পঙ্কজ চক্রবর্তীর কবিতাগুচ্ছ

পঙ্কজ চক্রবর্তীর কবিতাগুচ্ছ

উৎপাদন

তোমার দূরত্ব এসে বলে যায় আমার ভূমিকা নেই, এমনকী পাদটীকা নেই। আমি শুধু শান্ত অক্ষরের ঘোষিত জীবন। অবশিষ্ট পাজামার ঈর্ষাকাতর এক ফুল। এই গলিপথ তোমার বুকের উপর ছায়া ফেলে সরে গেছে মোহনার দিকে। আবহবিকার। মাঝে মাঝে খুলে যায় পেঁয়াজের দেহ। ব্যথার মিডিল ক্লাস পুষে রাখা ব্যথা। আহত সুন্দর। পেন্সিলের নীল অপরাধ।

ওগো ছায়াপুতুল ভাঙাচোরা রেলব্রিজের কিনারায় তোমার ব্যঙ্গমা দুপুর নষ্ট করেছি এতদিন। প্রতিটি ট্রেনের ছায়া যেন আজ মায়াবী অক্ষরের ভাঙা হাটে সুনিপুণ গ্রন্থবিনিময়।

মফস্সল

যেমন অরণ্য, কোথাও রয়েছে পথ, শুধু আভাসেই মনে হয় বেঁচে আছি। ফেরার সমস্ত পথ ভিজে আছে সূর্যাস্তের মেঘে। তোমার চোখের ইশারায় দেখা যায় লতাপাতার এক বাড়ি, ধূসর হলুদ। আমি ফিরলাম। মনের অরণ্য মিশে আছে বিছানা বালিশে। শুধু শেষ ট্রেন চলে গেলে ছিঁড়ে যায় নাড়ি।

আজ সারাদিন মাথার ভেতর তোমার লতাপাতার মোহ, বিচ্ছেদের অভিশাপ। পূর্বজন্মের মতো সরে গেছে ভোরের উঠোন। দুচোখের প্রান্ত ছুঁয়ে জেগে আছে আশির দশক – এক মধ্যপন্থী মফস্সল।

ঐশ্বর্য

পিছনের দৃশ্য আজ পরিত্যক্ত সন্তানসম্ভবা। তাকে কুড়িয়ে নিতে এসে দেখি তোমার মুখের রেখায় প্রথম বেদনা স্থির হয়ে আছে। কতদূর যাব আমরা মেহগনি গাছের ঐশ্বর্যে? সমস্ত বিবেচনা একটি শালিক পাখির মতো প্ররোচনামূলক। উদ্দেশ্যবিহীন নিষিদ্ধ বাথরুমে নেমেছে গোধূলি। হাতে হাতে দুপুরের ঘুম ছেড়ে এগোচ্ছে সংসার। মনে পড়ে লাল বালতির সতর্কতা। মনে পড়ে দুপুরের চারপাশে পড়ে থাকা অস্থির সাবানের আয়ু।

সম্ভাব্য পিতার মতো তার মুখে কোনো কথা নেই। সিঁড়ির দুপাশের সাম্রাজ্য ফেলে প্রতিদিন চলে যায় নিরর্থক একটি হালুম

পাঁউরুটি যখন বাসি হয়ে যায়

সকালেই বাসি রুটি নিয়ে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েছে ছেলেটি। সে জানে বেরোতেই হবে।সারারাতের শীৎকার শেষ হলে সে দরজা খুলে দেখে ভোরের মস্তিষ্ক দুহাত পেতে বসে আছে পেয়ারা গাছের নীচে।
তার বোবা কান্নার ভিতর ছেঁড়া পর্দা বাতাস পাঠায়।
স্টেশনের বাসি পাঁউরুটি বলে দেয় এই ট্রেন কারশেডে যাবে।তবু সে মাঝে মাঝে প্রস্তুতি নেয়। যাবতীয় খুনের ঘটনা মনে মনে সাজিয়ে রাখে।একা হাতে ভেঙে দেয় একদিন পথের সাম্রাজ্য।

ঐ তো,পূবদিকে ফ্ল্যাটবাড়ির ওপারে দিগন্তকাকু দাঁড়িয়ে আছেন শুধুমাত্র তার অপেক্ষায়

সোনার তরী

মাঝরাতে মনে হয় গর্ভ জুড়ে শুয়ে আছে সাপের খোলস। নগ্ন লেখকের বুকের স্বপ্ন। যেন পুরস্কারধন্য এক ফাঁপা মানুষের সর্বস্ব, অতিকায় ম্লান দশকের ছায়ার নীচে ঘুমিয়ে পড়েছে। সিঁড়ি বেয়ে উঠে আসছে প্রুফ রিডারের নকল চশমা। অনভ্যস্ত হাতের ব্যবহারে তোমার দিগন্ত আজ ছোটো হয়ে গেছে। আমি ভাবি শিল্পের কথা। আমি চাই শব্দগুলি চোখ মেলে দেখুক বাকপ্রতিমার রহস্য। সভার সমস্ত ফুল মনে মনে শোকস্তব্ধ হোক। ঐ তো নৌকো এগিয়ে এসেছে গূঢ় অন্ধকারে।

জলের ভিতর থেকে উঠে এল স্বর্ণগাভী, আষাঢ়ের প্রতারক কুশপুত্তলিকা…

কথাজীবন

ঘুম ভেঙে যায় অথচ পাহারা শেষ হয় না। তোমার শান্ত চুলের পাশে জেগে থাকি মধ্যরাতে। দু-একটি টিকটিকির দেখাশোনা করি। বিছানার কোণে সন্তানের হাত পা ফিরিয়ে আনি যথাস্থানে। যদি তুমি চোখ মেলে তাকাও কোথায় পাব রোদ্দুর। শুধু মাথার পাশে রাখা গরম দুধটুকু দিতে পারি। আমাদের এর বেশি বিবেচনা নেই। এর চেয়ে বেশি নয় সামান্য পাঠক হৃদয়।

দুই পাহারার মাঝখানে দিবাস্বপ্নের সেতু। এবার বাড়ি হবে স্টেশনের কাছে- মনে মনে ঘনিষ্ঠ অসুখ পেরোবে অসেতুসম্ভব পোষা কুমীরের দাঁত …

CATEGORIES
Share This

COMMENTS

Wordpress (1)
  • comment-avatar
    সীমিতা মুখোপাধ্যায় 3 years

    খুবই ভালো লাগল।

  • demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes