চিন্তার চিহ্নমালা ১৫ <br /> সন্মাত্রানন্দ

চিন্তার চিহ্নমালা ১৫
সন্মাত্রানন্দ

এইভাবে বহুদিন জীবনের পথে চলতে চলতে এই জগতটাকে একদিন কোনো কোনো আউটসাইডারের চোখে মনে হয় একটা রং তামাশার জায়গা। এই জীবনকে মহার্ঘ কিছু মনে হয় না আর তার। সে তখন যা ইচ্ছে তাই করে এই জীবন নিয়ে। ইচ্ছে হলে মুখে রং মেখে ক্লাউনের মতো সে ডিগবাজি খায়। চারিপাশে জমে ওঠে আসর। সে গান করে, গল্প বলে, ছবি আঁকে, দড়ির ওপর হাঁটে, ডিগবাজি খায়। চারিপাশে মানুষের মস্করা আর হররার আওয়াজ ওঠে। সেদিকে আউটসাইডরারের কোনো নজর থাকে না। সে যা ইচ্ছে তাই করে আপন খেয়ালে। তারপর খেলা যখন জমে উঠেছে, ঠিক সেই অমোঘ মুহূর্তেই সে হাওয়া হয়ে যায়। অদৃশ্য হয়ে যায়। তাকে আর খুঁজে পায় না কেউ।

বহির্বর্তী

কাম্যুর ‘দ্য আউটসাইডার’ জগদ্‌বিখ্যাত উপন্যাস; কতবার পড়েছেন, কতজনকে পড়িয়েছেন, কতদিন আলোচনায় মেতে থেকেছেন এ নিয়ে। শুধু কাম্যুর উপন্যাসের নায়কই নয়, ওই উপন্যাসের ‘আউটসাইডার’ বস্তুত একটি চারিত্র্য, একটি প্রথাবিরুদ্ধ নির্মাণ, সেকথা আপনি বিলক্ষণ জানেন। তবে জানা এক কথা আর সত্যি সত্যি আউটসাইডার হওয়া—সে অন্য কথা—যেহেতু ঝাঁকের কই হয়ে ঝাঁকে মিশে যেতেই ভালোবাসে পনেরো আনা লোক। তা ছাড়া আউটসাইডার তো ঠিক ‘হয়ে ওঠা’-র ব্যাপার নয়; আউটসাইডার যে, সে আউটসাইডার হয়েই জন্মায়, এমনই তার জন্মগত মনের গড়ন। এ সংসারে তার মতো বালাই আর কী আছে? অনেক চেষ্টা করেও সে পাঁচজনের মতো হতে পারে না, তবু এখানেই তাকে একটেরে হয়ে থাকতে হয় কোনোমতে, যতদিন না মৃত্যু এসে তাকে মুক্তি দিচ্ছে।

