আমাদের চেনা ভূতেরা, ভূত চতুর্দশী এবং হ্যালোউইন উৎসব
জয়ন্ত ভট্টাচার্য
ভূত চতুর্দশীর মতো ভাইফোঁটা বা আরো অনেক সামাজিক অনুষ্ঠান গভীরতর সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক ব্যঞ্জনা বহন করে। কিন্তু হয়তো কিছুদিনের মধ্যেই যেমন ভ্যালেনটাইনস ডে এসে গ্রাস করেছে আমাদের অস্তিত্বকে, ভূত চতুর্দশীকে হারিয়ে দেবে হ্যালোউইন। সে বড়ো সুখের দিন নয়! আমাদের একান্ত নিজস্ব ভূতেরাও তখন হারিয়ে যাবে! বাঁচার আনন্দই যে বেশ খানিকটা কমে যাবে। এখানে একটু স্মরণ করে নেবো এক্কেবারে ইংরেজি পরিবেশে তৈরি “অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড” আমাদের সুকুমার রায়ের হাতে পড়ে এক্কেবারে বাঙ্গালি “হ য ব র ল” হয়েছে। উদো-বুধো ত্রৈরাশিক না ভগ্নাংশ নিয়ে আকুল হয়, আমরা উন্মাদ হয়ে যাই ন্যাড়ার “লাল গানে নীল সুর”-এ। “তকাই” সেখানে পিতৃপুরুষের সবার নাম। এরকম উজ্জ্বল লড়াই আর কি হয়েছে? নিজের স্ব-কে বাঁচানোর লড়াই? পথিকৃৎ রবীন্দ্রনাথ। ছেলেভুলানো ছড়ায় এমন অসামান্য মাতাল-করানো কল্পনার ছবি – আয় ঘুম আয় কলাবাগান দিয়ে- / হৈঁড়ে-পানা মেঘ করেছে। / লখার মা নথ পরেছে কপাল ফুটো ক’রে / আমানি (পান্তাভাত) খেতে দাঁত ভেঙেছে। / সিঁদুর পরবে কিসে॥
আজ থেকে ঠিক ৪০ বছর আগে মেডিক্যাল কলজের ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে দেখেছিলাম এক অসামান্য ফিল্ম – ফ্রান্সেস্কো রোজি পরিচালিত “ক্রাইস্ট স্টপড অ্যাট এবোলি”। ছবিটির একটি বক্তব্য ছিল ইতালির এক দূরতম প্রত্যন্ত গ্রামে যেখানে মানুষ নিজের ছন্দে, নিজের মতো বাঁচে – যেখানে যীশু খ্রিষ্ট পৌঁছুতে পারেননি সেখানে যুদ্ধ ঢুকে পড়েছে। ২০১৯ প্রায় অতিক্রম করে যীশু খ্রিষ্টের জায়গায় স্বচ্ছন্দে দানবীয় কর্পোররেট পুঁজির মুক্ত বাজার বসিয়ে দেওয়া যায়। এ বাজার এমন কোন ভৌগলিক প্রান্ত নেই যেখানে পৌঁছুতে পারেনা, এমন কোন মনুষ্য মন বা চেতনা যেখানে পৌঁছুতে বা প্রভাবিত করতে পারেনা। আমাদের নিজেদের ভূতকে নিয়ে কি করবো এ নিয়ে বড়ো চিন্তায় আছি। কারণ শ্যামাপুজোর রাতে রায়গঞ্জের রাস্তায় (অন্য শহরেও হয়তো) নেমে এসেছে হ্যালোউইন – সংবাদপত্রের প্রথম পাতার সংবাদও হচ্ছে। আমাদের ভূতেদের (ইউরোপ-আমেরিকার গোস্ট নয়) সাথে এবার মনের জায়গা, ভালোবাসার জায়গা নিয়ে গোল বাঁধবে হ্যালোউইনদের। যেমন আমাদের নিজের উনুনে নিজের মাটির বাসনে জন্ম নেওয়া খই মুছে গিয়ে ঢুকে পড়ে পপকর্ন। কর্পোরেট পুঁজি সবার সমান এবং একধরনের পছন্দ, হাত-পা নাড়া, গায়ের পোষাক, দেহের প্রসাধন সব এক করে ফেলতে সফল হয়। কিন্তু আমরা যাকে কর্তৃত্ববাদ বলি তার চিহ্নমাত্র প্রকাশ্যে দেখা যাবেনা। মনে হবে সবই বড়ো উদার, খোলা এবং সবার সাথে মানানসই! একেবারে ভানুমতির খেলা। সর্বাগ্রাসী হাঁ হয়ে যায় স্বপ্নকায়া চিত্রকল্প।
টি এস এলিয়টের বিখ্যাত কবিতা “দ্য ওয়েস্ট ল্যান্ড”-এ রয়েছে এই অবিস্মরণীয় লাইনগুলো –
Then spoke the thunder
DA
Datta: what have we given?
