
অজিত সিং বনাম অজিত সিং
পর্ব ৪৭
তৃষ্ণা বসাক
৪৭
এখানে আসার পর যে জীবন তা আগের জীবনের থেকে যে একদম আলাদা, সেইটুকু বলাই যথেষ্ট নয়।এই জীবন একেবারেই অন্য তলে। একটা গরু আর একটা ছাগলকে যেমন যোগ করা যায় না, তাঁর এই দুটো জীবনও তেমন, যেন ভার, ভর আর সময়ের মাপ সব আলাদা। ওই যে দৈর্ঘ্য, প্রস্থ আর উচ্চতা ছাড়াও একটা চতুর্থ মাত্রার কথা বলা হয়, সময়, সেই সময়টাই শুধু নয়, একটা পঞ্চম মাত্রাও আছে। সেটা হচ্ছে দৃষ্টিভঙ্গি। এতদিন যে দিকটা থেকে তিনি দুনিয়াকে দেখেছেন, এখন ঠিক উল্টোদিকে এসে পড়েছেন। তিনি যে দিকে বেঁচে এসেছেন, এখানকার মানুষরা সবাই তার উল্টোদিকের বাসিন্দা। এদের দেখে তিনি বুঝতে পারছেন শুধুমাত্র ভাত, ন্যূনতম নুন ভাত খেয়ে বেঁচে থাকাত জন্যে লড়াইটা কত কঠিন। তিনি তো রিটায়ারমেন্টের পর সারাদিন বাড়িতে বই নিয়ে বসে থাকতেন। দোতলার টেরেসে একটা লাউঞ্জ চেয়ারে বসে বই পড়া তাঁর প্রিয়তম অবসর ছিল। কাজ যা করে, তা সুপর্ণা, তিনি আর সুপর্ণার শিক্ষাগত যোগ্যতার কোন তফাত নেই, সেও দীর্ঘদিন সুনামের সঙ্গে শিক্ষকতা করেছে, কিন্তু বাড়ি ফিরলে কোনদিন চা বা এক গ্লাস জল তাকে এগিয়ে দেন নি তিনি কোনদিন। এমন অনেক দিন হয়েছে যে ইউনিভার্সিটি থেকে এসে বাইরের জামাকাপড় না ছেড়েই রান্নাঘরে ঢুকে পড়েছে সুপর্ণা, রান্নার মাসি আসেনি বলে রাতের রান্না করে রাখতে কিংবা মেয়ের পরের দিন পরীক্ষা, ওকে নিয়ে বসে পড়েছে। সেসব দিনেও ক্লাস শেষ করে নৈমিত্তিক পার্টির কাজ, তারপর স্টাডি সার্কল, জনবার্তা অফিসের আড্ডা, কোনটাই বাদ পড়েনি তাঁর। একবারও মনেও হয়নি তিনি যে সুবিধাভোগী জীবন বাঁচছেন সুপর্ণার তুলনায়, তা তিনি কতটা ডিজার্ভ করেন? আসলে এখন বুঝতে পারছেন, তিনি বরাবর একই বাড়িতে থেকেও সুপর্ণার তুলনায় অন্য প্লেনে ছিলেন। শ্রেণী সংগ্রাম সব বকোয়াস। কিছুই পাল্টায়নি। আসলে পাল্টাতে হয় ভেতর থেকে। সেই ভেতরটাই তো বদ্ধ ডোবা।
এই যে বাড়িটিতে তাঁকে এনে তোলা হয়েছে,সেখানে সবাই দিনরাত বলছে কাজ করতে। ছোট ছোট ঘরের কাজ। একদিন এক নারী এসেছিলেন তাঁর কাজের প্রোগ্রেস দেখতে। তাকে দেখে ভীষণ চেনা চেনা মনে হলেও ঠিক বুঝতে পারলেন না এ কে। একেকজন কে দেখিয়ে দেখিয়ে সে বলছিল ‘একে কি চেনেন আপনি? ‘
‘একে কি চেনেন আপনি? ‘ ‘একে কি চেনেন আপনি?’ কী অদ্ভুত এই বাড়ি! এখানে ঘন্টায় ঘন্টায় যখন দেওয়াল ঘড়ি বাজে, তখন বাংলায় ইংরেজিতে বেজে ওঠে ‘ডু ইউ নো হার?’ “ডু ইউ নো হার?’ দরজার কলিং বেলেও একই কথা সুরে সুরে বাজে ‘ডু ইউ নো হার?’
সকাল থেকে রাত অব্দি মাঝে মাঝেই একরাশ ছবি দেখিয়ে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয় ‘একে কি চেনেন আপনি? এদের চেনেন?’ থ্যাঁতলানো ইঁদুরের মতো ডিসফিগারড লাশ সব। এদের তিনি কী করে চিনবেন? সারাজীবন পড়িয়েছেন, প্রশাসনের কাজ, সেও তো পঠন পাঠন নিয়েই, ছাত্র ছাত্রীদের দেখেছেন, যতদূর সম্ভব। কিন্তু এরা কেন তাঁকে এভাবে আটকে রেখে এমন সব লাশ দেখাচ্ছে যার সঙ্গে তাঁর কোন সম্পর্ক নেই! আর তো কোন কষ্ট নেই এখানে। সময়ে খাওয়া পান। তাঁর ওষুধগুলোও চলে এসেছে ঠিকঠাক। কিন্তু পূর্ব জীবনের সঙ্গে কোন যোগ নেই শুধু।
সেই যে একদিন সন্ধের আগে আগে হাঁটতে বেরিয়ে উনুনের ধোঁয়া আর উঠোন দেখে ঢুকে পড়েছিলেন, সেখান থেকে আর বেরনো হয়নি। কিন্তু একটা জিনিসে ধন্দ লাগে, তিনি এখন যে বাড়িতে আছেন, সেটাতে আধুনিক সব সুবিধেই মজুত, আর যে বাড়িটায় ঢুকে পড়েছিলেন সেটা যেন কোন কৃষিজীবী পরিবারের। উঠোনে ধানের মরাই ছিল, তাঁর স্পষ্ট মনে আছে। এ দুটো কি একই বাড়ি? নাকি ওসব ছিল তাঁর চোখের ধাঁধা? ইলিউশন? তাঁকে দেখানো হয়েছিল ওইসব? তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেরানো হয়েছিল তাঁর শৈশবে, তুলে আনা হয়েছিল সব স্বাদ গন্ধ, যার টানে তিনি ঢুকে পড়েছিলেন এখানে। ওটা হয়তো আদৌ কারো বাড়ি ছিল না, শুটিং -র সেটের মতো কিছু, তারপর তাঁকে নিয়ে আসা হয় এখানে। বিগ বসের সেটের মতো দেওয়াল থেকে নির্দেশ আসে নানারকম।
কিন্তু তার চেয়েও যা হয়, তা হচ্ছে তাকে দিয়ে নানা কাজ করানো।
প্রথম প্রথম ধান ভানা, চারা লাগানো, উঠোন গোবর দেওয়া, গরুর খড় কাটা, আলপনা দেওয়া এইসব করতে হত। এখন ছুঁচে সুতো পরানো, রান্না করা, ঘর মোছা কাপড় কাচা, একটা একটা করে তারে মেলে দেওয়া, রুটি বেলা, এইসব । সারাদিনের মধ্যে এমন কোন সময়ও নেই যে তাঁকে একটু পড়ার সময় দেওয়া হয়।
সেই যে রুটি সেঁকার গন্ধে, মোটা মোটা আলুভাজা কড়াইয়ের গায়ে খুন্তি দিয়ে চেপে রাখা আছে দেখে লোভাতুর হয়ে উনুনের কাছে এসে দাঁড়িয়েছিলেন, অমনি চারজন লোক তাঁকে ঘিরে ফেলল। বলল এটা তাদের এলাকা। তাঁকে ওদের সঙ্গে যেতে হবে, সময় হয়ে গেছে।
যেতে হবে মানে প্রথমেই তাঁকে অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়া হয়নি, নতুন একটা জীবনে যেতে হয়েছিল তাঁকে। একেবারে শূন্য থেকে শুরু করতে হয়েছিল, যার প্রথম কাজটাই ছিল রুটি তৈরি করা। তাঁকে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল এক গামলা আটা, তাতে একটু নুন দিয়ে বলা হয়েছিল জল মেশাতে। তিনি প্রথমেই বেশি জল মিশিয়ে ফেলেছিলেন, তাঁর শিক্ষণের দায়িত্বে যে ছিল, সে বলেছিল আরও আটা মেশাতে, আর এটাও বলেছিল, প্রথম দিনেই অনেক বেশি আটা নষ্ট করেছেন তিনি, এর শাস্তি হিসেবে তাঁকে এক সপ্তা কম খেতে দেওয়া হবে। তাঁর মনে হয়েছিল না খেতে দিলেও চলবে, কিন্তু এইসব নন- ইন্টেলেকচুয়াল কাজ করতে পারবেন না তিনি। তিনি বলেছিলেন অন্য কোন কাজ নেই? এছাড়া অন্য কোন কাজ?
তখন তাঁর হাতে একটা লম্বা লিস্ট ধরিয়ে দেওয়া হল।
এর মধ্যে যে যে কাজ তিনি জানেন, তাতে টিক দিতে হবে।
একটু পড়েই তাঁর মাথা ভো ভোঁ করে উঠল।
ঘর ঝাঁট দেওয়া
মোছা
কাপড় কাচা
বাথরুম পরিষ্কার
গরুর জাব দেওয়া
গোবর লেপা
সাঁঝাল দেওয়া
মাটির হাঁড়ি বানানো
ছুরি কোদাল বানানো
কাঁথা সেলাই করা
ধান বোনা, কাটা মাড়াই ঝাড়াই
গাছ লাগানো
রুগীর সেবা
গাড়ির চাকা পালটানো
হারিকেনের তেল ভরা
গ্যাস পাল্টানো
……
সে এক অফুরান তালিকা।
তিনি শুকনো মুখে বললেন ‘আর কোন কাজ নেই?’
‘তার মানে এর মধ্যে কোন কাজই আপনি জানেন না, এই তো? কোন চাপ নেই, আপনাকে শিখতে হবে’
তিনি ঘেমে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ কুটো পাওয়ার মতো বললেন ‘আচ্ছা, আমি তো পড়াতে পারি। সেটা তো বিরাট গুরুত্বপূর্ণ কাজ’
ওরা হা হা করে হেসে উঠল। তিনি ভেবে পেলেন না এতে এত হাসির কী হল? কি অশিক্ষিত চাষাভুসোর হাতে পড়েছেন তিনি, যারা পড়াশোনার মর্ম বোঝে না!
‘পড়ানোর মধ্যে এত হাসির কী আছে বুঝলাম না। এটা কি কোন কাজ নয়? এই রুটি বেলা, কাঁথা সেলাই- এসব কি একটা কাজ হল? এসব তো কাজের লোকরাই করতে পারে।’
‘তার মানে আপনি স্বীকার করছেন আপনি কাজের লোক নন, ভাটের লোক, ঢপের লোক। খড় ঠাসা মানুষ। শুনুন মশাই, আপনার বাবু পরিচয়টা আজ থেকে মুছে যাবে। পড়ানো নিশ্চয় একটা কাজ খুব বড় কাজ, কিন্তু পাশাপাশি এগুলোও খুব বড় কাজ। আর পড়াতে গেলে আপনার জন্যে পাঁচ ছ বছরের বাচ্চা আছে। আপনি যাদের পড়াতে পারেন, আমাদের লোকজন সেই অব্দি পৌঁছতে পারেনি, তার আগেই তারা মরে গেছে।আপনাকে ছবি দেখাব এক এক করে’
‘বাচ্চাদের পড়ানো?’ আতান্তরে পড়লেন তিনি।মেয়ে যখন হল, স্ত্রীকে বলাই ছিল অক্ষর পরিচয় আর প্রাথমিক পাঠ সে দেবে, বড় হলে তবেই তিনি তাকে দেখবেন, অত ছোট বাচ্চাকে কী-ই বা শেখাবেন তিনি? মশা মারতে কামান দাগা হয়ে যাবে। সুপর্ণা কিছুই বলেনি। চুপচাপ বুঝে গেছিলেন, আর সব কিছুর মতোই এটাও তাঁকেই করতে হবে। বড় হবার পরেও কোনদিন অবশ্য দেখেননি পড়াশোনা। স্ত্রীই পড়িয়েছে, তার পক্ষে অসম্ভব হলে টিউটর দিয়েছে, দিতে গেছে, নিয়ে এসেছে। নাতনির বেলাতে সে আর জিজ্ঞেসও করেনি, বুঝেই গেছে এসব ‘ছোটখাট’ ব্যাপারে ডক্টর প্রফেসর বসুকে পাওয়া যাবে না।তিনি বড় বড় কাজে ব্যস্ত। তিনি তো ভেবেই পান না, এ বি সি ডি, কিংবা অ আ ক খ শেখানোর মধ্যে আছেটাই বা কী, আর সেখানে একজন বিশেষজ্ঞ কীই বা করবে? এসব তো মায়েদের কাজ। তিনি তো আসল কাজটাই করে দিয়েছেন। এত পরিশ্রম করে শেষে যদি অ্যাকাডেমিক্সে যেতে না পারত, ভালো হত কি সেই ব্যাপারটা?
মেয়ে বা নাতনীকেই তো তিনি পড়াননি ছোটবেলায়, বাচ্চাদের কীভাবে পড়াতে হয়, তা তো কোনদিন শেখেন নি তিনি। তিনি বলেন ‘ছোটদের না, আমি বড়দের পড়াতে চাই।’
‘বড়দের? এখানে বড়দেরও অ আ ক খ থেকেই পড়াতে হবে। পারবেন তো?’
ওরা হাহা করে হেসে ওঠে।
হাসি থামলে ওরা বলে ‘আপনাকেই তো অ আ ক খ থেকে শুরু করতে হবে। কিছুই তো জানেন না দেখছি’
প্রফেসর অধ্যাপক বসুর মুখে থাপ্পড় পড়ে। কী করলেন এত বছর? কোন কাজ জানেন না, শেখার কথাও ভাবেননি।
তাঁকে পরের দিনই হাতে একটা লম্বা লিস্ট ধরিয়ে দেওয়া হল। হাতে লেখা নয়, রীতিমতো কম্পিউটার প্রিন্ট আউট। সেটা হাতে নিয়ে তিনি অবাক হয়ে গেলেন। এই উনুন, গোবর লেপা উঠোন, এইসব হাটুরে লোকজন –এর পেছনে তাহলে একটা হাই টেক মাস্টারমাইন্ড কাজ করছে? কে সে বা তারা? বেশি ভাবার অবশ্য সময় পেলেন না। সকাল থেকে রাত অবদি দম ফেলার ফুরসত নেই। কোন কাজই তিনি সহজে শিখতে পারছেন না। কারণ এইসব শিখতে তাঁর মন তাঁকে বাধা দিচ্ছে সমানে।এগুলো যে কোন কাজ নয়, ফালতু সময় নষ্ট, সেটাই তাঁকে বুঝিয়ে চলেছে তাঁর মন। দেখা গেল যিনি ফাজি লজিক বা গড পার্টিকলে এত দক্ষ, সেই তিনিই এইসব শিখতে প্রচুর সময় নিয়ে নিচ্ছেন। খুব স্লো লার্নার। তবু এইসব সহ্য হয়ে যাচ্ছিল।
মনে হয় কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে আটকে রাখা হয়েছে তাঁকে। প্রথম প্রথম আশা ছিল, বাড়ি থেকে তাঁকে খুঁজতে এখানে আসবে কেউ না কেউ। দিন দিন সে আশাও চলে যাচ্ছে। কেউ আসবে না তাঁকে নিতে। এতটাই আনওয়ান্টেড তিনি। এত কাজ করাও সহ্য হয়ে যাচ্ছে কিন্তু যখন প্রতিদিন সন্ধের সময় একরাশ ছবি এনে তাঁকে জিগ্যেস করা হয় ‘দেখুন তো এঁদের চেনেন কিনা’ সেটা একেবারে নিতে পারেন না তিনি। কিন্তু তবু ওরা ছবিগুলো দেখাবেই। একেবারে ডিসফিগারড বডি সব। বমি উঠে আসে তাঁর। তবু দেখতে হয়। একদিন একটা চেহারা দেখে সত্যি সত্যি চেনা লাগল। বহু বছর আগে এইরকম একটা ছেলে চিঠি দিতে আসত। কুরিয়ার কম্পানিতে কাজ করে। সুপর্ণা পুজোয় বকশিস দিত, মিষ্টি জল খাওয়াতে চাইত, ছেলেটা খেতে চাইত না। একদিন জিজ্ঞেস করেছিল এখানে জমির কেমন দাম যাচ্ছে। হাসিতে ফেটে পড়েছিলেন তিনি। সুপর্ণাকে ডেকে বলেছিলেন, দুজনে একসঙ্গে হেসেছিলেন, পরে মনে হয়েছিল ছেলেটার মুখটা কেমন যেন হয়ে গেছিল, কেন, কেন এত হাসি পেয়েছিল তাঁর? যারা গরিব তারা গরিবই থাকবে চিরকাল, এটাই কি তাঁর মনের গহনে লুকিয়ে নেই? তাই তাঁর অত হাস্যকর মনে হয়েছিল ছেলেটার কথা। তাজমুল, তাজমুল ছিল ছেলেটার নাম। সাউথ সেকশনের গ্রামে কোথায় যেন বাড়ি ছিল। তাকে আর দেখেননি তিনি। এইসব জীবন এত অনিশ্চিত, কাজের লোক, মিস্ত্রি মজুর, যে কোনদিন মনেই হয়নি, কেন আসেনা আর তাজমুল। আজ ছবিটা দেখে তার কথা মনে পড়ল। না হতেই পারে না, তাজমুল এভাবে মরবে না। ওর দুচোখে কি ঘৃণা দেখেননি তিনি? সে ঠিক ফিরে আসবে। ওর হাতে মরতে হবে তাঁকে হয়তো। তাঁর মনে হয় , নিশ্চিত বিশ্বাস হয়, আর কেউ না আসুক তাজমুল আসবেই তাঁর খোঁজে। জীবন তো অংকের সমীকরণের মতোই, পলিনোমিয়াল ইকোয়েশন, কিন্তু দুদিক সমান করে মেলাতেই হয়। তাজমুলের হিসেব তাঁর সঙ্গে মেটানো বাকি। শুধু ওর জন্যেই তাঁকে এই জীবনটা টেনে চলতেই হবে।