আপনি সমস্ত দিনের শেষে কাজবাজ সেরে সদর দরজা বন্ধ করে দোতলার ঘরে খাটে পরিপাটি বিছানা করে সস্ত্রীক ঘুমিয়ে গেছেন, মাঝরাতে হঠাৎ তেষ্টা পেল। উঠে জল খেয়ে আবার ঘুমোনোর তোড়জোড় করছেন, এমন সময় নজর গেল আপনার জানালার নীচে একতলার সদর দরজার কাছে কে একটা অপরিচিত লোক—ছেঁড়া জামা, নোংরা উলোঝুলো কাপড়, উড়িখুড়ি চুল মাথায় নিয়ে বসে আছে। মাতাল কিংবা পাগল কিংবা ভিখিরি। ব্যাপারটা তেমন কিছু না। অন্তত আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটানোর মতো কিছুই না। তবু আপনি জেগে থাকছেন উদ্‌বেগে; রাত জেগে বসে বসে ভাবছেন, এই লোক উদয় হল কোত্থেকে হঠাৎ? আগে তো একে দেখিনি। এর মধ্যেই সে আবার তার চারিদিকে কতগুলো আলগা লোক জুটিয়ে ফেলেছে—এই রাস্তারই লোকজন সব। সে গান গাইছে, গল্প বলছে, মাটিতে রেখা টেনে ছবি আঁকছে আর তার চারপাশের লোকগুলো সেসব দেখেশুনে তালি দিচ্ছে। সে এমন তালিয়া যে জিন্দেগিতে আপনার কোনো কীর্তির জন্যেই আপনি অতখানি সাধুবাদ পাননি। এ আপনি মেনে নেন কী করে? আপনি চিরকাল ‘ক্লাস’-এর অ্যাপ্রিশিয়েশন পেয়ে নিজেকে তালেবর ভেবে এসেছেন, ‘মাস’-কে চিরকাল তুচ্ছতার দৃষ্টিতে অবজ্ঞা করে এসেছেন, যদিও আপনার পেটে পেটে ‘মাস’-এর হাততালি পাওয়ার আকাঙ্খা সারা জীবন ক্রিয়মাণ ছিল। এখন এ লোকটা বন থেকে বেরোল টিয়ে, সোনার টোপর মাথায় দিয়ে। তার সারা গায়ে কাঁটা অথচ ভেতরটা রসালো। এমন লঘু আনারসের চারিদিকে মাছির ভিড় তো হবেই—এই কথা ভেবে আপনার স্বভাবসিদ্ধ আরোপিত উপেক্ষায় তামাশাটা গায়ে না মেখে ঘুমোবার চেষ্টা দেখছেন, পাশে গিন্নির নাসিকাগর্জন উত্তরোত্তর বেড়ে উঠে আপনার সাতিশয় বিরক্তির কারণ হয়ে উঠছে, ঘুম আর তবু আসে না আপনার চোখে। আবার বেজার মুখে উঠে বসছেন, বুকে টক জল উঠছে, জানালার কাছে গিয়ে নিম্নদেশে দৃষ্টিপাত করছেন; লোকটা এখনও সেই নেচে গেয়ে গল্প কয়ে চলেছে। আর লোকগুলোও তেমন… তারই চারিদিকে ভিড় করে আছে! ওফ্‌, কী যে করা যায়!

ভালো করে দেখেশুনে আপনার এবার মনে হল, লোকটার গান গাওয়ার, গল্প বলার ঢং-টা যেন অনেকটা ঠিক আপনারই মতন। এমনকি লোকটার গলার স্বরটাও কেন যে আপনার মতোই লাগছে আপনার কানে? আপনার শৈলী চুরি করেছে নাকি লোকটা? ঝেপে দিয়েছে আপনার কথা কওয়ার কায়দা, আপনার ফ্যাশন স্টেটমেন্ট? এ তো ভারি অন্যায়! আপনারই শৈলী ঝেপে দিয়ে আপনারই রোয়াকে এত অল্প সময়ে ফুর্তি জমাবে? এদিকে কখনও আপনার সঙ্গে মিলছে, কখনও মিলছে না। কী মুশকিল! কে একে স্পনসর করে এখানে পাঠিয়েছে? খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে নিঃশব্দে আপনি ওপর থেকে লোকটার গল্প শুনছেন, গান শুনছেন, ছবি আঁকা দেখছেন। আপনার বিদগ্ধ, বিচক্ষণ মন দিয়ে সেগুলো বিচারও করে ফেলছেন, তারপর অসন্তোষভরে মাথা নাড়ছেন। না, না, একে কি গল্প বলে? ওটা গান হল বুঝি? আর এটা ছবি? না, না! আপনার পঠিত ব্যাকরণ অনুযায়ী গল্পের সংজ্ঞা, গানের সংজ্ঞা, ছবির সংজ্ঞার সঙ্গে এ পাগলের গান-গল্প-ছবি মিলছে কই? আরে পাগলে কি না বলে, ছাগলে কি না খায়?—এই ভেবে আবার বিছানায় ফিরে যাচ্ছেন। তবু ঘুম আর আসছে না!

তবে কি আপনি ঘুমে যাবেন না? যাবেন না আপনি ঘুমে?