…
DA
Dayadhvam: I have heard the key
…
DA
Damyata: The boat responded
একটি সংস্কৃত শব্দ “দ” তিনটে ভিন্ন ভিন্ন অর্থ বহন করছে। কিভাবে? বৃহদারণ্যক উপনিষদে ভগবান বিষ্ণুর কাছে দেবতা, অসুর এবং মানুষ তাদের করণীয় জানতে চেয়েছিল। বিষ্ণু বলেছিলেন – “দ”! দেবতারা কামনা-বাসনা-ষড়-রিপুতে পরিপূর্ণ বলে মনে করল – দম্যয়ত, অর্থাৎ, দমন করতে শেখো। অসুররা বড়ো বেশি অত্যাচারী বলে মনে করলো – দয়দ্ধম, অর্থাৎ, দয়া করতে শেখো। মানুষ স্বভাবজাতভাবে অর্থলোভী, কৃপণ এবং সঞ্চয়ী বলে সে মনে করলো – দত্ত, অর্থাৎ, দান কর। প্রেক্ষিত এবং মানসিক অবস্থান বদলে গেলে শব্দের অর্থ এবং ব্যঞ্জনাও বদলে যায়। আমার অতিপ্রিয় ভূতের আলোচনাতেও তাই।
এতো একেবারে ২০১৯-র হ-য-ব-র-ল হয়ে যাচ্ছে। কথা ছিল ভূত কাহিনীর, সেখান থেকে এলিয়টের কবিতা, তাতেও ক্ষান্তি না দিয়ে শুরু হল বৃহদারণ্যক উপনিষদ এবং “দ” শব্দের ব্যাখ্যা। একেবারে ভূতগ্রস্ত আচরণ। আসলে ভূত আমার বেজায় ভালো লাগে। শীর্ষেন্দু মুখার্জীর গপ্পে আছে সেই বুদ্ধিমান ভূত মাঝে মাঝে মাথা জ্যাম হয়ে গেলে মাথাটা খুলে ঘেঁটেঘেুটে পরিষ্কার করে আবার পরে নিতো। এ যে আমার কতদিনের স্বপ্ন! আমি ভূত দেখেছি। এদেশে নয়, বিদেশে। হংকং-এর ডিজনি ল্যান্ডে। আমার গায়ে বাতাস দিয়ে চলে গেছে, ফিসফিস করে ইংরেজিতে (চৈনিকে বললে বুঝবো না ভেবে হয়তো!) কথা বলেছে। এমনকি জামার কলারের নীচে সুড়সুড়ি দিয়েছে। এরকম রসিক ভূতকে ভালো না বেসে পারা যায়?
