
বিজয় সিংহ-র কয়েকটি চতুর্দশপদী
ম্যাজিক
মহানিশা খেলে চাঁদ কতভাবে ম্যাজিক দেখাও
মধু দাও লিবিডোতে না-বিষাদে ছড়াও মধুর
ম্যাজিক চন্ডালবীণা অ-শরীরে তার গুহ্য সুর
গুচ্ছতত্ত্ব দেহ পায় দেহকান্ডে শহর বসাও
শব্দ কিম জংউন শব্দই আতুসি শীতকাল
শব্দে শব্দে বিয়া দিয়ে ফুলসজ্জাও শব্দে বসাও
যোনির গহ্বর থেকে শব্দসর্প বার করে খাও
শব্দে ডাকো আড়বাঁশি সুর ধরে বিছানো হৃজাল
পরন্তপ রজনীতে গাঢ় রাত ধরে রাখে নীলে
রাতের পাখিরা এসে বীজ বোনে অপার নিখিলে
নিখিলের স্বর্ণঘটি পূর্ণ মোমজ্যোৎস্না মেশা মদ
জোছনায় মহাযোনী ভরে রাখে প্রগাঢ় পারদ
আগুনে পোড়াও স্তন ধ্বনি পোড়ে শব্দ-অভিঘাতে
গরীবের ধড়মুণ্ড ভেসে যায় রতিগ্রাহ্য রাতে
সংহার
যে বিষাক্ত পাত্র হৃদিযন্ত্রে রাখো অলীক ভার্সের
যে কম্পন তার জেরে থেকেছি তড়িতাহত হয়ে
ভুলে গেছি মৃত্যুতেই জন্মান্তর জন্ম বিনিময়ে
কীভাবে ছিলেন একা অলোকরঞ্জন ডুয়ার্সের
পাখিরা ফিরলেই ভয় লাগে যদি চিনতেই না পারে
রক্তের পুরনো গন্ধে বাসা বাঁধছে বেহুদা ভাইরাস
সেরিব্রামে বিদ্যুতিন উল্টে দেয় মদের গেলাস
অজ্ঞাত মরহুম যেন কেঁপে উঠি স্বকৃত সংহারে
সংহারও নিষাদ দুষ্ট নিষাদের মুণ্ডমালী আঁখি
অবিনাশীর গুহায় কবিরা লিখেছে ল্যাপটপে
শব্দ নীচে কালধ্বনি স্রোত ঊর্ধ্ব চতুরঙ্গ নীলে
ত্রিকালের ঘন্টা বাজলে সন্ন্যাসীও দেখেন নিখিলে
অশব্দের ভস্মরতি নিয়ে ওড়ে মৃত্যুখাগী পাখি
হৃদেশের গুচ্ছকাব্য ঢাকা থাকে ধুতুরার শবে
আহুতি
চাতুর্যময়ী তোমার যে শৈলী অন্তিমে এসে দেখি
ফুলতলা একা বৃক্ষ চরাচরহীন ডানাহীন
যেন অমেঘে বিদ্যুৎ যেন অজলে তড়পাচ্ছে মীন
আহুত বৈরাগী গান যেভাবে ফেরায় লেখালেখি
বৈরাগীর কণ্ঠী থেকে আহা ঝরে আনন্দী রোদের
মায়া লঘু একতারা অনির্দিষ্ট থেকে ডাকে পাখি
যা কিছু অশত্থ যত অবন্ধনে ধায় পাখি-আঁখি
চরণের ঘুঙুরেরা গোলার্ধের সব ঋণ শোধে
চাতুর্যকলাপহীন আমি নিত্য অন্তরিন হয়ে
গহীনের আত্মা ছেনে ছুঁয়ে দেখি যে সরস্বতীর
জিহ্বা চায় রক্তমাংস সে তিনিও সংস্থিতা বিদ্যায়
আমার সংকেত ফলে ভিজে ওঠে শোনিতে আঠায়
হাঁসেরা রঙ্গিলা যত অবিদ্যাও মৃত্যুলিপ্ত জয়ে
আরক্ত তণ্ডল নেন দুই হাত অপূর্ণ যতির
ডাকঘর
