
শ্যামশ্রী রায় কর্মকার -এর কবিতা
এলিজি এবং
৭.
কিছুক্ষণ আগে একটা গ্রান্ড পিয়ানোর মতো মেঘ করেছিল
সুর তোলা বিদ্যুতের হাত
গোপীবল্লভ পুরে বৃষ্টি নামার আগে ঠিক যতটা অন্ধকার হয়
এখানে হয় না
এখানে তোমার সেই প্রত্যাখ্যাত মুখ নেই
এখানে তোমার পুরনো বন্ধুত্বটুকু মনে করে
অহরহ জানলা খুলি, দেখি
স্বাধীন ঘুড়ির মতো ভেসে যাচ্ছ তুমি
কোথাও মালিন্য নেই
বিশ্বাস ভেঙেছ ভেবে স্বপ্ন-ত্রস্ত ময়ালের মতো
নিজেকে গুটিয়ে রাখতে হচ্ছে না কারো দৃষ্টি থেকে
আমিও এখানে ওই বিষাদসম্ভূত দিন ক’টি
ছাপাখানার বিভ্রাট ভেবে
পেপার ক্লিপ দিয়ে এঁটে রাখি
বন্ধুত্বের সম্পূর্ণ বৈভব
দু এক পাতার ভুলে বাতিলের ঘরে দেব
এমন পাঠক আমি নই
৩০.
বাদাবনে লুকিয়ে থাকা বাঘিনী হবার কথা ছিল
বহরমপুরের একা চেস্টনাট গাছ
ময়নাগুড়িতে বিবেকানন্দ পল্লীর সেই অনাবাদী জমি
যেখানে দাঁড়ালে শরতের কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখা যেতো
শুধু ধুলোর শহরে জন্মেছি বলে
দাড়িভেজা ব্রিজের হেমন্তে উঠে দাঁড়ানো হল না
জর্দানদীর ছন্দকে কবিতা বলেছি বলে
সেই কবিতার কাঁধে,পিঠে একান্ত স্ট্র্যাপের মতো
গোপনে দাগানো হল রেসিয়াল মার্কার
অথচ আমি স্বচক্ষে দেখেছি
কীভাবে সকাল সন্ধ্যা জয়ন্তীর পাড়ে
আকণ্ঠ তৃষ্ণা হয়ে ওঠে বুনো হাতির মাহুত
গাছেরা আসন্ন শীতে সারা দেশে লিখে রাখে
ঝরাপাতা ছন্দের কবিতা
রাজনীতির ‘র’ না বোঝা মৌয়ামারির চাষি
যখন একেকদিন একেকটা ফেস্টুনকবলিত ট্রাকে উঠে বসে
তখন কীভাবে তার চোখে বাজে ঋষভ-পঞ্চমহীন আদি ভৈরব
কীভাবে তার বউ
দেহের চৌষট্টি জ্বালে হাঁড়িটি বসিয়ে
পাপে কাটা চাল রাঁধে, ধোঁয়াগন্ধ দুপুরের পাতে
কান্নার সৈন্ধব নুনে জড়ামড়ি সে ভাত কীভাবে
জিরজিরে ছেলের মুখে সঞ্জীবনী সুধা হয়ে ওঠে
৩৮.
আমাদের অর্ধেক মিস্টার কুর্টজ
কিয়দংশ পাখিজন্ম, কিছু পশুনখ
শরীরে ফুটিয়ে দেওয়া না’ এর পেরেক
জোর করে তুলে ফেলি, তুমি তো লেহন
আমিও তোমার ক্ষত চাঁদের আসরে
একা পড়ি, লকলক করে ওঠে জিভ
দুজনেই বনবাসে, মৃত বিছানায়
একাই একার সাথে থাকি, ঘন হই
আমিষ চাঁদের রাতে মিথ্যে করে বলি
আমরা কারোর প্রতি সম্মোহিত নই


বা, কবিতাগুলি খুব ভালো লাগলো শ্যামশ্রী।
ধন্যবাদ অমিতদা
খুব খুব সুন্দর! বিশেষত দ্বিতীয় কবিতার শেষাংশ আমার অপরূপ লাগল।
ভাল লাগল কবিতাগুলো
ধন্যবাদ
সব কবিতাগুলোই ভালো লাগলো।। বাহ্
ধন্যবাদ