যাহোক, ভূত নিয়ে দু’কথা বলতে গিয়েই মনে হল হিন্দুধর্মের বিশ্বাস অনুযায়ী তিনটে লোক (বা space বা পরিসর) আছে। মৃত্যুর পরে প্রথমে মানুষের আত্মা দেহ এবং “নরলোক”ছেড়ে গিয়ে “প্রেতলোক”-এ থাকে, এরা আমাদের পিতৃপুরুষ। মহালয়ার তর্পনের সময় আমরা এদের মুক্তির প্রার্থনা করি। এদের মুক্তি ঘটলে “প্রেতলোক” ছেড়ে সটান “দেবলোক”-এ চলে যান।
“ভূত চতুর্দশী”-র দিনে সমস্ত বাজে ভূতেরা জেগে ওঠে, দিদ্দিম দিদ্দিম নেত্যও করে। কতরকমের যে বাজে ভূত আছে! তার মধ্যে আবার শাঁকচুন্নী, ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়ের গল্পে, গোবর জল দিয়ে সর্বত্র গন্ডগোল করে রাখে। ওর এই পরিচ্ছন্নতার স্পষ্ট ধারণা নিশ্চয়ই যোগী আদিত্যনাথের খুব পছন্দ হবে। সাধে কি হিন্দুধর্মের আরেক নাম “সনাতন ধর্ম”। কবে থেকে শাঁকচুন্নী এ কাজটি করে আসছে ভাবা যায়না! যে কথা হচ্ছিল – কতরকমের ভূত রয়েছে। সর্বশেষ সেন্সাস রিপোর্ট আমার হাতে আসেনি এখনো। কিন্তু একটু প্রাচীন রিপোর্ট (মানে পৌরাণিক আর কি!) অনুযায়ী গোদাভাবে শ্রেণীগুলো হল – ভুত, পেত্নি, শাঁকচুন্নী, দামরি, বেশোভূত, পেঁচোপেঁচি, মেছোভুত, মামদো ভূত, আতশী ভূত, গেছো ভূত, স্কন্ধকাটা। না আর পারা যাচ্ছেনা। বুঝে নিন সংখ্যাটা। তা এরা এদিন নেত্য শুরু করে, এমনকি ক্ষতি-টতি করারও চেষ্টা করে। কিন্তু লৌকিক বিশ্বাস বলে, “প্রেতলোক”-এ আমাদের যে পিতৃপুরুষেরা থাকেন তারা আমাদের ঘিরে থাকেন। প্রতিটি ঘরে চতুর্দশী বলে ১৪টি প্রদীপ জ্বালানো থাকে। সে আলোয় পথ চিনে তারা প্রিয়জনের গৃহে পৌঁছন, ঘিরে রাখেন তাদের পরম সোহাগে। এই যে পরম মমতা, ভালোবাসা আর উষ্ণতায় মাখা চতুর্দশী সে ভূতের না মানুষের জেনে অতিরিক্ত কি লাভ? ভূতেরও তো ভবিষ্যৎ আছে।
চতুর্দশী বলে শাকও চোদ্দ রকমের খাবার নিয়ম। সেগুলো কি? ওল, কেঁউ, বেঁতো, সর্ষে, কালকাসুন্দে, জয়ন্তী, নিম, হেলঞ্চ, শাঞ্চে, পলতা, গুলঞ্চ, ভাঁটপাতা, শুলফা, শুষনীশাক। এই হল মোট ১৪ শাক। মজার ব্যাপার, আমরা খেয়াল করলে বুঝবো এগুলো সবই বিশেষভাবে বাংলার এবং গ্রামবাংলার পড়ে থাকা জমিতে, গৃহস্থ বাড়ির আশেপাশে যেকোন জায়গায় এরা কোনরকম পরিচর্যা ছাড়াই বেড়ে ওঠে। একেবারে লৌকিক এই শাকের সম্ভার। কোত্থেকে এলো এই রীতি? আর্য এবং ব্রাহ্মণ্য সংস্কৃতিতে কয়েকটি মাত্র দেবতা। যত বেশী “অনার্য” বা ভূমিপুত্রদের সাথে সংঘাত এবং সম্মিলন হয়েছে ততো বেশী করে লৌকিক চিহ্ন এবং সাংস্কৃতিক প্রভাব প্রবেশ করেছে ব্রাহ্মণ্য আচার-অনুষ্ঠানের মাঝে। বেদের আচার-অনুষ্ঠান রূপান্তরিত হয়েছে পৌরাণিক চেহারায়। আরো খণ্ডিত