আরক্ত ফোয়ারা পাশে শিশু হাড়ে গজানো অশোক
আরব্যরজনীর এই দেশে খোজা লালনের লাশ
নিয়ে ঘোরে পয়গম্বর মেয়েদের যোনি খায় জোঁক
উন্মাদের ভোর নামে বালিয়াড়ি ফেলেছে নিঃশ্বাস
দুচোখ খুবলিয়ে চঞ্চু পাখিরা আকাশে করে ফিরি
ষাঁড়েদের সিঙে নেশা উত্থিত পুরুষ তার লাল
বেচে কিনে ফের বেচে ধর্মচ্যুত রাজন্য ভিখিরি
তুমি ত্রাতা পয়গম্বর ছুঁয়ে দাও ছেলের কপাল
আমি শেষ-অন্ধকার খুঁজে ফিরি তারার আগুন
আমার আগুন নিয়ে যৌনমেঘ হয়েছে ফেরার
না-বাস্তবে পলাশেরা ছিল পরাবাস্তবে ফাগুন
কঙ্কালেরা কড়ি খেলে স্যাটান মালিক অপেরার
ডাকঘর ছিল স্বপ্নে চিঠি ফিরি করেনি প্রহর
লালনের লাশ নিয়ে দুলে উঠছে নরকের ভোর
বৈবাহিক
যেসব ভূগোল ঘেরা অনিত্য সীমানা গাঁথা ফুলে
যেসব ফুলের মধ্যে প্রসূতি কামনা পতঙ্গের
যেসব প্রসবে কাঁপে উচাটন যমী ও যমের
তবু কারু রঙ্গোলির পৃথিবীর মাথাভর্তি চুলে
তবু বর্ষপূর্তি ভুলে আমাকে তাড়িয়ে ফেরে নীল
কন্দর্পমূর্তির চোখে ছায়া ফেলে রতির ভিখিরি
শিয়ালেরা গর্ভ খুঁজে শৃগালীরা জ্যোৎস্না করে ফিরি
বাঘিনীর শূন্য গুম্ফা বাঘ রক্ত চাটে নিখিলের
আমাকে গিলেছে ভোর গর্ভাশয় রাত্রিমেঘে ভরা
রাত্রিমেঘ খুঁড়ি জল খুঁড়ে খায় অসার্থক জরা
আমার জন্মের নথি পুড়িয়ে ফিরেছে মহাশোক
গিলেছি আমিও বজ্র দাঁতে জিভে শিখাদের হাড়
পেটভর্তি ছাইভস্ম হৃদিব্রহ্ম করেছে অসাড়
অপূর্ব গেরস্থ ফুল আগুনের বিবাহিত হোক
আয়ু
আয়ুষ্কাল ছড়িয়েছি তন্তুজাল নড়েছে বাতাসে
চন্দ্রকলা খুকুদির তন্দ্রাকারে কুয়াশা এখন
মায়ের অনতি গান ময়ূর বাংলোর সুখীকোণ
বেশুমার প্রজাপতি ফুল ছেড়ে হুমড়ি খায় ঘাসে
আয়ুষ্কাল সন্ধি চায় তন্তুজালে জড়ায় আঙুল
খুশবুদের মনে আছে? মিতাক্ষরে ছায়াপাত আর
আটাত্তরে কী আগুন লেগেছিল মল্লিকা বাহার
পড়ে ঘুমোনোই দায় ছিল জানি নিশীথের ভুল
দেগে আছে কপালের চুল ঢাকে নোনা খাওয়া ক্ষত
জানি আগুনের তাপ পাশে বসে দিয়েছে শুশ্রূষা
অযাচিত ধর্মজল ক্রমাগত যুগিয়েছে ভাষা
ছায়া ততো বলেছিল যাও করো ফোয়ারা সংহত
আয়ুষ্কাল ঘুমিয়েছে তন্তুজালে কীটের কঙ্কাল
নড়ে ওঠে ফেরো প্রাণ ফর্মুলায় ফিরেছে সকাল
ভাল লাগল খুব
Anobodyo…..
ভালো লাগল প্রতিটি লেখা
খুব ভালো লাগল লেখাগুলি
ভালো লাগল