চৈতালী চট্টোপাধ্যায়ের কবিতা
বাড়াবাড়িরকম
ভালোবেসেছ বলেই না…
ভালোবেসেছি বলেই না
আমার প্রতিটা কবিতায়,
রাস্তার আলোয় ঠোঙা-পরানো ফিসফিসে
লেখাগুলোতেও, তুমি হিরণ মিত্রের ছবির মতো লাল দাগ ছুঁইয়ে দাও।
বাকি থাকল তো কান্নাকাটি আর সাধাসাধির নতুন পাতা!
আমি শুধু রোজ দেখতে পাব,
মার্জিনে,লালরঙের জবা ফুটে আছে
হাওয়া
এই হাওয়া চৈত্রের দিক থেকে উড়ে এসে
নীলষষ্ঠিতে পৌঁছোল।
তারপর বিরহসকাশে চলে গেল।
এ বিরহ মানুষের জন্য নয়।জল খেতে না পাওয়ার।
এ বিরহ প্রেমের জন্য নয়। অন্ধকারে, গেঁথে-থাকা উজ্জ্বলতার।
এ বিরহ তোমার-আমার নয়,জেল-খাটা নিরীহের ফিরে আসবার।
এ বিরহ মৃত্যুর জন্যও নয়,
যে রয়েছে বেঁচে তার থেকে,দূরে চলে যাওয়া শুশ্রূষার।
হাওয়া ঘাম মুছে মুছে দিল
রাষ্ট্র
দু্র্নীতির পাশে বমি রেখেছিলাম।
হাসপাতালগুলোর উঠোনে ডাঁই-করা আবর্জনা,আর,
ধর্ষণের পাশে,রক্ত বসিয়েছিলাম।
গাছে গাছে থোকা থোকা জনকল্যাণ ফুটে আছে।
যারা শুঁকছে,ভেঙেচুরে যাচ্ছে মুখচোখ…
কিংবা, পাগলের প্রলাপ বকছে।
দেখা হোক বা না হোক,
ফেরা হোক বা না হোক কাছে,
মনে রেখো আমার কথা!
মনে রেখো, ঠাণ্ডা ছেলেমেয়েদের জন্য কিছু আগুনের ব্যবস্থা আনতে গিয়ে
একদিন পুড়ে গেছিলাম
জেলখানা
মন তো পোড়ে না। তবে মুখ পুড়ে যায়।
একটা লক-আপ থেকে অন্য লক-আপে যেতে যেতে
পথিমধ্যে বারুদের বাস রেখে যায়!
ধুলোবালিদের সঙ্গে কথা বলি বেশ।
কোনো মতান্তরের চাপ নেই।
স্মৃতিও বাড়ন্ত। শুধু, সামান্য তেতো,কষা রেশ!
মৃত্যুশালায় এই, ইচ্ছেরা মস্ত অভাবী।
চাইতে জানে না।গলা অবধি দেয়াল। তাই টের পাই।
না-থাকা পরজন্মের মধু ভাবি!
একটা ভূতুড়ে কবিতা
আমাকে প্রেতিনী মনে হয় না তোমার?
আমার যাপনে তুমি কত না নিয়ম ঢেলেছ!
হাওয়ামোরগের মতো, বাতাস বইয়ে দাও, আমি বিপরীতে ঝুঁটি রাখি।
যেমন চেয়েছ,শব্দ শাসনে ঢাকি।
চোখ বুজে থাকি।
তবু টের পেয়ে যাই ঠিক,
গা-ভর্তি, হাসপাতালের গন্ধ নিয়ে
চার নম্বর পুলে বেঁকে যাচ্ছ।
রাতে,ঘুমঘোর।,তুলো ও জ্যোৎস্না পাশে, শুয়ে আছ আজ।
সুসুম্না,ইড়া,পিঙ্গলা,চঞ্চল হয় আর,
সব দেখে ফেলি…
বলো,আমাকে প্রেতিনী মনে হয় না তোমার?
খুব ভাল লেখা । সবকটি কবিতাই ভাল লাগল ।
অসাধারণ কবিতাগুচ্ছ । চৈতালী চট্টপাধ্যায় আমাদের কালের এক অনন্য কবি । সময়ের সহযোগী এই কবিতা পড়ে আমার খুব ভালো লেগেছে । আনন্দ অভিনন্দন ও শুভ কামনা জানাই প্রিয় কবি ও আবহমান কে।
Abohoman e prokashito ei kobita abohoman er..
মার্জিনে, লালরঙের জবা ফুটে আছে ❤️❤️❤️
বাকিগুলোও ভালো লাগল। বিশেষত রাষ্ট্র আর ভুতুড়ে কবিতা
সব কটি কবিতাই ভালো লাগল।