
গৌতম চৌধুরীর কবিতা
অপরগুচ্ছের কিছু
১.
এইজন্যই বলে, মুরুব্বিদের কথা শুনিয়া চলিতে হয়। কিন্তু চাহিলেই কি পারা যায়? কাহার ধাত যে কোন্ ছাঁচে গড়িয়া উঠিয়াছে, কে বলিতে পারে! কাঁসাইকে হাজার জড়িবুটি গিলাইলেও সে কি আর আড়িয়াল খাঁ হইয়া উঠিবে! বরং দুঃখে মজিয়া সরস্বতীর দশা পাইতে পারে – হাঁসও নাই ঢেউও নাই। তাহার পর? একটি অবধারিত শূন্যতা। বা, ওই পরিসরটিকে আপাতত যদি দীর্ঘ এক নো-ম্যান্স-ল্যান্ড ভাবা যায়? অপর পারে আর একটি দেশের সম্ভাবনা। আরেকটি দেশ হইতে মুখ বাড়াইতে পারে আরেকটি কাল। বন্ধ ঘড়ি সহসা চালু হইবার মতো, কালের কথায় উঠিয়া আসিতে পারে আড়ভাঙা সাঁতারের প্রস্তাব। আকাশের দিকে মুখ ফিরাইয়াই হউক বা আধারের দিকে। আঁধার দুই দিকেই। ছপর ছপ আঁধার ভাঙিতে ভাঙিতে চলো। সে বড় ক্ষুধার্ত। কিন্তু জানিয়ো, সে অস্থির বস্তু গিলিতে পারে না …
২.
সকল মিল ও অমিল মিলিয়া-মিশিয়া থাকে। একটি একটি করিয়া আঁশ ছাড়াইতে বসিলে হয়তো তাহাদের আলাদা করা যায়। কিন্তু অত সময় কাহার! ছেঁড়া ছেঁড়া মেঘ ভাসিয়া চলিতেছে। তাহাদের চেহারা ভাঙিতেছে গড়িতেছে পলে পলে। মন যাহা চায়, তাহাই দ্যাখে। কিন্তু মুহূর্ত মাত্র। কার্যকারণের বিলকুল বাহির দিয়া চলিতেছে এই লীলা। তবে, সকলই জলকণা। যতই ঘাঁটিয়া ছিঁড়িয়া যাক, সেইখানে তাহাদের ঐক্য। সুরের রেণুগুলি শূন্যে ভাসিতে ভাসিতে নানা রং ধরে। পুড়িয়া কালোও হইয়া যায় কখনও কখনও। সেই অতল গভীর খাদের কান্না, সেও তো এক আর্তনাদ। সেও তো এক ধাতব আহাজারির সুর। শ্রুতি হইতে রুধির গড়াইয়া পড়িলেও, তাহাকে চাপা দিবে কে! যেমন কোনও রাঙা নক্ষত্রের আলো। চোখ ঝলসিয়া যায়। তবু …

