
সুবীর সরকার-এর কবিতাগুচ্ছ
গান
জলমগ্ন শহরে সেদিন কি গান শোনাতে চেয়েছিলে?
ভেসে আসছিল শিস।
শিস বদলে যাচ্ছিল বাজনায়।
আমি তখন দর্শকের ভূমিকায়।
বিয়োগান্তক নাটকের ভেতর পাখিরা
ডাকছে
বাঁশবাগানে জোড়া পুতুল।
আঞ্চলিক হতে গিয়ে শুনি অঞ্চলকথার গল্প।
গল্প
মাঠের মধ্যে কাকতাড়ুয়া।
রোদের মধ্যে ডুবে আছে আঙুল।
মাদুর গুটিয়ে বাড়ি ফিরি।
বৃষ্টি না নামলেও ব্যাঙেরা
ডাকছে।
এক নদী থেকে আরেক নদীতে যেতে যেতে আমাদের
পদস্থলন হয়
হাসপাতাল
বারবার ছুটে যাই ভোরের হাসপাতাল।
সাদা হাঁসের পুকুর।
উঠোনে শুকোতে দেওয়া ধান।
আঁচলের ছায়ায় চিরচেনা
শ্যাওলা।
এই যে উত্তেজনাহীন বেঁচে থাকা
গোলপোস্টের নিচে ঘুমিয়ে পড়া
গোলকিপার
কোলাজ
ভাঙা হাটের সব মানুষকে দাবা খেলতে
ডাকি
দুপুর জুড়ে হাই ওঠে।
তেজপাতা ও তরমুজ প্রিয় হয়ে উঠতে
শুরু করে।
আসলে তো মেঘের দুপুর।
দানাশষ্য ভিজে যাওয়া দুপুর।
দূরে সরে যাওয়া নদী।
দূরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া
বন্দর।
বৃত্তান্ত
তদন্ত সাপেক্ষ বিষয় নিয়ে কথা বলি না
শরীরে আলস্য জড়িয়ে এস্কিমোদের দেশের
ছবি দেখি
সতর্কতা ভেঙে গেলে
চিমনি থেকে ছাই উড়ে আসে
দৃশ্য থেকে দৃশ্যে যেতে যেতে দেখি
পেরেক ও পরিখা
ফুটো হয়ে যাওয়া তাঁবুতে ঢুকে পড়ে
ফড়িং
মিউজিক রুম থেকে
এদিকে ধান তামাকের গল্প।
শিকার আর শিকারির গল্প।
জন্মান্তর থেকে উড়ে আসে
রুমাল।
মিলিটারি ছাউনির পাশে কাকে রেখে এলে?
প্রবেশ ও প্রস্থানের রাস্তায় হ্যাজাকের
আলো
আবহসঙ্গীত
দূরের জঙ্গলে স্নানাগার।
কাছের জঙ্গলে মিউজিক
রুম।
সাইকেল চলতে শুরু করে
রিপিটেশন পেরিয়ে কোথাও যেতে
হয়
জলমগ্ন শহরে ঢাক ঢোল।
জলমগ্ন শহরে কেবল পাশ ফেরার
শব্দ