
বর্ণজিৎ বর্মন -এর কবিতা
শব্দ তৈরি হয় প্রেমের নদীতে
অক্ষর অক্ষরে আমি আলোর ব্রহ্মাণ্ড দেখি ;
ভেসে আসে মেঘ উড়ে যায়
পাখির পালক-
সে সময় হেমন্ত মাঠে তারি জাল হয়
আদিবাসী নিত্য রাত্রি পর্যন্ত চলবে
আমরা ওই ক্যানপুকুরের পাকুয়াহাটের বেগুন বাড়ি গ্রামের কথা বলছি
শীতের সর্ষে ফুলের আলো আর সুবাস
আশ্চর্য জগত সংসার বানায়
আমি ঢুকে পড়লাম সেখানে
বোকা নদী একেঁবেঁকে চলে গেছে
জীবনের শেষ উদ্দেশ্যের উপদেশে
বাড়ি
আমার বাড়ি একটি বিশ্ববিদ্যালয়
বাবা ভি. সি .
মা ডিন
আমরা চার ভাই বোন ; ছাত্র ছাত্রী
সবাই আলাদা আলাদা বিষয়ে
গবেষণা করি ;
খিদে পেলে মা
লাইব্রেরীতে বসিয়ে খাবার দেয় ।
লাইব্রেরী হলো রান্না ঘর
বই খাদ্য
সুস্বাদু রান্না খাই রোজ
তবু মাঝে মাঝে
খিদে মেটে না- আন্দোলন করি
গলা ফাটিয়ে চিৎকার করি
মা ভাত দে –
বাবা ভাত দে-
সকাল গড়িয়ে গোধূলি
সন্তানের বুকের উপর জ্বর আছাড় খায়;
এখনো ভাত হয়নি-
আমরা চারজন কি খাব? এখন –
অসুস্থ হলে ক্ষুধা মন্দা হয়-
সব রাগ তার উপর ঢালি
শিরে-সংক্রান্তি
একটা গোপন জগৎ আমারও আছে।
তুমি কুরুশ কাঁটা বেঁধে দাও
রক্ত ঝরে না ।
ঝরনা হয় প্রতিদানের রূপ
চাঁদ আর শূন্য মাঠ পার হয়ে যায় কত
আশ্চর্য হাওয়া
বিজ্ঞান কি সব বলতে পারে?
মহাকাশে লিখে রাখি অনির্বাচিত প্রশ্নটা
দাগ আর ক্ষোভ যদি বৃদ্ধি পায় খাটো চুলে
নারীর কি বলবে তখন চিরুনিহীন কল্পনা এঁকে?
বন ডেকে ওঠে জঙ্গল প্রিয় হয় মন
সমুদ্র ঈশ্বরের নাভিকুঞ্জ
কবির প্রতিমা কবি করেন নিরঞ্জন
বাদ বাকি সবকিছু ফুরিয়ে যায়
সন্ধ্যা সাদা খাতা হাতে পাশে বসে
ফুরায় না শুধু
শিরে-সংক্রান্তির দিন ;
হেসে ওঠে মৃত্যু মুখ
সততা কত কঠিন
কঠিন অথচ
আয়না ভাঙার শব্দ
শুষে নেয় নীল আকাশ
শুধু তুমি আমার মুখ কে নিতে পারলে না
মুখোশের বিজ্ঞাপনে
ভাগ্যলিপি জুড়ে ঢেউ ওঠে
পাখি ওড়ে
অপেক্ষার ফুল ফুটে ঝরে যায়
বাসনার মালা পড়াব বসে আছি
বুঝলে না
হে রাষ্ট্র বুঝলে না
সমস্ত নদীগুলি মোহনায় চলে গেল
রাষ্ট্র শুধু জনগণের কাছে পৌঁছাতে পারল না আজও
জনগণ তুমি স্বপ্ন দেখো ভোরের বিছানায়
একদিন পৌঁছাবে তোমরা
এই রাষ্ট্রের কাছে
মুষ্টিবদ্ধ হাতে মশাল জ্বালাবে
পাওনা
হটাৎ
ফোন করেছিলে আজ
ইউনিভার্সিটি যেতে;
কত বিনিদ্র যামিনী করেছি পার
স্বচ্ছ নরম বুকে
বিঁধে কাঁটাতার
তুমি কেন? ডাকলে উজবুক প্যাডলারকে
আগুন জ্বালিয়ে দিলে গোলাপহীন মরুভূমির দেশে
মিস্ কল কেন আসে
কম্বল বিহীন গাঢ় শীতে
সব মেসেজ, প্রতিজ্ঞা
ভেসে গেছে মহানন্দার কূলে
বাঁশি ফুলের মালা
বঞ্চনার তাপ দিয়ে কেন?
