
সুদীপ বসুর কবিতা
আর্মান
বলেছিলে নীলগঞ্জ নেই
তবে কেন নদীতীর
ছিঁড়ে ফালা ফালা করে
দস্যু হুইসল ?
বন্দরের প্যারালাল রেলট্র্যাক
সেখানে জোছনায়
জেব্রার ঝাঁক ঘোরে কেন ?
পোড়োবাড়ি ,ধ্বসে -পড়া বাড়ি , খোলা তার,
ডাকবাক্স, অন্ধকার …
হাঙরের না- নেভা পিপাসা …
‘ আমাকে সন্তান দাও ‘ বলে সেই নারী
চার্চগেট ভেঙে চলে যায়।
কেন সেই গান
‘ ডলি না ডুবিয়ে মারে আমাদের রাঙা বোটখানি ‘
বলেছিলে নীলগঞ্জ নেই
সেই বসন্তবিকেলে
আমি একা মুসলমান ছেলে
তোমার মিথ্যে শুনে
ভয়ঙ্কর কষ্ট পেয়েছিলাম
নীলিমা রাঠোর
ওর ছোটবোন এসে বলে গেল,
‘দিদি নেই, জানেন? ‘
ফেরবার পথে দেখি
বার্ন – ওয়ার্ড ভেসে যাচ্ছে জোছ্নায়
পাশে ভাঙা পাম্পের পার্টস, শীত
পাশে
নীলিমা রাঠোরের অন্ধকার …
রোজি
মনে পড়ে হোটেল ‘আনজুম ‘?
শূন্য ব্যালকনি ?
৩১৭ ?
আজও যাও দেওদার বাগান?
‘ আমাকে আটকাও প্লিজ , কে আছো আমাকে আটকাও’
শুধু এই রাত্রিচিৎকার
বাকি সব ,
কালিঝুলি
ছাইভস্ম
অন্ধকার …
ফরহাদ কামাল
আমি পাসপোর্টের স্তব্ধ মুখ
তুমি হঠাৎ শঙ্খলাগা সাপ
তুমুল সুখের বিষ
গলা বেয়ে উঠে আসত রোজ।
হোটেলের শস্তা অন্ধকারে
একদিন
ছেড়ে দিলে হাত।
একদিন ক্রেডল্ ফেলে
মৃত্যুঝাঁপ দিয়েছ জোছনায়।
ফালা ফালা করে দিয়ে জাল।
এই দৈত্যের মতো শোক
তুমি সহ্য করো
ফরহাদ কামাল।
গোল্ডি
রাতচরা নক্ষত্র , জানো
কাল গোল্ডি এসেছিল ।
ও কোত্থাও যায়নি, বলল ।
ছিলই ।
আমরাই ভুল ভেবেছিলাম ।
আশপাশেই থাকে ।
ওই যে নদীর ঢল
ওই পাওয়ারস্টেশন
জোছ্না …
না দেখতে পেলেই নেই ?
তোমাকেও তো কতদিন
কতদিন দেখিনা…
চুপ চুপ , শোনো,
শোনো
ওই শোনো গোল্ডির গান…
চাবুকও তো মাঝেমাঝে একা হয়ে যায়
কাঁদে না নক্ষত্র , ছিঃ
বুড়ো ছেলে
কাঁদলে তো অন্ধকার বাড়ে –……


অসামান্য লেখা সব। একেকটা নামের ভিতর এত বিপন্নতা…