
অরণ্যা সরকারের কবিতা
মুখোমুখি
নৈঃশব্দ্যের সাথে কথা হল খুব
তার অস্ফুট টিপ, চোখের গল্পে কি যে প্রলোভন
পাইন পাতার নীচে সহিষ্ণু ছায়াঘর
পাখিরাত রেখে গেল ভ্রমণ কোটরে
বাহকমাত্র, দরজি পাখির ঠোঁট
সেলাই করি এক আলো অন্য বাতিদানে
কালো ফিসফিস পৌঁছে যায় উজ্জ্বল ফ্রেমে
শ্রুতি ভিক্ষা চলে, বিভ্রম থেকে দৃষ্টি চেয়ে নিই
মাধুকরী রমণীয় হলে মোক্ষ উড়ে যায়
কিছু তপস্যার কালি নিয়ে যায় অন্য এক ভ্রমণঅভ্যেস
বাহক মাত্র, জুড়ে যাই বিন্দুর আয়ুষ্কাল
দুই
এইযে বরফচুড়ার উঁকি, পাথরে নদীর কথাদাগ, অচেনা ফুলেদের বসে থাকা
এর বেশী কিছুই পারো না নিতে
যে তুমি খুব দেখছ মেঘচাদরে বৃষ্টিপ্রিন্টের খুশী, খুব চিনছ সিল্করুট
খাম্পা দস্যুদের ভয় খুঁজে পাচ্ছ পথের পাথরে
ঘেমে ওঠা সভ্যতার গায়ে পড়িয়ে দিচ্ছ
হাওয়া ঘুঙুরের মখমল,হ্যালজেন শরীর বার্তা পাঠাচ্ছে নারী শ্রমিকদের
ধ্বসের পাথর সরাতে সরাতে ওরা থেকে যাচ্ছে ক্যামেরায়
তুমি, তুমি, তুমি কি ভীষণ প্রকৃতি লিখছ, দূরে রাখছ গতজন্ম ক্ষোভ
পেনড্রাইভ ভর্তি আকাশ বলছে ‘পর্যাপ্ত’, বাহবা পেঁচিয়ে ধরছে
ঋষিনদীর কাঠের ব্রিজে দাঁড়িয়ে সেই তুমি আচমকা দেখে ফেললে
গাছেরা ফেরত দিয়ে যাচ্ছে মানুষের মনোজ্ঞ কৌশল—
তিন
পাহাড়ে কুশল দেখে কেউ, গুল্মে গুল্মে মোহের বয়স
গৃহস্থালি ফুটে থাকে ঢালের প্রত্যয়ে
দেখি, কবেকার কোন উৎসমুখ থেকে যূথ জীবন হেঁটেছিল
সবিস্তারে, তারা সব থেমে আছে, খানাখন্দে গৌরীর সংসার
মহাকালের ফুঁয়ে পাথর গড়ায়, বরফে খিদে জাগে
ভিক্ষাঅন্ন এখনও প্রবহমান গম্ভীর বাতাসে
গতির দ্বিধামুখ ফিরিয়ে যা কিছু বলার বলি সব
বলি এ থালার আহ্বান, তির্যক আশনাই
সবুজ শিহরণ দৃষ্টির তেষ্টা বোঝে, রেখে যায় ফসলকাল
বীজের অপেক্ষা ছাড়া আমি কি অন্য কিছু আর ?