
শ্যামশ্রী রায় কর্মকার-এর কবিতা
জন্মদিনের কবিতা
একটি বছর গেল, ফুৎকারে বছর নেভাই
টেবিলে সাজিয়ে রাখি কানাভাঙা প্রেমদানী, ফুলে ফুলে ঢাকা
শূন্য সাজিয়ে রাখি গোধূলির হাতে
সব কি নিভল তাও?
গর্ভপাত , মৃত্যুশোক,
আন্দোলন মিটে গেলে সব রক্তদাগ মুছে যায়?
গত শতাব্দীর রোদে পিঠ দিয়ে বসি কিছুক্ষণ
গোকুলপিঠেয় ভরা শালপত্রের নাও
ভরা পায়েসের থালা, দূর্বাদি, ধান
পাশের বাড়িটি অশ্রু
ছেলে হারিয়েছে দূরদেশে?
ঠাকুমার কবেকার ভাঙাস্বর থেকে
স্নেহ-ক্ষীরগন্ধ ফুকার দিয়ে ওঠে
যার গেল, তার গেল
যার গেল, তার গেল
তোদের বালাই দূরে যাক
হে জন্মদিন, বল দেখি
তোমাকে এভাবে পালনের ঠিক কী অর্থ হয়?
ফসলের গ্রিড ছুঁয়ে বেঁকে যাচ্ছে রোদ্দুরের গ্রাফ
ব্যর্থতা পাখির শিস, বাজতে না বাজতেই
মিশে যাচ্ছে পরিযায়ী দখিনা হাওয়ায়
দুপুরের প্ল্যাটফর্ম ধরে আমি হেঁটে যাই
অনিশ্চিতের দিকে, মনে মনে ভাবি
এই হাঁটা কি নির্ধারিত ছিল?
স্টেশনে মাটির ছেলে, অক্ষরচুম্বনহীন
নিজের অবুঝ প্রেমিকাকে
পরম অন্ন আর আয়ুর সংযোগটুকু
বলে যায় স্মিত উচ্চারণে!
দেশজ রীতির অর্থ নিজের মতন করে
বুঝিয়ে দেয় সহজ অভ্যাসে!
তার ভাষায় তো দুধগন্ধ, উচ্চারণে অপরিশীলতা
আমি তবে কেন তার শিববর্ণ পায়ের আঙুলে
খুঁজে পাই লুপ্তরেশ দ্বাপরের রেণু!
অক্ষিগোলকে কেন ছায়ালিপি হতে দেখি
অক্টাভিও পাজের কবিতা!
নিষ্ক্রমণ সিরিজ(১)
লুপ্ত নদীর খোঁজে কেন যাও দিঘল বালক
এখনও তো দুধগন্ধ তোমার নিশ্বাসে
লুপ্ত হওয়াই তার ভবিতব্য
খোঁজাটি তোমার
কীভাবে লুকাবে বল তোমার এই লবঙ্গ-স্বভাব
অন্তর্ঘাতে জেরবার দুর্ভাগা শহরের
আপাতরেশম রাজপথে
এই যে তোমার মা তোমার গন্ধ পেয়ে
চিৎকার করে কাঁদলেন
তুমিও শুনেছ
তুমি তো এগিয়ে গেছ মনে মনে, দেহটি এগোলে
ফেরা যায় তবু, দাহ ভোলা যায়,বালি ও কাঁকর
ঝেড়েধুয়ে ফের ঘরে ঢোকা যায় প্রিয় শস্যদিনে
মন ফেরে? বল তো হে!একবার!
মন ফেরে? ঠিক?
খুব সুন্দর।
ধন্যবাদ 🙏
patrika pore bhalo laglo!