আপনাকে নিশ্চিন্ত করি। নিরুদ্‌বেগ করি। দেখুন, আর কয়েক ঘণ্টা পরেই ভোর হয়ে যাবে। আর ওসব রাস্তার লোক, ফাতরা লোক, ভোর হলেই পেটের দায়ে এদিক সেদিক দিগ্‌বিদিকে ছড়িয়ে যাবে। ওসব কি আর স্টেডি অ্যাপ্রিসিয়েশন? ওসব হচ্ছে ফ্লোটিং ক্রাউড। এই আছে, এই নেই। আর উলোঝুলো চুলের ছেঁড়াখোঁড়া জামাগায়ে লোকটা, যতই প্রতিভাবান হোক, হুঁ হুঁ বাওয়া! অরগানাইজিং ফ্যাকালটি নেই! চারিদিকে দল গড়ে তোলার ক্ষমতা ওই শ্রেণির লোকের শূন্য। অন্ধকার মিলিয়ে যাওয়ার আগেই আপনার রোয়াকের ওপর থেকে অমনধারা পাগল লোক তার গল্প-গান-ছবি সমেত হাওয়া হয়ে যাবে। কাজেই, আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন, স্যার! আপনার সোনার তৈরি কীর্তিভূষণ তাজমহল যেমন অচল ছিল, তেমন অচল হয়েই থাকবে। চিন্তা করবেন না, প্লি-ই-জ! যান, নিরুদ্‌বেগে ঘুমিয়ে পড়ুন।

আপনাদের মহান দেশে মহান সমাজে সাত তলা রঙমহল ছিল যে! উপরের তিন তলায় সে কি জমজমে আলোর রোশনাই, জ্যোতির জলুস! ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্যদের আবাস। আর উপরের দিক থেকে চার নম্বর তালায় এলেই আলোগুলো টিমটিম টিমটিম করছে। এখানে শূদ্ররা থাকে। এর নীচ থেকে ব্ল্যাক-আউট। আলোফালো নেইকো! অন্ত্যজ, অন্ত্যজের অন্ত্যজ, তারও নীচে নামগোত্রহীন পারিয়ার দল। শ্মশানে অন্ত্যেষ্টি-ক্রিয়ার নেতা এই সব চণ্ডালরা আপনাদের সমাজে ব্রাত্য, বহির্বর্তী, আউটসাইডার। তবু তারাও তো ঠিকঠাক আউটসাইডার নয়, কেননা চণ্ডাল-সমাজেও আছে বিধি-নিষেধ, আছে তাদের নিজেদের মতন করে একপ্রকার সামাজিক নিয়ন্ত্রণ। তাহলে চণ্ডালশ্রেণির মধ্যে সেই যে একজন বারোশো বছর আগে খোদ শঙ্করাচার্যকে ঘাবড়ে দিয়েছিল, চিন্তায় চেতনায় সে ছিল চণ্ডাল সমাজেও বেখাপ্পা—এক্কেবারে সত্যিকারের আউটসাইডার!

ভোরবেলা গঙ্গায় স্নান করতে এসে পথিমধ্যে আচার্য শঙ্কর দেখেছিলেন সেই চণ্ডাল লোকটিকে। মদের নেশায় মাতাল হয়ে টলতে টলতে অশ্রাব্য কুশ্রাব্য কথা বলতে বলতে চারটে ভয়ালদর্শন কুকুরের দ্বারা পরিবৃত হয়ে সে পথ চলছিল। ভোরের আলোয় এমন মূর্তিমান চলমান-শ্মশান চণ্ডালকে দেখে শঙ্কর স্পর্শভয়ে সংকুচিত হয়ে বেদান্ত-টেদান্ত ভুলে চেঁচিয়ে উঠেছিলেন, ‘দূরমপসর রে চণ্ডাল!’ তার মানে, ভেবে দেখুন, এ বামনাইয়ের কী ভয়ংকর শক্তি! ব্রহ্মবিদকেও ব্রহ্মজ্ঞান ভুলিয়ে দেয়!