হয়েছে, লোকায়ত উপাদানে মুড়ে গেছে অনেক সময়ে। এখানে একটি অদ্ভুত বিষয় অনুমান করা হয়। এই লোকায়ত প্রভাবের জন্য অথর্ব বেদে অসুর, প্রেত ইত্যাদির প্রাধান্য ছিল। এজন্য এসময় অব্দি প্রধানত ছিল আয়ুর্বেদ ছিল “দৈব ব্যাপাশ্রয় ভেষজ”। পরবর্তীতে বৌদ্ধধর্মের প্রভাবে এবং আরো অন্যান্য আনুষঙ্গিক কারণে আয়ুর্বেদে ধীরেধীরে ত্রি-দোষ তত্ত্ব এলো – বায়ু, পিত্ত ও শ্লেষ্মা। এ তত্ত্বে রোগের উদ্ভব দেহের অভ্যন্তরে বলে বিবেচিত হল, কোন ভূত-প্রেত বা অজানা শক্তির বাহ্যিক প্রভাবে নয়। উত্তরণ ঘটলো “যুক্তি ব্যাপাশ্রয় ভেষজ”-এ। এখানে বায়ু, পিত্ত ও শ্লেষ্মার প্রকোপ হ্রাস ও বৃদ্ধির সাথে খাদ্য ও অনুপানের নিবিড় সম্পর্ক চিকিৎসকেরা গভীরভাবে অনুধাবন করলেন। উদ্ভিদ জগতের প্রায় সমস্ত ভক্ষ্য বস্তুর মধ্যে এই শাকগুলোও ছিলো। (প্রসঙ্গত উল্লেখ করতে হবে, প্রাণীজ ঔষধির মধ্যে মোষ, গরু, বরাহ, ময়ূর, খরগোশ, বেজি ইত্যাদি সমস্ত প্রাণীর মাংস খাবার নির্দেশ রয়েছে চরক সংহিতায়, বিভিন্ন রোগ সারিয়ে তোলার জন্য।) লৌকিক বিশ্বাসে কিছু উদ্ভিজ খাদ্য দেহের উপকারের জন্য গৃহীত হল। পিতৃপুরুষের মঙ্গলকামনায় এবং খারাপ ভূতদের তাড়ানোর জন্য এরা প্রচলিত হল ১৪ শাক হিসেবে। ভূত চতুর্দশীর মতো ভাইফোঁটা বা আরো অনেক সামাজিক অনুষ্ঠান গভীরতর সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক ব্যঞ্জনা বহন করে।
কিন্তু হয়তো কিছুদিনের মধ্যেই যেমন ভ্যালেনটাইনস ডে এসে গ্রাস করেছে আমাদের অস্তিত্বকে, ভূত চতুর্দশীকে হারিয়ে দেবে হ্যালোউইন। সে বড়ো সুখের দিন নয়! আমাদের একান্ত নিজস্ব ভূতেরাও তখন হারিয়ে যাবে! বাঁচার আনন্দই যে বেশ খানিকটা কমে যাবে। এখানে একটু স্মরণ করে নেবো এক্কেবারে ইংরেজি পরিবেশে তৈরি “অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড” আমাদের সুকুমার রায়ের হাতে পড়ে এক্কেবারে বাঙ্গালি “হ য ব র ল” হয়েছে। উদো-বুধো ত্রৈরাশিক না ভগ্নাংশ নিয়ে আকুল হয়, আমরা উন্মাদ হয়ে যাই ন্যাড়ার “লাল গানে নীল সুর”-এ। “তকাই” সেখানে পিতৃপুরুষের সবার নাম। এরকম উজ্জ্বল লড়াই আর কি হয়েছে? নিজের স্ব-কে বাঁচানোর লড়াই? পথিকৃৎ রবীন্দ্রনাথ। ছেলেভুলানো ছড়ায় এমন অসামান্য মাতাল-করানো কল্পনার ছবি – আয় ঘুম আয় কলাবাগান দিয়ে- / হৈঁড়ে-পানা মেঘ করেছে। / লখার মা নথ পরেছে কপাল ফুটো ক’রে / আমানি (পান্তাভাত) খেতে দাঁত ভেঙেছে। / সিঁদুর পরবে কিসে॥
আমাদের এরকম উপচে পড়া সৃষ্টিসম্ভার ফেলে দিয়ে কিনে নেবো বাণিজ্যিক হ্যালোউইন? এতো একধরনের নতুন চেহারায় সাংস্কৃতিক বশ্যতা!
