সাবজেক্ট
:: শ্যামশ্রী রায় কর্মকার

ভদ্রলোকের নাম প্রতিম দত্ত। তখনও বিকেল মরে যায়নি। প্রতিম চায়ের কাপ হাতে বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছেন। একটা গল্পের প্লট তাঁর আশু প্রয়োজন। পুজো আসতে আর মাত্র দুমাস । সম্পাদক তিন তিনবার তাগাদা দিয়ে গেছেন। প্রতিমবাবু একবার দার্জিলিং, একবার কানহা ঘুরে এসেছেন। তবু তিনমাসের মধ্যে একলাইনও প্রসব করতে পারেননি। তিনি ঠিক করলেন, আজ সারারাত গোরস্থানে গিয়ে বসে থাকবেন। নো কম্প্রোমাইজ। মানুষ না হোক, ভূতের গপ্পো লিখবেনই। ঠিক তখনই সামনের ফাঁকা বাড়িটার সামনে মালপত্তর বোঝাই দুটো ছোট হাতি এসে দাঁড়াল। মানে টেম্পো আরকি। এ অঞ্চলে টেম্পোর আদরের নাম ছোট হাতি।

টেম্পো থেকে যে নামল, তাকে দেখে প্রতিমবাবু চমকে গেলেন। অর্ণব। পাড়ারই ছেলে। বছর তিনেক আগে কোন একটা ব্যাপারে যেন কেস খেয়ে পাততাড়ি গুটিয়ে অন্য জায়গায় চলে গেছিল। কেসটা এখন ঠিক মনে পড়ছে না। বয়স হয়ে যাচ্ছে। টাক চুলকাতে চুলকাতে ভাবলেন প্রতিম। ঠিক তখনই একটা রিক্সা এসে দ্বিতীয় টেম্পোটার পেছনে দাঁড়াল। রিক্সা থেকে যে নামল, সে বেশ যন্ত্রণাদায়ক রকমের সুন্দরী। বয়স ছাব্বিশ সাতাশের বেশি হবে না। সে নামতেই অর্ণব একটু এগিয়ে গিয়ে তার কাঁধে হাত রাখল। বউ? নাকি গার্লফ্রেন্ড? নাহ! হাতে পলা দেখা যাচ্ছে। বউই তবে। প্রতিমবাবুর বুকের ওপর দিয়ে যেন লোহার বল গড়িয়ে গেল। এরকম একটা মেয়ে অর্ণবের বউ হবার কোন মানেই হয় না। তবে মেয়েটাকে দেখে আশ্চর্য রকমের শান্ত বলে মনে হল। একটু লাজুকও। নাহলে আজকালকার মেয়েরা আবার বরের হাত কাঁধ থেকে নামিয়ে দেয় নাকি! তিয়াস থাকলে অবশ্য বলত, “তবে কি নতুন এসেই রোনাল্ডোর মতো মাঠে নেমে লাফালাফি করবে? ইংল্যান্ড আমেরিকার মতো মাঠেঘাটে চকাস চকাস চুমু খাবে?” নিজের মনেই হেসে ফেললেন প্রতিম। কতদিন যে তিয়াসকে দেখেন না। তিয়াস মানেই চোখা টিপ্পনী। অদ্ভূত সব ইমেজারির প্রয়োগ। আজকাল বেশ বুঝতে পারছেন, বউকে ছাড়া থাকতে বড্ড একা একা লাগে। বুড়ো হচ্ছেন সত্যি সত্যি!

দিনচারেক কেটে গেছে। গোরস্থানে আর যাওয়া হয়ে ওঠেনি। অফিসে কাজের বেশ চাপ। যদিও বাড়ির নীচের তলাতেই অফিস বলে যাতায়াতের ধকল নিতে হয় না, তবুও। রাতে না ঘুমনোর রিস্ক নেওয়া যাবে না। আপাতত অর্ণবের নতুন সংসারকেই টার্গেট করেছেন প্রতিমবাবু। সামনাসামনি বাড়ি হওয়ায় সাবজেক্টকে লক্ষ করতেও বেশ সুবিধে। একটা ফিল গুড স্টোরি নামিয়ে ফেলবেন আর কদিনের মধ্যেই।
সাবজেক্ট অবশ্যই অর্ণবের বউ। নাম প্রিয়াঙ্গী। শান্ত হলেও কাজেকম্মে বেশ চটপটে। অর্ণব বেরোনোর আগেই ঘরদোর পরিষ্কার করা, রান্নাবান্নার পাত চুকিয়ে ফেল মেয়েটা। তারপর অর্ণব বেরিয়ে গেলে বারান্দায় দোলনা চেয়ারটা নিয়ে বসে থাকে সারাদিন। পেপার পড়ে। উল বোনে। উলের বলটা আদুরে বিড়ালছানার মতো মুখ গুঁজে পড়ে থাকে তার কোলের ওপর। প্রতিমবাবু একটু অবাক হন। মেয়েরা এখনও উল বোনে তাহলে!
অর্ণব ফিরতে ফিরতে বেশীরভাগ দিনই রাত আটটা বেজে যায়। ল্যাম্পপোস্টের হলুদ আলোটা রাস্তার কুকুরের মত নেতিয়ে পড়ে থাকে ওদের বারান্দার ওপর। সামনের দোতলা বাড়িটার ছায়া পড়ে ওদের বারান্দাটা আলো আর অন্ধকারে আড়াআড়ি ভাগ হয়ে যায়। প্রিয়াঙ্গী বারান্দার ঠিক মাঝখানটিতে বসে থাকে। অর্ধেক আলো আর অর্ধেক অন্ধকারে ওকে দেখে এক অলৌকিক মানবী হয়। কেন যেন গা ছমছম করে প্রতিমবাবুর। বেশ টের পাচ্ছেন, আরেকটু বয়স হলেই ভুতের ভয় এসে ক্যাঁক করে ধরবে তাঁকে।
ওদের দেখলে প্রতিমবাবুর বেশ অদ্ভূত লাগে। প্রিয়াঙ্গী সারাদিন ধরে বারান্দায় বসে থাকলেও অর্ণবের অপেক্ষা করে বসে থাকে বলে মনে হয় না। কারণ অর্ণব যখন ফেরে, তখন ওর মধ্যে কোনোরকম উচ্ছাস দেখা যায় না। ওরা হাত ধরে না। একে অপরকে স্পর্শ করে না। কাছাকাছি বসে কথা বলে না। হুটহাট চুমু খায় না। অথচ ওদের নাকি সদ্য বিয়ে হয়েছে। অন্তত সেদিনের সেই টেম্পোর চেনা ড্রাইভারটাকে পাকড়াও করে তো সেই খবরই পেয়েছেন প্রতিমবাবু। ব্যাপারটা বেশ অস্বাভাবিক। প্রতিমবাবু যে ওদের লক্ষ্য করছেন, তা তো ওদের জানার কথা নয়! তবে! সদ্য বিবাহিত কোনো দম্পতির মধ্যে এরকম মেরুপ্রদেশের শীতলতা কেন?
প্রিয়াঙ্গীকে কখনও নাইটি পরতে দেখেন না প্রতিমবাবু। সবসময় টিপটপ। টি শার্টের সঙ্গে ট্রাউজার বা স্কার্ট। চুল পরিপাটি করে বাঁধা। যেন এখুনি বাইরে বেরোবে। অথচ এই ক’দিনের মধ্যে ওরা একদিনও একসঙ্গে বাইরে বেরোয়নি। প্রিয়াঙ্গী একাও বেরোয়নি কোথাও। ওদের বাড়িটা থেকে কথাবার্তারও কোনো আওয়াজ আসে না। অস্বাভাবিক রকমের চুপচাপ। তন্ময় অফিস থেকে ফেরার পর একদিনও পাশে বসে না প্রিয়াঙ্গী। তন্ময় বসার ঘরে জানলার ধারে বসে চা খায়। প্রিয়াঙ্গী চায়ে চুমুক দিতে দিতে রান্নাঘরে একমনে সব্জী কাটে। সবটাই দেখতে পান প্রিতমবাবু। সন্ধ্যার পর এ পাড়া শুনশান হয়ে যায় বলে শুনতেও পান, স্ল্যাবের ওপর চাকুর নিষ্ঠুর শব্দ খটখট করে বাজছে। একেকদিন প্রতিমবাবুর মনে হয়, জোরে হাত চেপে ধরে থামিয়ে দেন শব্দটা। ধমক দিয়ে বলেন, “যাও! বরের সঙ্গে গল্প কর গিয়ে!” ছুটির দিনে সারাটা দিন রান্নাঘরে কাজ করে প্রিয়াঙ্গী। ফোড়নের ছ্যাঁকছোক, বাসনের ঠুংঠাং । কী অসহ! আচ্ছা, মেয়েটা কি ইচ্ছে করে অর্ণবকে এভয়েড করে? অপছন্দ করে অর্ণবকে? অবশ্য পছন্দ করার মতো তেমন কিছু নেইও ছেলেটার মধ্যে। মোস্ট আনইম্প্রেসিভ ইডিয়ট একটা।
একদিন হঠাত করেই প্রতিমবাবুর মনে হল, খুব বড় একটা ভুল হয়ে গেছে। বাড়ির সামনে বাড়ি। তাছাড়া একসময় ওদের সঙ্গে বেশ হৃদ্যতা ছিল। অথচ নতুন বউ নিয়ে আসার পর তিনি তন্ময়কে আশীর্বাদ করতে গেলেন না। একটা কোনো উপহার দিলেন না নতুন বউকে, এটা কি ঠিক হচ্ছে? তিয়াস থাকলে কখনোই এরকমটা করতে পারতেন না। সে নিজেই আগেভাগে হাঁকডাক করে গিয়ে বউ বরণ করতো। ঠিক আছে। বেটার লেট দ্যান নেভার। আজই শুভকাজটা সেরে আসবেন গিয়ে। আলমারি খুলে সন্তর্পণে লকার থেকে একটা লাল রঙের ভেলভেট ব্যাগ বার করলেন প্রতিমবাবু । হাতের মুঠোর সাইজের ব্যাগ। তারপর পাঞ্জাবি পায়জামা গলিয়ে, টাকের ওপরকার তিনটে চুল আঁচড়ে নিয়ে সটান গিয়ে উপস্থিত হলেন অর্ণবদের দরজায়। কলিংবেল বাজে না। অতএব হাত দিয়েই থপাস থপাস করে দুটো বাড়ি দিলেন দরজায়। তাঁর হাতে আবার কোনোকালেই তেমন পুরুষালী শব্দ বাজে না।
অর্ণব আছে? দরজা খুলতেই জিজ্ঞেস করলেন প্রতিমবাবু। যদিও তিনি নিজের চোখে পাঁচমিনিট আগেই অর্ণবকে বাজারে যেতে দেখেছেন। দূর থেকে যা মনে হয়, প্রিয়াঙ্গী তার চাইতে অন্তত সাড়ে তিনগুণ বেশি সুন্দরী। কিন্তু সেদিকে মন দেওয়াটা ঠিক হবে না। প্রতিমবাবু একটু গলা খাঁকারি দিলেন। মেয়েটা ভেতরে বসতে বলে না কেন! লজ্জার মাথা খেয়ে অগত্যা নিজেই বললেন, “আমি কি একটু ভেতর বসতে পারি? আমি আপনাদের বাড়ির উল্টোদিকেই থাকি। হয়তো খেয়াল করে থাকবেন”। মুখে বললেন বটে। তবে খেয়াল যে করে না মোটেই, তা তিনি ভালই জানেন। প্রিয়াঙ্গী একরকম বাধ্য হয়েই দরজা ছেড়ে সরে দাঁড়াল। প্রতিমবাবু ঢুকে দেখলেন, টেবিল, চেয়ার, সোফা ভর্তি শুধু বই আর বই। তবে থাকে থাকে দড়ি দিয়ে বাঁধা। বেশিরভাগই বেশ পুরনো। এত বই কে পড়ে? জিজ্ঞেস করেই অস্বস্তিতে পড়লন প্রতিমবাবু। মেয়েটা বোধহয় এসব প্রশ্ন টশ্ন করা পছন্দ করছে না। প্রিয়াঙ্গী শীতল গলায় উত্তর দিল, “আমি”।
“কিন্তু আপনাকে তো কখনো…” বাকি কথাটুকু কোঁত করে গিলে ফেললেন প্রতিমবাবু। কেলেঙ্কারি হয়ে যেত আরেকটু হলেই। শেষে এই বুড়োবয়সে এসে মেয়েদের স্টক করার জন্য জেলে যাবেন নাকি! অর্ণব সময়মতো বাজার থেকে ফিরে এসে বাঁচিয়ে দিল। তাঁকে এভাবে ঘরের মধ্যে বিরাজমান অবস্থায় দেখে একটু ঘাবড়েও গেল সম্ভবত। পুরনো প্রতিবেশীর ঝুলি থেকে অনেকসময়েই কোনো না কোনো বেয়াক্কেলে ম্যাও বেরিয়ে পড়ে।
প্রতিমবাবু আর দেরী করলেন না। পকেট থেকে লাল ভেলভেটের ব্যাগটা বের করে প্রিয়াঙ্গীর হাতে তুলে দিয়ে বললেন, “তিয়াস থাকলে সে আরও আগেই তোমাদের হাতে উপহার তুলে দিত। আমি এসব অত খেয়াল রাখতে পারি না। অর্ণবের কাঁধে হাত রেখে বললেন, “চল দেখি একটু আমার সঙ্গে। তোমার সঙ্গে একটু কথা আছে”। অর্ণব পাংশুমুখে প্রতিমবাবুর সঙ্গে বাইরে এল।
