নভেরা হোসেন -এর গল্প -উত্তরকাল

নভেরা হোসেন -এর গল্প -উত্তরকাল

ধানমন্ডি এলাকাটা মনসুরের খুব প্রিয়। ছোটবেলা থেকেই রায়ের বাজার,ঝিগাতলা, মধুবাজার এসব জায়গায় কাটিয়েছে। সব সময় ইচ্ছা ছিল ধানমন্ডিতে থাকার,এতদিনে সে ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। রায়েরবাজারে বাবার বাড়িটা বিক্রি হয়ে যাবার পর হাতে বেশ কিছু টাকা এলো আর নিজের সেভিংস থেকে রেডিমেড একটা ফ্ল্যাট কিনে ফেললো। পিরাভী এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছে। ওর জন্য আলাদা গাড়ি কেনা দরকার, কিন্তু সেটা এখন সম্ভব হচ্ছে না। সেজন্য অফিসে গিয়ে পিরাভীর জন্য গাড়ি পাঠিয়ে দেয়। লায়লারও প্রায়ই গাড়ির দরকার হয়। শপিং আর বন্ধুদের সাথে ঘোরাঘুরি। লায়লার সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় পরিচয় হয়, তখন মনসুর লায়লার প্রতি তীব্র আকর্ষণ বোধ করতো । ওদের সময়ে জুটিদের ঘোরাঘুরি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু ওরা অনেক একান্ত সময় কাটিয়েছে। মনসুরদের বাসা যখন ফাঁকা থাকতো লায়লাকে নিয়ে হাজির হতো। একবার বাসার সবাই ছোট খালার বাসায় সিলেট বেড়াতে গেলো সাতদিনের জন্য , মনসুর লায়লাকে নিয়ে বাসায় উপস্থিত হয় । মনসুর এই বিষয়টা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না, একবার মাথায় ইচ্ছাটা চাপলে আর চুপচাপ থাকতে পারে না, কোনো না কোনো উপায় বের করে ফেলে। বিয়ের আগে কক্সবাজার , রাঙামাটি অনেক জায়গায় গিয়েছে লায়লাকে নিয়ে। মনসুরের আরেকটা বিষয় ছিল, হঠাৎ করে কোনো মেয়ের প্রতি তীব্র আকর্ষণ বোধ করতো । এটা এমন যে ঝড়ের মতো মনসুরকে অস্থির করে তুলতো। দু -এক জনের সাথে দেখা -সাক্ষাৎও হতো একান্তে, লায়লা এসব জানে না। পতিতালয়েও যাওয়া-আসা ছিল মনসুরের, সেটা অবশ্য লায়লার সাথে সম্পর্ক হওয়ার আগে । নতুন কারো সাথে মিলিত হওয়ার বিষয়টি মনসুরের কাছে সব সময় উত্তেজনাকর । প্রথম দিকে হলে থাকতে বন্ধুদের সাথে পতিতালয়ে যাওয়ার অভ্যাস গড়ে উঠেছিল । ওদের হল সব সময় রাজনৈতিক ক্যাডারদের ইঙ্গিতে চলতো, মনসুর সরাসরি রাজনীতি না করলেও উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের সাথে ওর বন্ধুত্ব ছিল। মনসুরের বাবা -চাচাদের বায়িং হাউসের ব্যবসা ছিল। মনসুরও ওখানে পার্ট টাইম কাজ করে ভালো রোজগার করতো। সেজন্য হলের বড় ভাইদের প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে টাকা দিতে পারতো। হলে অনেক মেয়েরা আসতো, বেশিরবাগ রাজনৈতিক নেতাদের কাছে আসতো। তবে মনসুর ব্যতিক্রম ছিল, ওকে নেতারা প্রশ্রয় দিতো ।

