ধতাকে জাগাতে চাই।
তোমার এতো পাথুরে নীরবতার পাশে
আমি চিৎকৃত একটা ঘুম দেবো
আমি ঘুমিয়ে পড়ব
আমার লুকানো সব ডানা ধরে
বেয়নেট তার চিৎকার মেলে।
আমি ঘুমিয়ে পড়ব তোমার নীরব খেলনার পাশে…
তোমার মুখ
তোমার মুখ সিনেমা হলের পোস্টারের মতো লাগে।
দেখি বৃষ্টিতে ভিজে আছো, ছিঁড়ে আছো।
তুমি ভিজতে ভিজতে দূরে চলে গেছো।
আমি ঠাকুরকে ডাকি। বলি তোমার যেন কোনো
বিপদ না হয়। তুমি যেন ঠিকঠাক চিত্রনাট্য অনুযায়ী
গল্পের ভিতর দিয়ে স্বামী ও সন্তান ছুঁয়ে দি এন্ডে
পৌঁছতে পারো। ওগো সিনেমার নায়িকা, আমার
চোখের জল তোমাকে ছুঁয়ে আজ সমাপ্তিতে যথাযথ
জাতীয় সঙ্গীত গেয়েছে, তখনো আমার জাতীয়
সঙ্গীত মন ভিজে ভিজে তোমার প্রবল বর্ষাকে ছুঁয়েছিল
তোমার মুখ খুব ভালো লাগল।
দুটি কবিতাই তাদের নিজস্ব দ্যূতিতে ভাস্বর। ‘চাই না-কে চাই’ কবিতার কথা কেন পাঠক উল্লেখ করছেন না, জানিনা। “পাথুরে নীরবতার পাশে/আমি চীৎকৃত একটা ঘুম দেব” বা “আমি ঘুমিয়ে পড়ব তোমার নীরব খেলনার পাশে”…নিছক পংক্তিবিলাস নয়, শব্দসাজোঁয়া এগিয়ে আসছে প্রথাগতকে ছারখার করে দিতে, কারণ ভস্মাবশেষ থেকে আবার রূপকথা! অপূর্ব এই কবিতাটি। আর ‘তোমার মুখ’-এ আকর্ষণের উপাদানের আধিক্য তো রয়েইছে এবং এ কবিতাটিতে অনর্থক হয়ে ওঠেনি। আপনি, রাণা দা এমন একহন বিরল গোত্রীয় কবি, যাঁর নখদর্পণে থাকে শব্দপ্রয়োগ, বিন্যাস ও এসব জড়িয়ে অন্তস্থ মনোজগতের দেদার আকাশ মেলে ধরার সমূহ প্রক্রিয়া। পাঠের অতলে তলিয়ে নিয়ে যেতে আপনি এক আশ্চর্য জাদুকর। বড় ভাললাগল।
চমৎকার ❤️