চৈতালী চট্টোপাধ্যায়-এর কবিতাগুচ্ছ
মহাবলীপুরম, ডিসেম্বর,২০২১
বর্ণনা থেমে গেছে।
চোখে সুখের জল চিকচিক করে!
এমন সময় তুমি মৃত্যু ভাবছ কী করে…
কীভাবে ভাবছ তুমি সমাধি ও দুলে-ওঠা-আলো!
ফাঁকা ফাঁকা দাঁত, ময়লা জমেছে,
চুলে কতদিন হল চিরুনি পড়েনি–
সেইসব মুখচ্ছবি নরম দৃশ্যের মধ্যে
দুঃখবিলাস নিয়ে উঁকি মারছে,
অন্ধকার ভাস্কর্য যেমন!
অথচ,অরূপে যাওয়ার সময় হয়েছে আজ, পাথরের মন্দিরে রৌদ্র পড়েছে,
সমুদ্র সুর ভাঁজছে,
গান গাইছে গোলাপবালা!
মুহূর্ত জড়ো হয়।
মুহূর্তে শূন্যে মিলায়
২
মন্দিরের ভোর হল।শিল্প উঠল জেগে।
সমুদ্রে সুর্যোদয় দেখবে,
তাই নতুন মানুষদের ঘুম
ভেঙেছে তারও কিছু আগে!
পুলক দিচ্ছে খুব স্বাস্থভর্তি হাওয়া!
‘ভালো হলেই ভালো!’কাষ্ঠহাসি হেসে বললে তুমি।
চোখ জ্বলল আশাহি পেনট্যাক্সে!
এইসব প্রণয় ও রূপকথা দেখতে দেখতে,
মাস্ক খুলে রেখে,
আমি সাবধান হতে ভুলে গেলাম
৩
মেঘেরা নেমে পড়েছে কুচকাওয়াজে–
মেটে সিঁদুরের রং।জবাকুসুমের রং।
উড়ন্ত পাখির গায়েও লালচে আভা।
তিনি ভৈরবী বাজাতে বাজাতে, বাঁশিখানি
ঢেউয়ে ভাসালেন প্রথমে।
তারপর উঠে দাঁড়ালেন।
আমার যে-চোখ ঘোলা হয়ে গেছে,কাদা মুছে সে,এই অলৌকিকও প্রত্যক্ষ করল আজ!
আমি কি কৃতজ্ঞ হব?
কিন্তু কার কাছে
সি সি টিভি কিংবা শেষের কবিতা
জ্বলছে নিভছে চোখ।
রক্ত পড়ছে,দেখা যায়।
এ এমন–
খিদে পেলে জল খেয়ে শুয়ে পড়লে,
তাও দেখা যায়!
শোকের আগের দিন
গ্যাসবেলুনের মতো আনন্দ উড়ে যাচ্ছে,
ক্যামেরা দেখেছে।
দুর্ভিক্ষ,অসুখ যত,শাদাকালো হয়ে উঠে আসে।
মৃত্যু ধরা আছে লেন্সে।সেনবাবুদের রঙচঙে বিবাহবার্ষিকীটিও!
খোলাখুলি,সব।
শালবনে প্রেম হচ্ছিল। পরে, ধর্ষণ ছিল।
সে ফুটেজ, মুছে দিয়েছে কেউ।
কোথায় যে কী লুকোবো,দিশা পাই না…
পাছে ছবি ওঠে,
মন শুধু আরো মন দিয়ে ঢেকে রাখে
খুব দ্রুত জ্বালানি ফুরিয়ে আসছে,
সেই বেদনাকে
এপিটাফ
তোমার আমার কথা
লেখা হবে বায়োগ্রাফিতে।
কেউ বেশি সাহস দেখাইনি।
সে-কথাও লেখা হবে।
বাকিটা অস্পষ্ট থাক,
আমরা দুজনেই চেয়েছিলাম