Jayantada khub valo lekha
Valo theko
Mon bholano rochona — ja nie gelo amake sudur sei smritir jogote — ja ar kono di asbe na . Swad pelam “choddo Saker” – jhapsa chobi abar sposto holo Thakuma,Didima,MA,Masi,Pisi– ranna ghorer konokdidi ar barir lok Rameswardar mukhtguli dekhe. Parar chele Bhooto,GameShark,aro chilo Rafik Amhed.Dakche Tara aste kore– Chandu aye Taranaki– toiri kori “chooncho Baji”,this one pore Tubri Khole…unbelievable fans sandyakale.Ma bolechen “choddo Pidim” dite hobe edik odik — tel dhalbi mone kore — noyto aj bhoot asbe tere phunre.Kothaye gelo din guli more — se kon ondhokare — uske diye korli bhalo — Choddo Pidim jalabo aji- Tim time alo debe gear glove– amar bari Pondicherrie.Kintu re bhai –korbo ki bol- Pondyte je Shrabon ekhon — Bristi jhore akatore. Mone kore bhalo thakish — Choddo Saker bhat golosh kheye—nirmalya da o anila boudi…Pondicherry theke
Khub bhalo laglo
চৌদ্দ শাকের ঘন্ট খেয়ে
চৌদ্দ ভূতের বিণ্
ছন্দে মেতে আপন করি
অছুত হ্যালোউইন!!
ভিনদেশী হোক মাতবো সুখে
বুঝবো হিতাহিত
ঘরের জিনিস বাড়বে গুণে,
শক্ত হবে ভিত।
জড়িয়ে বুকে আপন করি
নিবিড় ভালোবাসায়
আতসবাজি- আলোয় স্মৃতির
স্বপন তরী ভাসাই।
রোশনাই -এর এই উৎসবে
খুশির প্লাবন ঢালি
মনের কালো সরিয়ে সাজুক
হ্যালোউইন দে-ওয়ালি!!
