
রাজর্ষি দে-এর গুচ্ছ কবিতা : নাস্তিকের সলিলকি

১
নাস্তিক – মানে পাতি বাংলায় যার দেবদ্বিজে ভক্তি নেই। আবার একটু পেছনে সরে গেলে যার বেদকে শ্রুতি মনে হয় না, সেই নাস্তিক। এই পেছনে পেছনে সরতে সরতে শুধু যে বিন্দু থাকে তাতে মানুষ নেই। শুধু মানুষ কেন গরু ভেড়া, বাঘ সিংহ, নদী নালা, চাঁদ সূর্য, ম্যাটার এন্টি ম্যাটার কিচ্ছু নেই। সেই বিন্দুর দিকে টর্পেডোর মতন ? ছুড়ে দিচ্ছি। এইবার প্রশ্ন হচ্ছে সেই বিন্দুর মধ্যে ? গিয়ে পড়লে কিছু কি ফেরত আসে? কী ফেরত আসে? Key ফেরত আসে? ঈশা বাস্যম্ বলছে এখানে পূর্ণতা, ওখানেও পূর্ণতা। অথচ আমি দেখেছি এখানে শুন্যতা, ওখানেও শূন্যতা। এই মহা ০ মায়া? কিন্তু ও পাড়ার মায়া দিদিমণির যে কায়া তা কি মায়া? সেই মায়াময় ব্লাক হোলের ফণার সামনে আমার নির্বাণ যে হোঁচট খাচ্ছে।
নির্বাণ কে? স্থান কাল ঊর্ধ্বের চিরযুবক – কবিতা লেখে।
২
অহম্ ব্রহ্মাস্মি! সৃষ্টির আদি অসুখ। যা আপাতত ফর্মায় বিক্রি আছে। ৩০০০-এ দু ফর্মা ১০০ কপি। মেলার আগে এসে যাবে। লেখক পাবেন ৮০ কপি। সেই কপি ছুড়ে ছুড়ে এটম ভাঙব এরম গোপন অভিসন্ধি রাখি। এটম ভাঙলে অশনি সংকেত। ভাঙন আরো গভীর হলে সূক্ষ্মতম সুতো নড়ে চড়ে। সেই নড়ন চড়নের ঠেলায় পাতায় পাতায় মহাবাক্য লেখার চেষ্টা করছি। অন্তত ছটা দাঁড় করাতে পারলেই শেষনাগের ফণা ছুড়বে এই ফর্মাবাজি। পাঠক সাবধান হন। ৫০ টাকার বিনিময়ে আপনার স্কন্ধের উপর পৃথিবীর ভাড় দান করব।
৩
– আমি কি এই লাইক শেয়ার?
– না
– আমি কি এই “এডিশন শেষ”?
– না
– আমি কি এই বইগুলো?
– না
– আমি কি এই কবিতাগুলো?
– না
– আমি কি এই শব্দ জব্দ?
– না
– আমি কি এই আদি ধ্বনি?
– না
– আমি কি এই নৈশব্দ?
– না
–
– না
৪
প্রথমে অতলান্ত আঁধার ছিল। তুমি বললে আলো হোক। আলো হল। এই গল্পটা মিথ্যে জানি। অর্থাৎ কিনা কল্পনা। আবার যা কল্পনা তা কি কিঞ্চিৎ সত্যি না? অনেক ক্ষুদ্র মিথ্যের মালা দিয়ে গাথা এক বৃহৎ সত্যি? ধরে নেওয়া হোক সত্যি। এইবার ধরা হল তুমি=আমি। এইবার সিঁড়িভাঙা অঙ্কের মতন কষতে থাকা হোক। শেষ ধাপে দেখবেন আলো ক্রমে আসিতেছে।
৫
ব্রহ্ম সত্য, জগত মিথ্যে। আদার ব্যাপারী, তাই ব্রহ্ম আপাতত মুলতবি থাকুক। এই জগতকে এক একটা ফ্রিজশটে পুরে দিচ্ছি শব্দের রিলে। শব্দের দণ্ড উঠছে নামছে। সৎ – জাম্প কাট – চিৎ – জাম্প কাট – আনন্দ। আনন্দ থেকে ছলকে ছলকে উঠছে গরল। প্রথম পাপের সংস্কার অতিক্রম সৎ হচ্ছে আনন্দ। বিষের থলি নিঃস্ব করে এলিয়ে পড়ছে কলম। সেই বিষের বীজ নিয়ে বাড়ছে জগৎ। জগৎ গরলের সন্তান। তাই চরম সত্য।
জগত সত্য; ব্রহ্ম? আত্মহত্যা না করার অজুহাত।


আহা চমৎকার লেখা
খুব ভাল লেখা।