
কৃষ্ণালক্ষ্মী সেন-এর কবিতাগুচ্ছ
টুকরো মুহূর্ত, টুকরো যাপন
৪১
কেবলই বিকেলের ঝড়ে
উড়ে উড়ে ঘুরে ঘুরে, শুকনো পাতার মতো
ক্লান্ত লাগে খুব
জীবন, মাঝে মাঝে ভাবি, তেতলার ছাদ থেকে উড়িয়ে দেওয়া পালক
৪২
সেই মরা মাছটির চোখে ছিল এমন ধূসরতা
শহরে আজ কুয়াশা এসেছে খুব
ট্রেন আসছে কি? রেলপথ ওইখানে ঝাপসা।
সে চলে যাবে
সে তার খাতায় লিখে রেখে যাবে—
‘কেউ নেই কথা বলার আর… কেউ নেই…
আমার আর কেউ নেই কথা বলার…
আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছি…’
৪৩
ছাদের অন্ধকারে, দেখি, রাতের পেঁচাটি চোখ মেলে বসে আছে
ওর উপর ঝরে পড়ল কুয়াশার জল
চিলেকোঠা ঘরে আমাদের ভালোবাসা কেঁপে উঠল
এবং দূরের তারাটিও
৪৪
একে একে জ্বলে উঠল, তিনটি তারা, সন্ধ্যের আকাশে
সেই আলোয় আমি দেখি
তোমার ঢেউখেলানো চিবুক
সেই আলোয় আমি দেখি
শহরের অলৌকিক মুখ
সেই আলোয়
প্রেমিক প্রেমিকারা হেঁটে যায় নরম হাওয়ার দিকে
এবং সমস্ত অন্ধকার আমাকে সবকিছু মনে করিয়ে দেয়
আমার দুই হাতের ভিতর তোমাকে টেনে নেওয়ার পর
৪৫
মোবাইল পড়ে থাকে।
মেসেজের কোনও উত্তর আসে না
শ্যাওলাধরা পাঁচিলের ওপাশে
সন্ধ্যের অন্ধকার নেমে আসছে
রাত্রি হলে সমস্ত সফল মানুষ
আর একটু সফলতার হিসেব কষে
বিড়ালের মতো যারা চলে গেল নিঃশব্দে
তাদের আমি কিছু বলতে পারিনি
শুধু তাকিয়ে দেখেছি
কৃষ্ণা দ্বাদশীর চাঁদ উঠল আকাশে, এইমাত্র