লেখাটা বেশ ভালো লাগলো; বার দুয়েক পড়েও ফেললাম। ভূত চতুর্দশী নিয়ে হালকা ধারণা ছিল, কিন্তু এই লেখা পড়ার পর ধারণাটা বিস্তৃত হল।
দুর্দান্ত লেখা… লেখককে অনেক ধন্যবাদ ও শ্রদ্ধা… 🙏
ভীষণ ভালো,তবে পরিবর্তন অস্তিত্ব কে নাড়া দিলেও আরোপ করা অত সহজ নয় বলেই আমার বিশ্বাস। না নিতে চাইলেই হলো।
ডাক্তার জয়ন্ত ভট্টাচার্য মহাশয়ের লেখাটি একটি সৃজনশীল এবং গবেষণা মূলক লেখা । হাজার হাজার বছর ধরে যে সামাজিক শৃংখলা , অনুশাসন এবং যে ধর্মীয় উপাচার গুলো সৃষ্টি হয়েছে তা শুধুমাত্র আপ্তবাক্য বা আত্মসন্তুষ্টি ছিল না। বিভিন্ন সামাজিক ঘাত-প্রতিঘাত-র সম্মুখীন হওয়ার মধ্য দিয়েই এই সামাজিক অনুশাসন ও ধর্মীয় উপাচারের সৃষ্টি । যা শুধুমাত্র সেই সময়ের জন্য নয়। মানব জাতি তার ভবিষ্যত প্রজন্মকে উন্নত ও সুরক্ষিত রাখার তাগিদেই নানাবিধ অনুশাসন ও উপাচার সৃষ্টি করেছে । দেশ জাতি এবং ধর্ম ভেদে পার্থক্য থাকতে পারে ।
আশ্চর্য হই যখন দেখি হিন্দু ধর্মের বিভিন্ন উপাচারে পঞ্চ শষ্য, পঞ্চ গোব্য কদলী, একটি ঘট তার উপর একটি আম্রপল্লব, আম্রপল্লবের উপরে একটি ডাব বা নারিকেল প্রয়োজন হয়। হঠাৎ করে উপাচারে এই বস্তু গুলিরই প্রয়োজন হল কেন? কে বলে দিল, তণ্ডূল চূরণ, কদলী, দুধ , দধি ,গুড় ইত্যাদি সহযোগে যে সিন্নি তৈরি হল তা বিজ্ঞান সম্মত ভাবে অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সম্পুর্ণ খাবার। বিভিন্ন ধর্মীয় উপাচারে দেখা যায় ‘দধি কাদো ‘ খেলার একটা রীতি আছে। হঠাৎ করে দই মাটিতে মেশাতে হল কেন?
এ সবের উত্তর হল: সেই সামাজিক অবস্থায় যেহেতু কৃষিই ছিল জীবিকার একমাত্র উপায় সেহেতু এই সব উপাচারের মধ্য দিয়ে কৃষি ব্যবস্থাকে রক্ষা এবং উন্নত করা ।
বর্তমানে organic fertilizer তৈরির গবেষণায় দেখা গেছে, দই-র সঙ্গে তামার পাতের জারণ ঘটিয়ে অত্যন্ত উন্নত মানের PGR পাওয়া যায়। যা কি না copper sulphate-র side effect ছাড়াই পাওয়া যেতে পারে অত্যন্ত উন্নত মানের পুষ্টিগুণ সম্পুর্ণ ফসল।
মজার লেখা, ভূত তো মজারই বিষয়। ছোটবেলায় মানিক সিনেমার কথা মনে এল, হোস্টেল সুপার কে ভূত সেজে ভয় দেখানো।
দারুণ লিখেছেন ডঃ জয়ন্ত ভট্টাচার্য্য। ভূতুড়ে বিষয় নিয়ে চর্চা, তা আড্ডাতেই হোক বা লেখাতেই হোক, আমার প্রিয় বিষয়। ভূত চতুর্দশীর শাক বা মজা ছোটবেলায় খুব উপভোগ করতাম। কিন্তু ভূত চতুর্দশীর চর্চা কিন্তু শহরে বিলীয়মান। হ্যালোউইন ঢুকে পড়েছে সম্পন্নদের বাড়ীতে।
গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য বাড়তি পাওয়া গেল আপনার লেখায়। ধন্যবাদ।
দেশ ও জাতি যখন ভুতে পরিনত হয়ে যায় তখন তাদের আর কোনো ভবিষ্যৎ থাকে না – বরং তাদের নিশ্চিন্তে অন্ধকারে ভুতের নাচন নাচতে দিয়ে নিজেরা আলোয় থাকা বেশী বুদ্ধিমানের কাজ । ভুতেদের ঘাঁটাতে নেই – কারন তাদের বুদ্ধি নেই এবং অকাবনে ঘাড় মটকায় – তখন নিজেরা ভুত হয়ে ওদের দলে যোগ দিতে হয় । সুতরাং ভুত হইতে সাবধান