তা শঙ্করের অমন স্পর্শভয় দেখে সেই আউটসাইডার চণ্ডাল কতগুলো বিপজ্জনক প্রশ্ন করে। বড়ো বেয়াড়া প্রশ্ন সেসব। প্রথমেই সে জিজ্ঞেস করে—

অন্নময়াদ্ন্নময়মথবা চৈতন্যমেব চৈতন্যাৎ,
দ্বিজবর! দূরীকর্ত্তুং বাঞ্ছসি কিং? ব্রূহি গচ্ছ গচ্ছেতি।

-‘সরে যাও, সরে যাও’ বলে কাকে তুমি সরে যেতে বলছ, ব্রাহ্মণ? তোমার অন্নময় শরীর থেকে আমার অন্নময় শরীরকে সরে যেতে বলছ? তোমার এবং আমার উভয়েরই শরীর তো সমান অপবিত্র, মল-মূত্র-পূরিত! কাজেই সরে গিয়ে লাভ কী? অথবা, আমার শরীরের পেছনে যে-চেতনা আছে, তাকে সরে যেতে বলছ তোমার শরীরের অন্তরালবর্তী চেতনা থেকে? তাও তো অসম্ভব, কেননা চেতনা অদ্বিতীয় এবং সর্বব্যাপী। সরে যাবেটা কোথায়?

তারপর সেই চণ্ডাল প্রশ্ন করে—

কিং গঙ্গাম্বুনি বিম্বিতেঽম্বরমণৌ চাণ্ডালবাটীপয়ঃপূরে চান্তরমস্তি?

-গঙ্গায় প্রতিবিম্বিত সূর্য আর চণ্ডালবাড়ির পুকুরের জলে প্রতিবিম্বিত সূর্যের মধ্যে কি তফাৎ আছে কোনো?

তারপর আরও বেমক্কা প্রশ্ন—

প্রত্যগ্‌বস্তুনি নিস্তরঙ্গ সহজানন্দাববোধাম্বুধৌ বিপ্রোঽয়ং শ্বপচোঽয়মিত্যপি মহান্‌ কোঽয়ং বিভেদভ্রমঃ?

-নির্বিকার সহজ আনন্দস্বরূপ আত্মায় ‘এ ব্রাহ্মণ, এ চণ্ডাল’ ইত্যাকার ভ্রান্ত ভেদবুদ্ধি কোত্থেকে এল?

অবশ্যই এসব প্রশ্নের উত্তর শঙ্করাচার্য দিতে পারেননি। সমাজ কখনই এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে না। কিন্তু শঙ্করাচার্য মহান। তিনি তাঁর ভুল বুঝতে পেরে এই চণ্ডালকে গুরু মেনেছিলেন। ঘটনাটির উল্লেখ করে রচনা করেছিলেন ‘মনীষাপঞ্চক’, যেখানে তিনি গুরুরূপে প্রণাম জানিয়েছিলেন এই চণ্ডালকেই।

কিন্তু তা বললে কি হবে, বাওয়া? শঙ্করাচার্যের প্রধান জীবনীকার বিদ্যারণ্য মুনি। ‘শঙ্কর দিগ্‌বিজয়’ গ্রন্থে তিনি এই চণ্ডালকে বানালেন শিব। লিখলেন, শিব স্বয়ং এই আউটসাইডার চণ্ডালের ছদ্মবেশে এসে শঙ্করকে জ্ঞান দিয়ে গিয়েছিলেন। চমৎকার! একেবারে সাক্ষাৎ চণ্ডাল এসে ব্রাহ্মণ-সন্তানকে জ্ঞান দিলে চলবে কেন? মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে যে! অতএব, শিবকেই আসতে হল চণ্ডালের বেশ ধরে। অর্থাৎ জীবনীকারের মতলবটা হচ্ছে, সত্যিকারের চণ্ডাল সে নয়। হতেই পারে না! সে হচ্ছে ছদ্ম-চণ্ডাল! চণ্ডালের বেশধারী মহাদেব!

যাই হোক, আমি মনে করি জাতিধর্ম অনুসারে সে চণ্ডালই ছিল। শিবত্ব তার স্বরূপ। সে তো সব জীবেরই স্বরূপ—শিবত্ব! তাতে আর বিশেষ কী? কিন্তু বাহ্য সামাজিক বিচারে সেই লোক চণ্ডালই ছিল মনে হয়। তবু সাধারণ চণ্ডাল সে নয়। চণ্ডাল-সমাজেও সে অন্য রকম। বহির্বর্তী। আউটসাইডার। তাই তার মনে এই প্রশ্নগুলি উঠেছিল। এই প্রশ্ন করার সাহস হয়েছিল তার। তাই সে ব্যতিক্রমী।

এসব অস্বস্তিকর প্রশ্ন নিয়ে কিছু লোক জন্মায়। যে বাড়িতে জন্মায়, সেই বাড়ির বা সেই পরিবারের লোকজনের সঙ্গেও তাদের মিশ খায় না। কেমন যেন বেখাপ্পা তারা! স্কুলে যায়, কলেজে যায়, সবার সঙ্গে মিশতে চায়। মিশতে পারে না। ওই প্রশ্নগুলো তাদের জ্বালিয়ে মারে। কোথাও নাম লেখাতে পারে না তারা। বয়স হলে যদি বে-থা করে, তাহলে তার সংসার-জীবন ভিসুভিয়াসের মতো চারপাশে জ্বলতে থাকে, কেননা তার মনের ভাষা অন্যের সঙ্গে মেলে না। যদি প্রেম করে, তবে তাদের ভালোবাসার মানুষ পড়তে পারে না তাদের মনের কথা। যদি সাধু সন্ন্যাসী হয়, তবে সাধু-সমাজেও সে একটেরে হয়ে থাকে। অন্য সাধুরাও ভাবে, এ যেন কেমন আলাদা! বেমানান! বেখাপ্পা! যদি কবি হয়, যদি লেখক হয়, তবে কবি-লেখক-বোদ্ধাদের দৃষ্টিতেও সে দূরবর্তী, ব্রাত্য হয়ে থাকে। তার কথা কেউ বোঝে না। তাকে কেউ ভালোবাসে না। দূরে রাখে।

এমন আউটসাইডারের মনে হয়—
“সকল লোকের মাঝে ব’সে
আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা?
আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?
আমার পথেই শুধু বাধা?
… যে নক্ষত্র—নক্ষত্রের দোষ
আমার প্রেমের পথে বারবার দিয়ে গেছে বাধা
আমি তা ভুলিয়া গেছি;
তবু এই ভালোবাসা—ধুলো আর কাদা—।”

এইভাবে বহুদিন জীবনের পথে চলতে চলতে এই জগতটাকে একদিন কোনো কোনো আউটসাইডারের চোখে মনে হয় একটা রং তামাশার জায়গা। এই জীবনকে মহার্ঘ কিছু মনে হয় না আর তার। সে তখন যা ইচ্ছে তাই করে এই জীবন নিয়ে। ইচ্ছে হলে মুখে রং মেখে ক্লাউনের মতো সে ডিগবাজি খায়। চারিপাশে জমে ওঠে আসর। সে গান করে, গল্প বলে, ছবি আঁকে, দড়ির ওপর হাঁটে, ডিগবাজি খায়। চারিপাশে মানুষের মস্করা আর হররার আওয়াজ ওঠে। সেদিকে আউটসাইডরারের কোনো নজর থাকে না। সে যা ইচ্ছে তাই করে আপন খেয়ালে। তারপর খেলা যখন জমে উঠেছে, ঠিক সেই অমোঘ মুহূর্তেই সে হাওয়া হয়ে যায়। অদৃশ্য হয়ে যায়। তাকে আর খুঁজে পায় না কেউ।

আর তখনই যারা সোৎসাহে হাততালি দিচ্ছিল আর যারা দোতলায় তেতলায় চৌতলায় বসে এই রং তামাশার খেলা দেখতে দেখতে নানান রকম হিসেব কষছিল, তারা সবাই এক লহমায় একসঙ্গে আবিষ্কার করে, তারা নিজেরাই প্রত্যেকে আসলে ক্লাউন। সত্যিকারের ক্লাউন। আর যে লোকটা এতক্ষণ খেলা দেখিয়ে হাওয়া হয়ে গেছে, সে কোনো দিনই ক্লাউন ছিল না। সে ছিল একটি আদ্যন্ত আউটসাইডার।

( ক্রমশ)

CATEGORIES
TAGS
Share This

COMMENTS

Wordpress (1)
  • comment-avatar

    কী গতিময়। এ তো সেই চণ্ডালেরই রচনা।

  • demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes