
শিবালোক দাস-এর কবিতাগুচ্ছ
আয়না
বেঁচে থাকো।
পুরোনো চাবুকে যদি সরে যায়
যায় সহস্রনাম, আবহমান….
মেঘ যদি আরো সুন্দর হয়ে
তোমার কল্যাণে ছুঁয়ে দেয় সুর…
তবে ওল্টাও মজ্জা, সমুদ্রে–
ডুবে যেতে যেতে সমস্ত লেখা পাঠাই নোনা-ক্ষয়ে…
বেঁচে আছি। সেই শব্দ শুনে।
আঙুল শেষবার যখন স্বপ্নে করেছিল পাপ…
মুছে যাওয়া বীজে, ওঠেনি বাতাস…
আরো চাই ভাঙা আয়না। আঁচে ঢেকে দিতে।
এখনো বিহ্বল হতে শুধু নদী লাগে।
লেখা
ফুল, তোমার জন্য সব
প্রতিশব্দ খর্ব করেছে বিদ্যুৎ…
তোমার জন্য আঙুল রেখেছে
অন্ধকারে, রাগ খুঁজে পেতে।
যাওয়া হয়নি। শব্দ শুনি, কেউ
ছাই উড়িয়েছে সম্মোহনে…
ভেসে যায়, তোমার অন্ধকারে,
কেউ তো সাক্ষী হয়ে ছিনিয়ে নিক
সমুদ্রস্বর—
চোখ খুলি।
বিলুপ্ত ঘাসে, ঢেকে যায়
গুঁড়ো গুঁড়ো লেখা, ছোঁয়াচে রক্তের !
বুনন এখনো সাদা
ফিরে এসো।
শত হত্যা যদি রূপোলী হয়
চাঁদে…
ফিরে এসো।
যদি নদীর শিয়রে ভেঙে পড়ে
আলো…
ফিরে এসো।
এখনো হাতে বেঁচে আছে
বিহ্বলতা…
ফিরে এসো।
আকাশ ছুঁয়ে নক্ষত্রের শরীরে
তোলো বালিকণা–
তাদের বুনন এখনো সাদা, ঢেউয়ে
ভেসে যায় যাবতীয় দুয়ার !
রাত্রিগানের ফুল
কখনো ক্ষুব্ধ চাঁদ বোঝে আগুন
এতদিন ফিরিয়ে নিয়েছে কিভাবে
জলের শরীর…
রাত্রিগানের ফুল, তুমি জন্মালে
আলোছায়ার সুরে ভেসে যাওয়া
জীবন, ঝর্ণায় লুপ্ত করে পূর্ণিমা!
পরম
অন্ধ, তুমি কখনো পরমাত্মায় মিলিত হয়েছ ?
হাজার শীতলতায় আজ রক্ত ঝরে
পড়ে, ঝরে পড়ে ওল্টানো পাতার শব্দে।
যা তুমি লিখতে লিখতে বিবর্ণ করেছ,
যা তুমি হারিয়েছ হাঁটতে হাঁটতে,
মিশে আছে স্থির জলে,
হাত ডুবিয়ে দেখো, কোনোদিন সে
মধ্যরাতে বেজে ওঠেনি, দূরে সরে যায়নি…
শুভ নক্ষত্রের শরীরে তুমি খুঁজে মরো
কানামাছি, আর আমি চাই, তুমি আরো
একবার ভেজো…
চোখে জ্বলে ওঠে বসতবাড়ি…
হাত
এ যাবৎ কতখানি খুঁড়েছি,
কতখানি সত্য মিশেছিল মেঘে,
জানিনা।
শুধুমাত্র একটা শব্দে চমক এসে
লাগে আমার হাতে,
বিবর্ণ ঘাস আরো পুড়িয়ে দেয়
ভয়, এতদিনের সঞ্চিত কঙ্কাল…
ব্যবধানে, আরো একবার জয়ী
হয়ে, দাঁড়িয়েছ অস্বচ্ছতায়–
ছুঁতে ছুঁতে আবার চলো খুঁড়ে
ফেলি আর্দ্রতা; আঘাতে, ঘুমে !