মনসুর বেশিরভাগ সময় বেশ ভালো মেজাজে থাকে। কিন্তু ইদানিং লায়লার প্রতি একধরণের বিরক্তি কাজ করে। লায়লা শুধু টাকা টাকা করে। লায়লারও ব্যবসা আছে বুটিকের, কিন্তু টাকা পয়সার দরকার হলেই মনসুর। মনসুরের মনে হয় ওর অন্য কোনো সম্পর্কও আছে। ঘন্টার পর ঘন্টা কার সাথে যেন মেসেঞ্জারে চ্যাট করে, হুটহাট বাইরে চলে যায়, জিজ্ঞেস করলে বন্ধুদের কথা বলে। দুজনেই ব্যস্ত থাকাতে মেয়েকে দেখার সময় হয় না কারো।বাসায় রহিমা খালা আছে সেই ওর সাথে থাকে সর্বক্ষণ। পিরাভী নর্থ-সাউথে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর ওর অনেক বন্ধু-বান্ধব, খালি বাসায় সারাদিন আড্ডা চলে। মনসুর মেয়ের ঘরে বিয়ারের কৌটো, সিগারেটের খোসা এসব দেখতে পেয়েছে। নিজে চূড়ান্ত ভোগবাদী জীবন কাটালেও লায়লা বা পিরাভীর ব্যাপারে ওর একটা রক্ষণশীলতা কাজ করে। এটা হয়তো বাঙালি সংস্কার। মনসুর নিজের ব্যাপারে যতটা খোলামেলা স্বাধীনতা চর্চা করে, ওদের বিষয়ে তেমনটা ভাবতে পারে না। বুকের ভেতর একটা ভয়, গভীর শূন্যতা কাজ করে।

ইদানিং লায়লা খুব দেশের বাইরে যাচ্ছে বন্ধুদের সাথে। নেপাল,ভুটান,সাজেক আরো কোথায় কোথায়। রাতে পিরাভীর সাথে অনেক কথা হলো খেতে খেতে। অনেকদিন পর মেয়ের সান্নিধ্যে। লায়লা বন্ধুদের সাথে গাজীপুরে একটা রিসোর্টে বেড়াতে গেছে। পিরাভী বাসায় খুব সংক্ষিপ্ত পোশাক পরে, আজ পড়েছে একটা হাত কাটা টি – শার্ট আর হাফ প্যান্ট । ওর উন্নত বুক স্পষ্ট হয়ে আছে। মনসুর চোখ ফিরিয়ে নিতে গিয়েও পারলোনা , এমন কেন হচ্ছে মনসুর বুঝতে পারছে না। রাতে পিরাভী খালি বাসায় অনেক রাত পর্যন্ত গিটার বাজালো। মনসুর ব্ল্যাক লেভেলের বোতল নিয়ে বসেছে বারান্দায়, সিগারেটের ধোঁয়ায় বারান্দা ভরে গেলো। পিরাভী হঠাৎ পিছনে এসে দাঁড়ায় ।

কি আম্মু তুমি এখনো ঘুমাও নি ?
ঘুম আসছে না ।
কিছু বলবে?
পিরাভী উসখুস করে বলে কিছু মনে করো না আমাকে দুটো সিগারেট দাও, শেষ হয়ে গেছে ।
মনসুর মেয়েকে কাছে টেনে কোলে বসায়, পিরাভীর অস্বস্তি হচ্ছে। মনসুর মেয়েকে গালে চুমু খায় , পিরাভী সিগারেট নিয়ে চলে যায়। মনসুর চমকে ওঠে , পিরাভীর উপস্থিতি ওর মধ্যে যৌন-আকাঙ্ক্ষা জাগাচ্ছে। এতোদিন তো কখনো এমন ঘটেনি। ছোটবেলায় মেয়েকে কত আদর করেছে , এখনো মেয়েকে জড়িয়ে ধরে আদর করে। কিন্তু আজ কেমন ভিন্ন এক অনুভূতি এসে আচ্ছন্ন করছে। মনসুর একটার পর একটা সিগারেট খেতে থাকে। রাতটা লম্বা মুখ করে ঝুলতে থাকে অন্ধকারের মাঝে।