জাগালে
এ মরণ জ্বালা
প্রতিবাদীর বিকেল
তারা ; ভরসন্ধ্যে বেলা
দু আটি খড় আর গাভীন বাতাসীকে
তুলে নিল টেম্পুটে-
অরু হায় হায় !
কপালে দাউ দাউ হাত;
গবাদি-
অশ্রু বিসর্জনে ঋণ পরিশোধ ।
দুই নম্বরী তপস্বী
আগুন চোখে বলে
পঞ্চায়েতের এগেনেস্টে দাঁড়ালে
তোর স্বপ্ন, গৃহিনী নেক্সট নেব তুলে
এখন তার সুখ লবন মিশিয়ে খাবার কথা
অথচ দু বিকেল জুড়ে সিদ্ধ হয় না তা ।
সমাজে অন্ধদল পাখি
এইরুটে করেছে স্বার্থসিদ্ধি
ঠান্ডা মাথার লোক
নদীর শরীর ঘেঁষে বসে ছিল দুঃখ
রোদ আর কুয়াশা মাখামাখি
ওই দূরে
এবং একটু দূরেই পিতার শ্মশান
অচেনা পাখিটি বলল
সুখের ফুল মায়ের আঁচলেই
তুমি পাবে
অপেক্ষার নদীতে 32 বছর নৌকা চালাচ্ছি ছেঁড়া পালে আজও
সাদা খাতা জমা দিতে পারিনি
শিক্ষকের কাছে
ভেসে যাচ্ছে বয়োজ্যেষ্ঠদের আশীর্বাদ
টমেটো সস সঙ্গে চুম্বন
সবুজ ধানক্ষেতের আড়ালে থেকে তাকাতাম
লেবু তুলতে ,লাল শাক তুলতে, আর পটল ক্ষেত একটু নড়ে উঠত
লাউ পাতায় লাগত তোমার ওড়নার হাওয়া
কেপে উঠতো লাউ ফুলগুলো
যেমন নদীর ঢেউ গুলো আর একটা ঢেউয়ের উপর টেক্কা দিয়ে যায়
সজনে পাতা আর ঝিঙে ফুল গল্প করত
আমার কানে চোখে দু একটা ধানের পাতা শিশিরের গান শোনাতো
ভোরের রাধা বৃত্তান্ত স্মরণ করিয়ে দিত
তখন আমি দূর্বা ঘাস
হয়ে শুয়ে থাকতাম পথে
তুমি পা চালিয়ে যেতে আমার বুকের উপর
আমি উদ্বেলিত হয়ে থাকতাম একটু উষ্ণতা পাবার জন্য
সেই আকাঙ্খাকে টমেটো সস এর সঙ্গে চুমু মিশিয়ে দিতাম
তারপর কেমিস্ট্রির খাতা খুলে গোধূলির ছবি আঁকতাম সক্রেটিস কতগুলো কবিতা লিখেছিলেন তা কেউ জানি ? কাল মার্কস কবিতা লিখেছিলেন জানি
তার ব্যপ্তি বিশ্ব ছুয়ে ঝলমল করছে
অনেকে জানে না সেভাবে
পাঠকের কাছে প্রেমপত্র আসেনি যেমন আমার প্রেমপত্র তোমার কাছে পৌঁছায়নি এখনো
বদল হয়েছে বিরহের সুর
সময় বদলে যেতে যেতে নদী ও বদলে গেছে
তার চিঠি পাঠানোর ঢঙ্গে
এখন তো বাঁশি বাজে ইলেকট্রিক যন্ত্রে –
রাধা ও এখন মিস কল দেয় গভীর রাত্রে
হৃদয়ের মোবাইল জুড়ে গীতবিতান বেজে ওঠে