
সৌভিক পাল চৌধুরী-র কবিতাগুচ্ছ
আমার প্রেমিকার দেশ
প্রিয়তমা নদীমাতৃক দেশে
চিরকাল শরীর আর উপত্যকা নিয়ে বিতর্ক লেগে থাকবে,
চলো তুমি আর আমি সেই কৃষিভূমিকেই
দেশ মনে করি অথবা ঢাকুরিয়া লেকটাই আস্ত দেশ হতে পারে!
তুমি তো চিরকাল বলে গেলে-
দেশ এই টু বি-এইচ-কে বাড়ি আর তোমাদের
সেই দেরাজ ভরা গোপনীয় আলমারি, অথবা ব্যালকনিতে বসে একসাথে চা,
আবার আমার সেই যুবক কালের দিনগুলি
যখন তুমি কোত্থাও কাছে ছিলে না,
খুব মনে হয়েছিল দেশটা বুকের ভেতর, দেশের নিশ্চয়ই শরীর থাকে না।
আর এখন প্রিয়তমা- এখন আমি
এই দেশের ভেতর হাজারটা দেশ খুঁজে পেয়েছি, এখন আমার শরীরের ভেতরে
হাজরটা শরীর দেখতে পাই,
আমার মনের ভেতর অবিরত হেঁটে যাওয়া শিম্পাঞ্জির পায়ের ছাপ প্রিয়তমা- সেই সব চিহ্ন খুঁজে খুঁজে অনেকটা দূরে চলে এসেছি আমি,
এখন একমাত্র তোমার দেশের ভেতরই
আমার দেশ নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারে।
টু মাই ইনসিকিউরিটিস
আর দুদন্ড আলো জ্বালিয়ে রাখো,
আমার চেতনা হরণ করলে যে দূর থেকে আলো দেখা যায়
তার মধ্যে বিলীন হয়ে যায় সব, নিভৃতি
সন্তানের ভার ভোরের বাতাস মেখেছে কখন,
আর প্রিয় ঠিকানার মাঝে মিশে গেছে বৈরাগ্য।
শুধু ভেতরের বীভৎস অনুভব জুড়ে আছে
ওদের খোঁজার জন্য ত্যাগ করব মৃত্যু,
অথচ স্বপ্নের মাঝে এখনো প্রবল মৃত্যু হয়-
সব মৃত্যুর অযুহাত নেই এই মুলুকে,
শুধু অস্থির দিগন্ত ডাকে, আয়…আয়…আয়।
বান্ধবীদের ঘুম
তোমাদের স্বপ্নের আনাচে কানাচে আছি আমি ,
তোমাদের রাতের ভেতর দুর্দম বালকের মত
হাতে একটা ভাঙ্গা গাছের ডাল ধরে
শুকনো পাতার ওপর দিয়ে হেঁটে গেছি আমি ।
তোমাদের ভোরের কাছে ঘুমন্ত সুখের ভেতর দিয়ে
জানলা বেয়ে নেমে এসেছে
কাঞ্চনজঙ্ঘার সাদা ।
তোমাদের অনন্ত গভীর ব্ল্যাঙ্কেটের ঘনকালো হিম শুষে নিয়ে ,
গৌরীকুন্ডের উষ্ণতা মেখেছে সর্বাঙ্গ ।
বান্ধবীরা, তোমরা ঘুমিয়ে আছো –
গভীর রাতের ভেতর
কোনো এক পাহাড়ি উপত্যকার মত ,
আমি সেখানে শুধু ঝাঁকে ঝাঁকে ফুল দেখতে পাই ,
তার সুগন্ধে, তার রঙ্গিন উপত্যকায়
আমার ঘুম নেই, আমার স্বপ্ন নেই
আমি শুধু তোমাদের স্বপ্নের ভেতর আনাচে কানাচে ,
ফুলের গন্ধে ম ম করছে উপত্যকা –
বান্ধবীরা, ঘুম ভেঙে গেলে
আমার এই দেহটিকে উপত্যকায় রেখে দিয়ো ।
চিনির বয়াম
একটা চিনির বয়াম খুলে রাখা হয়েছে,
হাজার পিঁপড়েরা ঝাঁকে ঝাঁকে
সব আসছে,
একটা , দুটো করতে করতে
বয়ামের ভেতর এখন হাজার পিঁপড়ে।
এখন বয়াম বন্ধ হবে,
বয়ামের ঢাকনা
যে বাজার থেকে চিনি কেনে
তার হাতে,
সে উল্লাস পায়। সে উন্মাদ হয়।
সে হাতের বাইরে চলে যায়,
সে ভান্ডার সামলায় না,
সে ভান্ডার খুলে দেয়
সে হাসে। সে তৃপ্ত হয়।
বয়ামের ঢাকনা বন্ধ করার সময়
হাজারটা চিৎকার
হাজারটা দাবি
হাজারটা হাত, হাত কামড়ায়।
বেকারের ব্লাফ কাব্য
রাত্রির অন্ধকারে
স্বপ্নচোর পকেট কাটে, আমি চিৎপাত।
এখন খণ্ডযুদ্ধ বারেবারে
কাঁদামাখা জল ঘাটে পোকা, আঁকে চিত্রকারে।
আমি খাই না বাঁচি ?
মরে কেঁদে বাঁচি – শূন্য পাত,
মাছি ওরে ফাঁকা পেট অন্ধকারে
উন্মাদ চিৎকার।
ছেঁড়া ছেঁড়া আঁখিজল – সেলুকাস বিচার,
আমি মরি না বাঁচি ?
নাকি চটি ছেঁড়ে পায়ে –
বিরতির ওপারেতে চেনা মুখ দাঁড়ায়ে,
ভাসাভাসা ফেনা তোলে, ফোনে কথা বলে
মাঝে হয় দেখাদেখি ঝড়া-হাত-পায়ে।
জানেনা জানিনা মরি না বাঁচি ?
নাকি ফাঁকা হাতে ডাকি – অপেক্ষায়।
চৌচির শয্যায় ভাঙ্গে ঘুম আধমরা
ভাবে ভেজা চ্যাটচ্যাটে,
স্বভাবে সিদ্ধ হাসি ফোটে অবকাশে
আমি চিৎপাত, এখন খণ্ডযুদ্ধ বারেবারে
জানেনা জানিনা বাঁচে না মরে।
(গ্রীষ্ম, ২০১৫)
একটা আলেকজান্ডার আমায় ডেকে তোলে রোজ
আমায় ঘুমের মধ্যে রোজ একটা আলেকজান্ডার ডেকে তুলেছে–
পরক্ষণেই ধড়মড় করে জেগে উঠেছে আমার বউ,
তারপর বুকে পিঠে হাত বোলাতে বোলাতে
কখন যে তুলতুলে ঠোঁটে দাঁত গেঁথে ফেলেছে –
সেখানেও রক্তক্ষয়- সাম্রাজ্যবাদ,
দখলদারির প্রবল তীক্ষ্ণ প্রয়াস।
আমাদের রাতের ব্যাকুলতায় নিরন্তর
মিশে থেকেছে তেল ফুরাবার চিন্তা,
আর ভোরের আলোর কাছে
গভর্নমেন্ট স্কুলে পড়া ছেলের তৃতীয় শ্রেণীর ক্লাস।
আমার বউ উঠে পড়েছে ধড়মড় করে
আমাকেও আলেকজান্ডার ডেকে তুলেছে
ভোরের ক্লাস করাবে বলে –
সাম্রাজ্যবাদ- তীক্ষ্ণ লড়ে যাওয়ার বেফালতু সে ডাক।
একদিন রাত
১
আমার মাথার ওপর সেই
পুরোনো ফ্যানটা ঘুরছে,
যার নীচে আমার বাবার মৃত্যু।
এখনো ঘুরছে সেই ফ্যানটা
প্রচন্ড শব্দ করে ঘুরছে,
আমি নিশ্চিন্তে ঘুমোই ওর নীচে।
২
কোথাও কোনো বুড়ি
পায়চারি করছে বারান্দায়,
ওর গিঁটে গিঁটে ব্যথা-
অনেক পুরোনো।
৩
আমি ইনসোমনিয়াক কুকুর দেখেছি রাস্তায়,
ওর সংবেদনশীল অঙ্গাণুর প্রতি আমার
সহানুভূতির ছায়া,
বন্ধ জানলার প্রতি-
আরো একবার অবজ্ঞা।
৪
শিকড়ের কাছ থেকে দূরে সরে এসে
সমস্ত ক্লান্তির ভার মাখা
একটা রক্ত মাংসের মানুষ –
নিকোটিন ক্লিস্ট, কান্ডারী হুঁশিয়ার!
৫
সব জ্ঞান, বৃদ্ধি, স্মৃতি
জড়াচ্ছে জটিল
পায়চারি, ঝিঁঝিঁ পোকা, চারা গাছ
জড়াচ্ছে সব।
একটা জাল বুনছে
রোজগেরে বোকা, আর একটা
জাল হাতড়ায় অনুভব।
(চতুর্থী, পুজো, ২০১৬)
পিতৃপুরুষ
ফোঁটা ফোঁটা জলের শব্দে হাত কেটে গেছে নায়িকার, আর স্বপ্ন কেড়ে নিয়েছিল যারা
তাদের গ্রেনেডের শব্দে চিরকাল আচমকা ঘুম থেকে জেগে ওঠে বীভৎস শৈশব শিশু, মনের ভুল-
ওদের হাজার আলোর ভেতর এখনো
নিশ্চিহ্ন মৃতদেহরা একের পর এক নগ্ন, ভাবলেশহীন।
স্বপ্ন,
ঝর্ণার মত মুছে দিয়ে গেছে বাবা মায়ের চিৎকার
আর অখন্ড পরিবারে এক গ্লাস জল খাওয়ার তৃষ্ণা।
শুধু ম্রিয়মাণ প্রেমিকার ছোট চাহিদার কাছে
সমস্ত চোখ উপড়ে নেওয়ার বেদনা, পেটের ক্ষোভ আর রাতের পেচ্ছাপের মধ্যে দিয়ে বেরিয়ে যায়,
আমাদের যাদের বীভৎস শৈশব দৃশ্য।
আমরা সবাই শুধু একজন সন্তানের নিশ্চিন্ত ঘুমের জন্য বাঁচি। নিশ্চিন্ত ঘুমের জন্য আমরা মজদুর হই। নিশ্চিন্ত ঘুম ফুরোলেই-
আবার ঘুম ভেঙে আমাদের বাবা মার কথা মনে পড়ে।
গঙ্গা বক্ষের লুটেরা
আমাকে পথভুল জোছনায়
যারা ফেলে এসেছিল,
তারা ভোরের আলো ফোটার আগে
লোপাট করেছে স্মৃতিচিহ্ন।
গঙ্গার জল বেয়ে নেমে গেছে বোটে-
গভীর রাতে, ভয় করেনি একটুও
বরং জোছনার আলো দেখে কিছুক্ষণ মোহিত হয়েছিল।
তারপর একজন বিড়ি টেনে পাঁচ-ছয় ফুঁকে
পুড়িয়েছিল গঙ্গার চল্লিশোর্ধ্ব রগড়ানো বুক,
তারপর কে একজন কবিতা পড়েছিল মদ খেয়ে,
একটা ষোড়শী মেয়ে শুয়ে ছিল উলঙ্গ,
সঙ্গম শেষে সমস্ত পুরুষের মতো অসাড় আনন্দ
বয়ে গেছিল বোটে করে-
হাজার বছর ধরে, ওদিকে ঘুম ভাঙ্গেনি সঙ্গিনীর
গড়ের মাঠে তাকে ফেলে এসেছি,
ওরা আমায় ফেলে এসেছিল ভুল গলিপথে,
আমি আর কখনো সঙ্গিনীর লাল টিপ ফেরাতে পারিনি।
নীল সমুদ্রের ডাক
তোমার লাল নেলপলিশ পড়া পায়ের নীচে
যে শ্বেতপাথরের মেঝে,
তার বুক জুড়ে সমুদ্রের গর্জন শোনা যাচ্ছে-
তুমি কি শুনতে পাও ওদের ডাক?
মৃত কোরালের অজস্র অবুঝ স্রোত
তোমার পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলি ছুঁয়ে
জড়তার আড়ালে আনন্দে অমর হয়ে যাচ্ছে,
তুমি কি বয়ে নিয়ে যেতে চাও সেই আনন্দভার?
বহুতল বারান্দায় দাঁড়ানো কোনো এক বিকেলে
ও তোমার সর্বাঙ্গে বাতাস খেলতে দেখে
খিলখিল করে হেঁসে উঠছে,
তুমি কি খুঁজে পাও বাৎসল্য সেখানে?
যদি তুমি আমার এ-সকল কথা বুঝতে পারো,
তবে এক ভরা পূর্ণিমা রাতে
কোনো এক শ্বেতপাথরের ইমারতের সামনে এসে দাঁড়িয়ো,
চোখ বন্ধ করলে, সেখানে জোয়ার-ভাঁটা দেখতে পাবে।
কবির ফিকশন
ভ্রমরের ডানায় চেপে ‘শব্দ’
বঙোপসাগরে এক বৃষ্টির রাতে পাড়ি দিল।
একটা নতুন দ্বিপপুঞ্জ খুঁজে পেল অচিরেই।
যা মানচিত্রে নেই। যেখানে এখনও শুধু ঘন নারকেল গাছ সারি, আরো অনেক গাছ-গাছালি।
আর অবিশ্বাস্য কয়েক লক্ষ জোনাকি
একজোটে পরিচালনা করছে একটা লাইট হাউস।
শুধু এই ঘরের মধু চাখবে বলে ‘শব্দ’ গেল দ্বিপে,
ভ্রমরের ডানায় ব্যথা উড়ে উড়ে
বৃষ্টির দাপটে এলোমোলো হয়ে যায় পথ
‘শব্দ’ যায় বেঁকে, ঝোড়ো হাওয়ায় ভ্রমরের
মনে পরে ভারতের বাংলার এক পুকুর পাড়ে
জলপাই গাছের সবচেয়ে বড় ডালে
তার জন্য অপেক্ষায় প্রেমিকা। ভ্রমরের প্রেমিকার
বড় দুঃখ, কালাপানি ফেরৎ প্রেমিকের সাথে
আসছে অঘ্রাণ আরণ্যক সংহিতা মতে পরিণয় হবে,
আর সে কিনা ‘শব্দে’র সাথে অত দূরে গেছে!
তাও আবার নিছকই কবির চাহিদায়!
কবি চায় বলে শুধু ‘শব্দ’ আর ভ্রমরের ভার পড়ে,
তারা গভীর আদিম জঙ্গলে আর দ্বীপে
দিনরাত শুধু মধু খুঁজে যায়, কবি চায় বলেই
ভ্রমরের প্রেমিকার দুঃশ্চিন্তা ঘন হয়,
স্রেফ কবি চায় বলেই, জোনাকির লাইট হাউসের ভেতর শুধু মধু নয়, অপরূপ সুন্দর এক রাজকন্যাকে পাওয়া যায়, সে রাজকন্যাও বসে বসে কাঁদে…
তারপর আসছে অঘ্রাণ মাসে
ভ্রমর আর ভ্রমরের প্রেমিকা,
আর ‘শব্দে’র সাথে রাজকন্যার বিবাহ হয়,
কবি চায় বলেই আসছে অঘ্রাণ মাসে
সক্কলের নিমন্ত্রণ পত্রে ‘যদিদং হৃদয়ং তব, তদিদং হৃদয়ং মম’ লেখা হয়।
১৮৯৯ জীবন
শিক্ষিত নেটিভের দল সদ্য আরামের স্বাদ পেয়েছে,
গোপন অঙ্গের চারিধারে গজাচ্ছে কচি ঘন কেশ!
কবি জন্মালেন সবুজ শিকড় পর্যন্ত, বুক জুড়ে
রাতের আকাশের তারা আর শরৎ মেঘ,
দু চোখের পাতায় তখন তুলসি পাতার
অদৃশ্য নিরন্তর প্রলেপ।
কবির বেপরোয়া যুবক বয়সের ধাঁচে গড়া স্বপ্ন,
ওদিকে দেশে ফিরে এসেছেন মহাত্মা গান্ধী।
দিকবিদিক আলো-ছায়া-প্রেমিকা ছুড়ে ফেলে
এ কেমন নতুন ঝড়! এতো শান্ত ঝড়!
এতো নিয়মের নাগালে মুক্ত চিন্তার দম বন্ধ হত্যা!
কবিরা প্রতিবাদী হয়।
কবিরা জন্ম থেকেই স্বাধীন হয়।
কবিদের দেশ আকাশ- মাটি- আলোয় গড়া।
কবিরা দেশকে দশ হতে দেখতে পারেনা
তাই একদিন সভ্যতার যন্ত্রণায় হাসতে হাসতে
সব ছেড়ে চলে যায়।
ভাববার বিষয়
এই যে আমরা ভাবি
পথ দিয়ে চলব
অথচ
পায়ে লাগবে না ধুলো, মাটি, বালি।
এই যে আমরা ভাবি
ভাবতে ভাবতে চলি আর
হোঁচট খাই না
পথ পেরোই না
কাক দেখিনা
এই যে আমরা ভাবি
কালো বেড়াল পথ কেটেছে
সামনে হেঁটেও দাঁড়িয়ে তাকাই,
ভাবি
এই যে আমরা ভাবি
ভাবতে ভাবতে
সময় ফুরোয়, পথ হেঁটে যায়
পথভোলা লোক
আমরা শুধু দাঁড়িয়ে থাকি, মাদাম তুসো!
মৃত্যু ঘনায়।
ফির কাভি
সচকিতে চায়,
আলোর উষ্ণায়ন মেনে নিয়ে
হেঁটে যাওয়া সেদিনের পুরু জোৎস্নায়।
খেলা ফেলে যায়
অযাচিত মেরু পথ আকড়ে ধরেছে সে
মন পড়ে আছে তবু
স্রোত চায়।
হাওয়া দিল যেই
ফুলের রেণু মেখে উড়ে যায়
ফুরুৎ আলোর চোখে
দেখা মিলেছে
মেঠো পথ ফিরে তবু খোঁজ নেয়,
ফিরে ফিরে চায়।
রুকমিনি বিজয়কুমার
প্রেমে পড়ার জন্য বিয়ে করাটা কি জরুরী?
তুমি তো বিবাহিত শুনেছি
অথচ তোমায় কি প্রচন্ড ভালবেসে ফেলেছি।
সেই নৃত্যের আলোকে পুনর্জন্ম হয়েছে আবার
বৃষ্টিস্নাত গাছের ছায়ায় শৌখিন মর্মরে
নেশাতুর ভ্রমরের মত একবারও পলক না ফেলে
শতশতবার শুধু তোমার দিকে চেয়ে থেকেছি
কি প্রচন্ড আলো আছে, কি প্রচন্ড প্রাণ আছে জঠরে
কত কতবার ভুল করে মানবীকে দেবী বলে ফেলেছি
ভুল করেছি, বড্ড ভুল করেছি
অথচ কি প্রচন্ড তোমায় ভালবেসে ফেলেছি।
গাছেদের শরীরে শরীরে বাতাসের যে
শাস্ত্রীয় খেলা করা, সেসবই শরীরে শরীরে তোমার
ছন্দে ছন্দে অলঙ্কার তোমার সৃষ্টিকলার –
সুন্দরী চিকন বনবীথিকার আড়ালে কি অপরূপ মায়াজাল বুনেছ, বাতাসের মত আমিও যে
ঘরহীন, গন্ডিহীন সেসব কি খেয়াল রেখেছ?
কি প্রচন্ড ভালবাসা জন্মেছে –
কি প্রচন্ড ভয় নাড়া দেয়,
শতশতবার আমি শুধু সেই হাসি দেখে যাব
তাতে যাক প্রান যায়- যাক প্রাণ যায়।
এই কবিকে আগে পড়িনি। খুব ভালো লেগেছে লেখাগুলি। কবিকে ভবিষ্যতের জন্য শুভেচ্ছা