
মণিশংকর বিশ্বাস-এর কবিতাগুচ্ছ
দয়িতা
জানি ভালো নয় এরকম চিন্তা
তবু— শিশিরেভেজা ভোরবেলা
তোমাকে
একটা ফুলের মতো তুলে নিয়ে আসতে ইচ্ছে করে
টবের ফুলগাছ
বুকে হাত দিয়ে বলো—
আমাকে ঘৃণা করবার পাশাপাশি
আমার ভালোবাসাকেও
ভালোবাসোনি তুমি
দু’ টুকরো
১.
তোমাকে
দুপুরে বাগানের সংক্ষিপ্ত প্রতিধ্বনি মনে হয়
কখনো বা মনে হয় স্বাভাবিক মৃত্যুর মতো
স্বাভাবিক
২.
এতই সহজ তোমাকে ভালোবাসা,
যে মনে হয় এই প্রেম যথার্থ নয়
প্রেম নয়—
শহর থেকে বাড়ি ফিরবার সুবিধেজনক পথ।
ক্যালেন্ডার
মৃত সন্তানের জন্মদিন ফিরে ফিরে আসে
ভয়
পাশের বাড়ির বঙ্কু বাবু ত্রিশ বছর ধরে সরোদ বাজাচ্ছেন। ত্রিশ বছর ধরে সরোদ বাজিয়ে বঙ্কু বাবুর নাম হয়েছে বঙ্কু মহারাজ। কয়েকটি রাগ তো উঁনি দারুণ বাজান। যে সব ছাত্ররা ওঁর কাছে নাড়া বাঁধে, তাদেরও উনি রীতিমতো বাজিয়ে নেন।
তবে যদিও বলেননি কাউকে, বঙ্কুবাবুর কিন্তু একটা ভয় আছে। ত্রিশ বছর ধরে দিন রাত এক করে সরোদ বাজিয়ে বঙ্কু মহারাজ বোঝেন, তিনি যেটুকু বাজান, মন দিয়ে প্রাকটিস করলে, যে কেউ এটুকু বাজাতে পারে, যে কেউ!
পঁচিশ-ত্রিশ বছর ধরে কবিতা লিখে, উৎপল, বিনয়, মণীন্দ্র পড়ে আমিও দু’একবার বেড়াতে গিয়েছি বাংলা কবিতার মহার্ঘ চূড়ায়। আমিও কুড়িয়ে এনেছি বিরল প্রজাতির পাখির পালক, অপরূপ অচেনা-রঙ্গিন পাথর, ব্যাকুল অর্কিড, দুরন্ত সূর্যাস্ত।
তবে এত বছর ধরে বঙ্কু বাবু কবিতা লিখলে, তিনিও কী পারতেন না, অমন দু’একটা লিখতে!?
অসাধারণ অসাধারণ অসাধারণ
এই কবির কবিতা সবসময়ই মন ছুঁয়ে যায়। 🙏🙏🙏