ব্যবসার কাজে কিছুদিনের জন্য ব্যাংকক যেতে হবে। পিরাভী জেদ ধরে, ও বাবার সাথে যাবে। মনসুর লায়লাকেও বলে যেতে কিন্তু লায়লা রাজি হয় না, ওর বুটিক শপের কি জরুরি কাজ আছে বলে । মনসুরের মনে হয় লায়লা ইচ্ছে করেই যেতে চাইলো না, নিজের মতো সময় কাটানোর জন্য। ব্যাংককে মনসুর দুটো কানেক্টেড রুম নেয়। এখানে এসে পিরাভী একদম উন্মাদ হয়ে গেছে। ডিস্কোতে যাচ্ছে, রুমে ড্রিংক করছে। মনসুর ওকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। লায়লা জানার পর মনসুরকে বকাবকি করতে শুরু করে। রাতে হোটেলের পাশের নাইট ক্লাবে গিয়ে দেখে পিরাভী এক সাদা চামড়ার সাথে খুব ঘনিষ্ঠ অবস্থায় নাচছে। ওর উন্মাদনা দেখে মনসুরের খুব রাগ হয়, মেয়েকে জোর করে হোটেলে নিয়ে আসে। পিরাভী খুব বাড়াবাড়ি করছিলো , কিছুতেই আসতে চাচ্ছিলোনা, নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছিলো। মেয়েকে রুমে নিয়ে এসে খাটে শুইয়ে দিয়ে সোফায় বসে থাকে মনসুর। ঘরটা সবুজ রঙের টাইলস দিয়ে ঘেরা, কার্পেটও সবুজ। মনেহয় চারিদিকে দিগন্ত বিস্তৃত ধানক্ষেত , নেশার ঘোরে মনসুর একটু দুলে ওঠে। পিরাভীকে খুব আবেদনময়ী মনে হয়। মেয়েটা মনসুরকে চুম্বকের মতো টানছে। পিরাভী খুব এলোমেলোভাবে শুয়ে আছে, ওর উরুটা নগ্নভাবে পড়ে আছে বিছানায়। মনসুর সম্মোহিতের মতো ওর দিকে এগিয়ে যায়, চুলে আদর করে ভালোভাবে শুইয়ে দেয়। পিরাভী উল্টে শোয়। মনসুর মেয়ের কপালে চুমু দেয়, পিরাভী মনসুরকে জড়িয়ে ধরে একেবারে ছোটবেলার মতো। মনসুর পিরাভীর সারা শরীরে চুমু খেতে থাকে, দুজনে ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে , খুব দ্রুত ঘটে যায় সবকিছু । একসময় মনসুর মেয়ের বিছানা ছেড়ে উঠে নিজের ঘরে যায়। কিছুক্ষণ অদ্ভুত এক অনুভূতি হতে থাকে, ভীষণ খারাপ লাগা গ্রাস করে। মনে হচ্ছে এটা কি হলো? বিছানায় অসার হয়ে পড়ে থাকে দীর্ঘক্ষণ। ওয়াশরুমে গিয়ে শাওয়ার ছেড়ে দাঁড়িয়ে থাকে । কত সময় কেটে গেছে মনসুর বুঝতে পারে না, খুব শীত লাগতে থাকে, শরীর মুছে সোফায় এসে বসে । পিরাভীর দরজার সামনে গিয়ে ধাক্কা দেয়, দরজা ভিতর থেকে বন্ধ , ওর ভেতর কি প্রতিক্রিয়া হচ্ছে জানতে ইচ্ছে করছে, কিন্তু খুব সংকোচ কাজ করছে, সামনে গিয়ে দাঁড়ানোর সাহস হচ্ছে না। পিরাভী ঘোরের মধ্যে ছিল কিন্তু বাবাকে না চেনার তো কোনো কারণ নাই। সারারাত নির্ঘুম কাটিয়ে চোখ লাল টকটকে হয়ে গেলো , ব্ল্যাক লেভেলটা শেষ করে ফেলে। ভোরের দিকে একটু ঘুম আসে, স্বপ্নে বড় বড় গর্ত দেখতে পায়, গর্তগুলো থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে , লাফ দিয়ে পার হচ্ছে মনসুর , হঠাৎ মোবাইলের মেসেজের শব্দে ঘুম ভেঙে যায়, বুক ধড়ফড় করতে থাকে। ধাতস্থ হতে বেশ কিছুক্ষন সময় লাগে। একটু একটু করে ভোরের আলো ফুটে ওঠে, মনসুর কিছুক্ষণ অচেতনের মতো ঘুমায়। ঘুম থেকে উঠে সকালের নাস্তার জন্য তৈরী হয়ে মেয়ের দরজায় করাঘাত করে মনসুর। বেশ কিছুক্ষণ পর পিরাভী দরজা খোলে , ও বেশ সহজভাবে বলে বাবা তুমি রাতে আমার বেডে ছিলে? এখন যদি কোনো প্রব্লেম হয়? মনসুর মেয়ের কথা শুনে অবাক হয়ে যায়। মেয়ে এতো সহজভাবে নিয়েছে বিষয়টাকে। কেমন যেন অদ্ভুত লাগে , মাথা চক্কর দিয়ে ওঠে, পিরাভী যা বললো একথা ওর একবারও মনে হয় নি। মনসুর আবার এসে বিছানায় বসে পড়ে বলে তুমি ব্রেকফাস্ট করে আমারটা রুমে পাঠিয়ে দিও। আর আমরা কাল সকালের ফ্লাইটে ঢাকা যাচ্ছি। মুখে অবাক হওয়ার অভিব্যক্তি প্রকাশ করে পিরাভী হাতে একটা ব্যাগ ঝুলাতে ঝুলাতে নিচে চলে যায়।

সারাদিন মনসুর নানারকম মানসিক টানাপোড়েনের মধ্যে কাটায় , মাঝে মাঝে নিজের উপর প্রচণ্ড রাগ হয় , সব কিছু ভেঙেচূরে শেষ করে দিতে ইচ্ছে হয়। লায়লা কয়েকবার ফোন করে, মনসুর লাইন কেটে দিতে থাকে , শেষে মোবাইল বন্ধ করে দেয়। খাবার না খেয়ে সারাদিন রুমে শুয়ে কাটায়, হোটেলের এক ছেলেকে দিয়ে টিকেট কেটে আনায়। পিরাভী কখন রুমে এসেছে মনসুর টের পায় না। পিরাভী ওর ঘরের দরজা বন্ধ করে রেখেছে। রাতটা আধো ঘুম, আধো জাগরণে কাটে। মনসুর এক ধরণের মনোবিকারে আক্রান্ত হয়, নিজের প্রতি ক্রোধ জন্মায়, মেয়ের প্রতি ক্রোধ জন্মায়, আবার খুব ভয় এসে ভর করে। সারারাত মনে হয় একদল লোক ওকে তাড়া করছে, কয়েকবার উঠে দরজা বন্ধ আছে কিনা দেখে। সকালে পিরাভীর ডাকে তন্দ্রা ভাঙে। বাবা ওঠো রেডি হবে না ? মনসুর হাঁপাতে হাঁপাতে ওঠে, নিজেকে একটা পরিত্যক্ত আসবাবপত্রের মতো মনে হয়। মেয়ের চেহারার দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে যায় মনসুর, মেয়ের চেহারায় রাতের ঘটনার কোনো ছাপ নেই। খুব গাঢ় করে লিপস্টিক দিয়েছে,কড়া মেক-আপ , টাইট জিন্স, টি -শার্ট, গলায় ঝোলানো লম্বা মালা। মনসুর উঠে তৈরী হয়ে এক কাপ ব্ল্যাক কফি খায়। ফোন খুলতেই করতেই অনেক সতর্ক বার্তা আসতে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যে লায়লার ফোন ।

কি ব্যাপার মনসুর ? তুমি ফোন বন্ধ করে রেখেছো কেন ? সারাদিন রুমে গুম হয়ে বসে ছিলে, পিরাভী আমাকে সব বলেছে। মেয়ের সাথে এসেও তোমার কোনো চেঞ্জ নাই। এতো ড্রিংক করো ? মনসুর চমকে ওঠে, পিরাভী কি রাতের ঘটনাও বলে দিয়েছে ? পানি পিপাসা পেতে থাকে । কিন্তু লায়লা তেমন কিছুই বলে না, শুধু ওর তালিকা অনুযায়ী শপিং না করেই ওরা ফিরে আসছে শুনে বকাবকি করতে থাকে ।

পিরাভী কানে হেডফোন দিয়ে গান শুনছে আর একটু একটু করে মাথা দোলাচ্ছে । মনসুর চুপচাপ থাকে , মেয়েকে বোঝা যাচ্ছে না, এক মনে গান শুনছে। এক সময় পিরাভী কানের হেডফোন খুলে রেখে বাবার দিকে তাকিয়ে বলে , বাবা তোমার কি খুব খারাপ লাগছে ?
মনসুর মেয়ের দিক হতে চোখ সরিয়ে নেয়। মেয়েকে হাত দিয়ে থামতে ইশারা করে ।

বাবা আমি জানি তোমার খুব খারাপ লাগছে । তোমার অনেক গার্ল-ফ্রেন্ড আছে তাও আমি জানি। তুমি তোমার জীবনটাকে পুরোপুরি উপভোগ করেছো, করছো । মামনিও তাই করে। তোমরা সব সময় নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত থাকো। জানো না আমি কে , কি চাই ? আমার ইচ্ছা -অনিচ্ছা, দুর্বলতা কিছুই তোমরা জানো না। তোমরা আমাকে অনেক দিয়েছো, ইন বাংলাদেশ কনটেক্সট ইটস আনবিলিভেবল।
মনসুর হাত দিয়ে মেয়েকে থামতে বলে ।
পিরাভী বলেই যাচ্ছে , বাট ইউ পিপল ডোন্ট নো মি।
মনসুর বলে তুমিও তো আমাদের কাছ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছো ।
হ্যাঁ নিয়েছি , হ্যাঁ নিয়েছি , কিন্তু কেন নিয়েছি তা কি জানো?
তুমিই বলো। আমরা তো চাইনি তুমি এতো আলাদা হয়ে যাও ।
আমি আলাদা হয়ে যাই নি , আমাকে আলাদা করে দেয়া হয়েছে। নাউ আই ‘এম এন ইন্ডিভিজুয়াল । তোমরা আমার পেরেন্টস ঐটুকুই , আমাকে তোমরা বুঝতে পারো না আমিও তোমাদের বিষয়ে ইন্টারেস্টেড নই ।
মনসুর মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে, কি রকম পরিণত আর আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে গেছে , ও যে মনসুরের নিজের সন্তান কিছুতেই মনে হচ্ছে না।
হঠাৎ মনসুরের মধ্যে ওই খারাপ লাগাটা ফিরে আসে, এটা কি হয়ে গেলো ? আর সুস্থির থাকতে পারছে না , মেয়ের কাছে খুব ছোট হয়ে গেছে , জঘন্য লম্পট । কেমন করে আবার সব আগের মতো হবে ?
মনসুর মেয়ের দিকে তাকিয়ে বলে ঐদিন রাতের ঘটনার জন্য আমি এক্সট্রিমলি সরি , আই ওয়াজ নট ইন সেন্স, জানি এর ক্ষমা নাই .. বলতে বলতে ওর গলা ধরে আসে ..

ওকে বাবা আই ডোন্ট মাইন্ড, ইটস অল রাইট । আই এনজয় ইট, এজন্য আমার কোনো খারাপ লাগছে না ।
মনসুর হা হয়ে মেয়ের দিকে তাকিয়ে থাকে , পিরাভী এটা কি বললো ? ও কি ভীষণ অচেনা হয়ে গেছে । নিজের চুল ছিড়তে ইচ্ছে করে মনসুরের । ব্যাগ নিয়ে দরজার কাছে যেতেই পিরাভী মনসুরকে আঁকড়ে ধরে , ঠোঁটে চুমু খেতে থাকে । মনসুর তড়িৎ স্পর্শের মতো সরে যায় । পিরাভী আবার এগিয়ে এলে মনসুর মেয়ের গালে একটা চড় বসিয়ে দেয়। পিরাভীও বাবার গালে চড় বসিয়ে দিয়ে ব্যাগ নিয়ে দ্রুত নিচে নেমে যায়। ট্যাক্সিতে কেউ কারো সাথে কথা বলে না, পিরাভী চোখ বন্ধ করে কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনছে আর মাঝে মাঝে মোবাইল দেখছে । প্লেনে পাশাপাশি সিটে বসে মনসুরের দমবন্ধ লাগে , নিজেকে একটা ঘৃণ্য প্রাণী মনে হতে থাকে । কেমন করে সে নিজের মেয়েকে উপভোগ করলো ? লায়লা যদি কোনোদিন জানতে পারে , কি জবাব দেবে মনসুর ? আর পিরাভী ? নিজের বাবা সম্পর্কে ওর মনে যে ধারণা হলো , তা ওকে কোথায় টেনে নেবে ? আর ভাবতে পারে না মনসুর, চোখ বন্ধ করে রাখে। মেয়েকে আর ওদের সাথে রাখা যাবে না, বিদেশে পড়তে পাঠিয়ে দিতে হবে । নিজের কাজকর্ম গুটিয়ে আনবে , খুব ক্লান্ত লাগছে । বিমান খুব ধীরে ধীরে নামতে শুরু করেছে , শরীরে ভিন্ন এক অনুভূতি । পিরাভী নিশ্চিন্ত মনে ঘুমাচ্ছে । প্লেন ধীরে ধীরে ল্যান্ডিং করলো। বিমান ঢাকার মাটি স্পর্শ করতেই আরেকটা নতুন দিনের আশংকায় মনসুরের অস্থির লাগতে শুরু করে। পিরাভী প্লেনের জানালা দিয়ে তাকিয়ে আছে ।

CATEGORIES
TAGS
Share This

COMMENTS

Wordpress (0)
demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes