সৌভিক ঘোষের কবিতা
বেলা যায়
বেলা যায়
তার ভিতর ধীর অবধি আমার
ভগ্নাংশের অতীত থেকে তুলে আনি আরোহ চিত্রকে
আবর্তিত নীলিমার দিকে হয়ে উঠি ব্যাপ্ত
হরিদ্রাভ সুখে লিপ্ত হয়ে আছে সমূহ উদযাপন
চিত্রের আরোহকে নিয়ে মেতেছি মগ্ন ভূমিকায়
ভগ্নাংশের অতীত শোনায় আমাকে নিহিতকথন
আমি তার প্রতিভূ সত্তায় গড়ে তুলি নিজস্ব উপনিবেশ
ডুবে থাকি ঘনঘোর
অমোঘ পরিধি ছুঁয়ে কাছে আসো তুমি
মুগ্ধ স্মরনে মুখর হয় পরমায়ু
সংবদ্ধ নীলিমায় চলো গড়ে তুলি আসর
মুক্তিতে বিভোর সদা প্রজননশীল।
দীর্ঘ তৃষ্ণা ভুলে
দীর্ঘ তৃষ্ণা ভুলে মেতে আছো শুধু ত্যাগে
অদৃশ্যতা থেকে তুলে আনো বিবিধ উপচার
তোমায় আমি নিয়ে যাব নতি থেকে বহুদূর
নব নব উচ্চতায় বেদীর সমুখ দেখাবো আজ
সারাংশে এনে দেবে তুমি দীর্ঘ তন্ময়তা
প্রসূত হবে ফল, বৃক্ষ মায়াবী হবে
সিদ্ধান্ত স্বরূপ অভিযোজিত হয়ে আছে চারপাশ
এইভেবে মনে মনে প্রনতি জানাই তোমায়
অপরূপ আদরে তুমি ভরে ওঠো
আর আমি সেই আদরের স্পর্শটুকু করে তাই পান।
প্রেম, গোধূলি, তৃষ্ণা পেরিয়ে
আকাশ, দিগন্ত, সমুদ্রের অনেক কাছে বসে আছে একজন
দেখছে মাঠের পরে মাঠ, নকশাবোনা রোদ
সবুজ হাওয়ার ভিতর গান গায় পাখিরা
জড়ো হয় পাড়াগাঁর যখনতখন দেশে
চলে যায় সে ক্ষীণতম অতিদূর
কবেকার পালে লাগে হাওয়া
কমলিনী ঢেউ খিলখিলিয়ে ওঠে
পাতা ঝরে, উড়ে আসে খড়কুটো
আকাশময় রক্তরাগের শাখা
বনমধ্যে কখনওবা চিতা
জ্বলছে প্রদীপ, আয়ুষ্কাল দুলছে
দেখছে সেজন বিভোরবেলার হাসি
প্রেম পেরিয়ে, গোধূলি পেরিয়ে, তৃষ্ণা পেরিয়ে যাচ্ছে
ঠোঁটে রেখে আলতো পরাগ একটু একটু দুলছে।
অসংখ্য রূপসী
আমাদের ভেতর খেলা করে অসংখ্য রূপসী
অবিরাম গর্ভবতী হয় তারা, কুসুম যায় ছড়িয়ে
হাওয়ার মতো অনুভবগুলি ঠিকানা হারায়
আকাশের গভীরে উড়ে যায় অনেক প্রজাপতি
চতুর্দিকে ঝর্না আদর লেখে
শান্ত বেশ সৌম্য হাসি রূপসীদের
অনন্ত কুসুমে তাদের ছড়ায় আকাশের নীল
দিগ্বিদিক থেকে উঠে আসে অসংখ্য ঝোরা
দেখি আশ্চর্য উজ্জ্বল প্রতিফলন চতুর্দিকে
আকাশে আকাশে লেখা হয় আমাদের মিল অমিলের কাব্য।
বিকেল তুমি
এই যে বিকেল
এই যে ধরনী উতল পাড়া
ব্যাপ্ত সমাগম
সবই আমার জন্মলগ্নের সাড়া
ফিরে পাওয়া হারানো সম্বল
পাড়ার সবাই সমস্বরে ডাক পাঠায়
আমি তখন হাতটি বাড়িয়ে
উদ্যানময় ফুলের রেশ
কপালে চন্দনফোঁটা
শান্ত বালিকার প্রেমে মধুমাস
হাওয়ার ভিতর চিত্র বদল হয়
মনে পড়ে যায় অশ্রুমতীর স্বর
আপন মত আরো কাছের
বসে থাকি হারানো সম্বল বুকে
বিকেল তুমি, চিরদিন তুলি চিত্রময়।