“কী হে ছোকরা! এত ভয় পাচ্ছ কেন? ভাবছ, তোমার পুরনো কথা তোমার বউকে বলে দেব! না হে বাপু! ইচ্ছা থাকলেও বলতে পারব না। তার বিন্দুবিসর্গও আমার মনে নেই। যার মনে থাকার কথা , সে থাকলে না হয় অন্য কথা ছিল।“ হঠাত করেই যেন অর্ণবের চোখমুখ অন্যরকম হয়ে গেল। প্রতিমবাবুর ডান হাতটা ধরে বলল, “কাকিমাকে খুব মিস করছি প্রতিমকাকু। উনি থাকলে হয়তো আমাদের সুবিধা হত”। “কেন বলতো! কী সমস্যা তোমাদের?”
“জানিনা আপনাকে এটা বলা যায় কিনা, কিন্তু একটা কাউকে তো আমায় আঁকড়ে ধরতে হবে!” অর্ণবের গলা ধরা ধরা। “ছোটবেলায় কাকিমার অনেক স্নেহ পেয়েছি। আপনারও। আপনি ছাড়া আর কারোর ওপর আমি ভরসা করত পারব না”। বহুকাল পরে যেন এপ্রিলের প্রথম বৃষ্টির মতো মন ভিজে এল প্রতিমবাবুর। বহুদিন কেউ এভাবে তাঁর কাছ আবদার করে না। প্রতিমবাবু বললেন, “আমাকে নির্দ্বিধায় খুলে বল। কী হয়েছে?”
“কাকু, প্রিয়াঙ্গী খুব ঈশ্বর বিশ্বাসী। ইনফ্যাক্ট ওদের সমস্ত পরিবারটাই তাই। বিশেষত জ্যোতিষশাস্ত্রে ওদের অগাধ বিশ্বাস। ওর সঙ্গে আমার সম্পর্ক তৈরি হয় বছরখানেক আগে। প্রথমদিকে সব ঠিকই ছিল। ওদের বাড়িতেও আমাকে নিয়ে কোনো আপত্তি ছিল না। কিন্তু হঠাত করেই একদিন ওর বড়জঠু মধ্যপ্রদেশ থেকে ওদের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। উনি নাকি ওখানে বড় জ্যোতিষী। আমাকেও সেইসময় ওদের বাড়িতে নিমন্ত্রণ করা হয়। মানে জেঠুর সঙ্গে আলাপ করানোর জন্যই আরকি। আলাপ তো হল। কিন্তু প্রথমেই আমার মনে হল যে আমি ওঁর নাপসন্দ। হয়তো আরও ভাল পাত্রের সন্ধান ছিলো ওঁর কাছে। জানি না। দু,চার কথা বলার পরেই উনি কেমন একদৃষ্টে আমার কপালের দিকে তাকিয়ে থাকলেন। সে বেশ অনেকক্ষণ। তার পরেই কেমন যেন অস্থির হয়ে পড়্লেন। বারবার আমার জন্মসময় নিয়ে প্রশ্ন করতে থাকলেন। আমি তো এসবের কিছুই জানি না। মা কোনোদিনই আমাকে এসব কথা বলেনি। বাবা মারা যাবার পর থেকে মা ঠাকুরের আসন টান মেরে বাইরে ফেলে দিয়েছিল। আপনার হয়তো মনে থেকে থাকবে। যাই হোক, প্রিয়াঙ্গীর জেঠুর ধারনা, আমার সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক হলে প্রিয়াঙ্গীর নাকি বৈধব্য অবধারিত। এসব কথা আজকের দিনে কেউ মানে? বলুন তো! প্রিয়াঙ্গীকে অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে, ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে অবশেষে বিয়ে করতে পেরেছি। তাও পালিয়ে বিয়ে। ভেবেছিলাম, ওই পরিবেশ থেকে বেরিয়ে এলেই সব ঠিক হয়ে যাবে। এখন দেখছি সে গুড়ে বালি। এর শিকড় অনেক গভীরে। সে এখন আমার থেকে সাত হাত দূরে দূরে থাকে। পাছে আমরা ঘনিষ্ঠ হই। তা নাহলে নাকি আমাকে বাঁচানোই যাবে না”।
এতদূর পর্যন্ত একনিঃশ্বাসে বলে হাঁপাতে লাগল অর্ণব। খুব হতাশ দেখাচ্ছিল ওকে। প্রতিমবাবু একটুক্ষণ ভাবলেন। তারপর বললেন, “খুবই চিন্তার কথা দেখছি। তোমার অবাক লাগলেও আমি এতে আশ্চর্য হব না। যে দেশে এখনও জাতপাতের নামে ধর্ষণ হয়, ব্রাহ্মণের টিউবওয়েলে শূদ্র জল নিতে পারে না, সেই দেশেই তো জ্যোতিষ গেড়ে বসবে। রমরম করে চলবে। অন্ধবিশ্বাস তোমার ঘাড়ের ওপর উঠে ঠ্যাং দিয়ে গলা চিপে ধরবে। দ্যাখো অর্নব, অন্ধবিশ্বাস আর কুসংস্কার বড় মারাত্মক জিনিষ। হাজার চেষ্টা করলেও তুমি এসব ভুল সহজে ভাঙাতে পারবে না। তবে এর ওষুধ আমার জানা আছে”।
“কী ওষুধ কাকু?” উদ্গ্রীব হয়ে জিজ্ঞেস করল অর্ণব। “আপনি যা বলবেন, আমি করতে রাজী আছি। আমি শুধু ওর সঙ্গে একটা সুস্থ স্বাভাবিক সম্পর্ক চাই। আর পাঁচটা লোকের মতো সংসার করতে চাই। ভালবাসতে চাই, ঝগড়া করতে চাই। মোট কথা , চুটিয়ে বাঁচতে চাই। এভাবে আর পারছি না ”।
“শোনো। বিষে বিষক্ষয় হয় জান তো! তোমার বউয়ের হাতে যে লাল ভেলভেটের ব্যাগটা দিয়েছি, ওতে দুটো মাঝারি মাপের দামী পাথর আছে। নীল রঙের। তিয়াসের তো পায়ের তলায় সরষে ছিল জানোই। ওই কোথাও থেকে সংগ্রহ করে এনেছিল। তুমি বরং বউকে বল যে ওই পাথরদুটো বিশেষ গুণসম্পন্ন। ব্যাপারটা পুরোপুরি আমার ঘাড়ে দিয়ে দাও। বলবে যে আমি বলেছি। বলবে, এই পাথরের ওপর এক সন্ন্যাসীর আশীর্বাদ আছে। স্বামী স্ত্রী দুজনে দুটো পাথর ধারণ করলে তাদের জীবনে কখনও বিচ্ছেদ আসে না। এই কথা ওকে বলে দ্যাখো। আমার মনে হয়, তোমার সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। পালিয়ে বিয়ে করছ যখন, ও নিশ্চয় এখন বাপের বাড়ি গিয়ে এসব বলতে যাব না”।
“এভাবে কি হয়! শেষে মিথ্যে কথা বলব! ও জানতে পারলে খুব দুঃখ পাবে”। অর্ণব কিন্তু কিন্তু করছিল।
“আরে বাপু! এভ্রিথিং ইজ ফেয়ার ইন লাভ এন্ড ওয়ার। যদি কখনো ধরা পড়েও যাও, তখন তো তোমার হাতে প্রমাণ রইলোই যে বৈধব্যযোগটোগ সব ভুয়ো কথা। এখন লেগে পড় তো দেখি। আমার আবার বাড়ি ফিরেই লিখতে বসতে হবে”। প্রতিমবাবু অর্ণবের পিঠে একটি বিরাশিসিক্কার চাপড় দিয়ে ফুরফুরে মনে বাড়ি চললেন। তাঁর মনে হচ্ছে, এতকালে তিনি একটা কাজের কাজ করতে পেরেছেন। আজ তিয়াস থাকলে… । নাহ! মোক্ষম একটা সাবজেক্ট পেয়েছন। বাড়ি গিয়ে জম্পেশ একটা গল্প এবার তিনি নামিয়ে ফেলবেনই।

CATEGORIES
TAGS
Share This
demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes